হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি। মরিচ চাষে শুধু চাষিরাই লাভবান হননি, বেশি দাম পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন সংশ্লিষ্ট দিনমজুরসহ ব্যবসায়ীরাও।
উপজেলার ঢোলারহাট, শিবগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, ভাউলার হাট, দেবীগঞ্জ, আরাজী ঝাড়াগাঁও, ভেলাজান, রুহিয়া, বালিয়াডাঙ্গী, খোচাবাড়ী, রামনাথসহ প্রত্যন্ত অঞ্ছলগুলোর বিস্তীর্ণ জমিতে করা হয়েছে মরিচের আবাদ। লাল-সবুজে সয়লাব মরিচের ক্ষেত। কেউ মরিচ ক্ষেত পরিচর্যা করছেন, কেউ মরিচ তুলছেন, আবার কেউ বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় মরিচ চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছে এ এলাকার অনেক চাষি পরিবার। আবার যাদের জমি নেই, তারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মরিচ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
চলতি মৌসুমেও কৃষকের কাছ থেকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিঘাপ্রতি মরিচ ক্ষেত কিনে পাইকাররা বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ৫ গুন লাভ করছেন। পরে ঠাকুরগাঁওয়ের ভাউলার হাট ও বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতি মণ মরিচ ৩ থেকে ৪ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অনেক কৃষক কাঁচা মরিচ ক্ষেত থেকে তুলে তা রোদে শুকনো বানিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। বর্তমানে বাজারে প্রতি মন মরিচ জাত ভেদে ৭২০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার ভেলাজান এলাকার মরিচচাষী সাদেকুল ইসলাম বলেন, এ বছর সাড়ে ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলাম। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি মরিচ ক্ষেত ১ লাখ টাকায় বেশি বিক্রি করা যাবে।
সদর উপজেলার রুহিয়া কুজিশহর এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ি রবিউল ইসলাম রবি বলেন, এ বছর শুকনা মরিচ ৮ হাজার টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও জিরা মরিচ (চিকন) ৮ হাজারের উপরে বিক্রি হচ্ছে। ছ্যাকা মরিচ ৭ হাজারের উপরে বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ বছর মরিচের অনেক ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে।
সদর উপজেলার আরাজী ঝাড়গাঁও গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, ক্ষেত থেকে মরিচ এনে সরাসরি বিক্রি করে ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে দূরের বাজারে নিতে পরিবহন খরচ বেশি লাগতো। এখন বাড়ির পাশেই মরিচের একাধিক ছোট ছোট হাট বসে, সেখানে গিয়ে মরিচ ন্যর্য দামে বিক্রি করা যায় এবং আড়তে গিয়ে টেপাল দেওয়া এবং দর কষাকষির ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য বাড়ির পাশেই মরিচ বিক্রির কথা জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে উচ্চ মূল্য থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা প্রত্যেক কৃষককে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করেছি। বেশি করে মরিচ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করায় ব্যাপক সাফল্য এসেছে।