হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফুটবল বিশ্বকাপে কখনোই খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বাছাই পর্বের দৌঁড় পর্যন্তই শেষ লাল-সবুজদের। ভবিষ্যতে খেলতে পারবে কিনা, তাও অনিশ্চিত। তাইতো এখন বিশ্বকাপ ট্রফির দেখা পাওয়াটাই বড় স্বপ্ন বাংলাদেশের ফুটবলাপ্রেমীদের। সেই শুভক্ষণ এলো গতকাল সকাল সোয়া ১১টায়। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার জন্য চার্টার্ড বিমানে চড়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছায় বিশ্বকাপের চকচকে সোনালী ট্রফিটি। অন্য দিনের তুলনায় কাল বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলতে বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির হন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তারাও। ট্রফি নিয়ে বিমানবন্দরে কর্মরত ব্যক্তিদের ব্যস্ততা ছিল বেশি। ট্রফি আসবে বলে কঠোর নিরাপত্তা ছিল হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে। পুলিশের সঙ্গে বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান জি-ফোরএসের একটি সুরক্ষিত ভ্যানে ট্রফিটি নিয়ে যাওয়া হয় হোটেল র্যাডিসনে। সেই সময় ট্রফিকে ক্যামেরায় বন্দি করার জন্য দৌড়ঝাঁপ সংবাদকর্মীদের; কিন্তু ভিআইপি গেটের সামনে সকাল থেকে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা শুধু ট্রফি বহনকারী গাড়ির ছবিই তুলতে পেরেছেন। এদিন বিকালে বঙ্গভবনে বিশ্বকাপ ট্রফি বরণ করে নেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। পরে সন্ধ্যায় গণভবনে ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ট্রফি গ্রহণ করেন।
বিশ্বকাপ ট্রফি ভ্রমণের বিশেষ এই বিমানটি ৫১টি দেশ পরিভ্রমণের পথে যাত্রা শুরু করে গত ১২ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহর থেকে। ফিফার কমার্শিয়াল পার্টনার কোকাকোলার বিশেষ বিমানটি কাল সকাল ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার কথা থাকলেও রানওয়ে স্পর্শ করে আরও ২০ মিনিট পর। ছয় কেজির বেশি ওজনের ১৮ ক্যারেটের স্বর্র্ণ দিয়ে তৈরি ৩৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার উচ্চতার সোনার এই ট্রফির মায়াবী টানেই এদিন বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ অন্য কর্মকর্তারা। বিমান থেকে নামানো ট্রফিটি কোকাকোলার তৈরি একটি বেদির ওপর রাখা হয়। ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স দলের সদস্য ক্রিশ্চিয়ান কারেম্বুর সঙ্গে ট্রফির দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছবির জন্য পোজ দেন বাফুফের কর্তারা। ট্রফির খুব কাছে; কিন্তু তা যে ছুঁয়ে দেখতে পারেননি বাফুফে সভাপতি। অথচ প্রথমবার বাফুফের সর্বোচ্চ চেয়ারে বসার পর তিনিই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ২০২২ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে খেলানোর।
ইতিহাসের সাক্ষী হতে ট্রফির সঙ্গে ছবি তোলার জন্য কত অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে আজ। কিন্তু কাতার বিশ^কাপের ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলতে পারবেন না সবাই। আজ রাজধানীর হোটেল র্যাডিসন বøুতে স্বপ্নের ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলতে পারবেন নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক দর্শনার্থী। যেমনটি দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। সে সময় ব্রাজিল বিশ্বকাপের ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলতে পারার আনন্দ ছুঁয়ে গিয়েছিল সবাইকে। কিন্তু বদলায়নি ট্রফির মতো বাঙালির অনুরাগ-ভালোবাসা। র্যাডিসন বøুুতে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত হোটেল র্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেনে জনসাধারণকে প্রদর্শন ও ছবি তোলার জন্য রাখা হবে বিশ্বকাপ ট্রফি। এরপর বেলা সাড়ে ৪টা থেকে সাত ১১টা পর্যন্ত আর্মি স্টেডিয়ামে কোকবাংলা স্টুডিও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর ফাকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ট্রফি প্রদর্শন করা হবে। শুক্রবার গভীর রাতে ট্রফি চলে যাবে তার পরবর্তী গন্তব্য পূর্ব তিমুরে।