ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে চাষ হচ্ছে উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ‘পেরিলা’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২
  • ১২৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সংগৃহীত বীজ বাংলাদেশে অভিযোজিত নতুন ও মূল্যবান উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ফসল ‘পেরিলা’ চাষাবাদ হচ্ছে পঞ্চগড়ে। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজননবিদদের গবেষণায় ২০২০ সালের শুরুতে দেশে প্রাথমিকভাবে এর চাষ শুরু হয়। চলতি বছর আগস্ট থেকে পঞ্চগড়সহ দেশের কয়েকটি স্থানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফসল চাষাবাদ শুরু হয়।

কৃষি বিভাগের মতে, এ পেরিলার তেল বেশ দামি। এর চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকরা এগিয়ে এলে তারা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতেও এর ভূমিকা থাকবে।

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকন এ বছর প্রথম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ১২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সাউ পেরিলা-১ আবাদ শুরু করেছেন। জেলায় এর আবাদ প্রথম হলেও ফলন হয়েছে আশানুরূপ।

কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকন জানিয়েছেন, ১২ বিঘা জমিতে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তার ধারণা ফলন বিক্রি করে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এটি বাংলাদেশে পেরিলার প্রথম জাত। এর তেল উচ্চমাত্রার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ। পেরিলা বীজে তেলের পরিমাণ চার ভাগ। এ ফসলের প্রধান বৈশিষ্ট্য, এটি ফসল খরিপ-২ মৌসুমে চাষ হয় (মধ্য জুলাই-অক্টোবর)। হেক্টরপ্রতি বীজের ফলন ১০৩ থেকে ১০৫ মেট্রিক টন।

পেরিলা অভিযোজনের মূল প্রজননবিদ অধ্যাপক ড. এইচ এম এম তারিক হোসেন ও কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ূম মজুমদার। সাউ পেরিলা-১ দক্ষিণ কোরিয়ান জাত কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ তেল জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দামও তুলনামূলকভাবে বেশি।

পেরিলা বন্যামুক্ত যে কোনো ধরনের মাটিতে ভালো জন্মে। বর্ষাকালে এর চাষাবাদ হওয়ায় সেচের প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া পেরিলা নতুন সৃষ্ট যে কোনো ধরনের ফল বাগানে সাথী ফসল হিসবে চাষ করা যায়। লাভজনক ও সহজ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন হওয়ায় এটি চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক।

পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ থেকে ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়। পেরিলার আবাদ বাড়ানো গেলে তেল ফসলের ঘাটতি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র : এগ্রিকেয়ার২৪.কম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে চাষ হচ্ছে উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ‘পেরিলা’

আপডেট টাইম : ১১:২৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সংগৃহীত বীজ বাংলাদেশে অভিযোজিত নতুন ও মূল্যবান উচ্চফলনশীল ভোজ্যতেল ফসল ‘পেরিলা’ চাষাবাদ হচ্ছে পঞ্চগড়ে। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজননবিদদের গবেষণায় ২০২০ সালের শুরুতে দেশে প্রাথমিকভাবে এর চাষ শুরু হয়। চলতি বছর আগস্ট থেকে পঞ্চগড়সহ দেশের কয়েকটি স্থানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফসল চাষাবাদ শুরু হয়।

কৃষি বিভাগের মতে, এ পেরিলার তেল বেশ দামি। এর চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকরা এগিয়ে এলে তারা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতেও এর ভূমিকা থাকবে।

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকন এ বছর প্রথম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ১২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সাউ পেরিলা-১ আবাদ শুরু করেছেন। জেলায় এর আবাদ প্রথম হলেও ফলন হয়েছে আশানুরূপ।

কৃষি উদ্যোক্তা সৈয়দ রোকন জানিয়েছেন, ১২ বিঘা জমিতে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তার ধারণা ফলন বিক্রি করে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এটি বাংলাদেশে পেরিলার প্রথম জাত। এর তেল উচ্চমাত্রার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ। পেরিলা বীজে তেলের পরিমাণ চার ভাগ। এ ফসলের প্রধান বৈশিষ্ট্য, এটি ফসল খরিপ-২ মৌসুমে চাষ হয় (মধ্য জুলাই-অক্টোবর)। হেক্টরপ্রতি বীজের ফলন ১০৩ থেকে ১০৫ মেট্রিক টন।

পেরিলা অভিযোজনের মূল প্রজননবিদ অধ্যাপক ড. এইচ এম এম তারিক হোসেন ও কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ূম মজুমদার। সাউ পেরিলা-১ দক্ষিণ কোরিয়ান জাত কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ তেল জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দামও তুলনামূলকভাবে বেশি।

পেরিলা বন্যামুক্ত যে কোনো ধরনের মাটিতে ভালো জন্মে। বর্ষাকালে এর চাষাবাদ হওয়ায় সেচের প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া পেরিলা নতুন সৃষ্ট যে কোনো ধরনের ফল বাগানে সাথী ফসল হিসবে চাষ করা যায়। লাভজনক ও সহজ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন হওয়ায় এটি চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক।

পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ থেকে ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়। পেরিলার আবাদ বাড়ানো গেলে তেল ফসলের ঘাটতি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র : এগ্রিকেয়ার২৪.কম