বিজয় দাস,প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনা জেলা শহরের মালনী রোড নিবাসী কালিদাস চৌধুরী ওরফে কালিদাস সাধু চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এ ধরনের সাধক পুরুষের চলে যাওয়াকে বলা হয় তিনি ‘দেহ রাখলেন’। বড় পুত্র কানু চৌধুরী জানালো গতকাল থেকে তার বাবার শরীরের অবনতি ঘটে। আজ দুপুর ১২ টায় ৮৫ বছর বয়সে পরপারে যাত্রা করলেন তিনি।
তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের প্রিয় মানুষটির বিদায় নেয়ার সংবাদটি জানতে পারেনি অনেকে।না জানার যথেষ্ট কারণও আছে। বেশ কিছুদিন আগেই ৩টি শর্তের কথা কালিবাবু বলেছিলেন।
১। মরার পর মাইকিং না করা।
২। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেরী না করা।
৩। শেষ যাত্রা আড়ম্বর না করা।
শেষ শর্তটা হয়তো ভক্তরা মনের অজান্তেই রক্ষা করতে পারেননি।ভক্তি-শ্রদ্ধা-ভালবাসা প্রকাশে কোনো কার্পণ্য করেননি তারা। অশ্রুসজল কন্ঠে সকলে মিলে সারাটা পথ ঈশ্বরের বন্দনা গীতি গাইতে গাইতে মহাশ্মশানে এলো। যেন ইহাই হওয়ার কথা ছিল। মগড়া নদীর তীরে মহাশ্মশানে তাকে সৎকার করা হয়েছে। অগণিত ভক্ত ভিড় করেছেন সাধুকে শেষ দেখা দেখার জন্য।
পরিবার সূত্রে জানা যায়,কালিদাস চৌধুরী অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। মেঝেতে ঘুমাতেন, নামমাত্র আহার করতেন।বিগত ২০ বছর যাবৎ তিনি ভাত কিংবা রুটি গ্রহণ করেননি। তবে ভক্তদের খাওয়াতে পেরে তৃপ্তি পেতেন। আগামী শনিবার তিনি আম-কাঁঠাল, চিড়া-মুড়ি খাওয়ার নিমন্ত্রণ দিয়েছিলেন ভক্ততদেে।শেষ নিমন্ত্রণ আর রক্ষা করা হলো না ভক্তদের । হয়তো অন্য কোনো জগতে ভক্তদের তিনি অন্য কোনো আয়োজনে আপ্যায়িত করবেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মঙ্গল চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা একজন গুনী ও অনুকরণীয় সাধু পুরুষকে হারিয়ে শোক প্রকাশ করছি। তার নীতি ও ধর্মীয় আচার আচরণ মেনে চললে সমাজ থেকে অনেক দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর হবে।