আম উৎপাদনে বেড়েছে ফ্রুট ব্যাগের ব্যবহার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিরাপদ আম উৎপাদন করতে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ব্যবহার বেড়েছে। এ ব্যাগ ব্যবহারে আমের গায়ের রঙ গাঢ় আর খেতে সুমিষ্টি হওয়ায় বিদেশেও চাহিদা বেড়েছে। ফ্রুট ব্যাগিংয়ের উপরে আরোপ করা সরকারি ভ্যাট মওকুফের দাবি জানিয়েছেন বাগান মালিকরা। এছাড়াও আম বিদেশে রফতানিতে কার্গো ভাড়া বেশি হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আম রফতানিকারকরা।

জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, এবার আমের মৌসুমে ১০ কোটি ৫০ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। গত বছর ১০ কোটি ৩৮ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং ব্যবহারের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল।
আম চাষি মুনিরুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছর ধরে আমে ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করছি। ব্যাগ ব্যবহার করায় আম নষ্ট হচ্ছে খুব কম । আমের রঙও গাঢ় থাকে। খেতেও মিষ্টি। আমের স্বাদ আর গায়ের রঙ ঠিক রাখতে ফ্রুট ব্যাগিং এর কোন বিকল্প নেই।
খোকন নামক এক বাগানি বলেন, গত বছর আমে ব্যবহারের জন্য ব্যাগের দাম ছিলো ৪ টাকা ৩০ পয়সা। এবছর আমের কম ফলন হওয়ায় ব্যাগের দাম কমে হয়েছে ৩ টাকা ৫০ পয়সা। তিনি আরও বলেন, আফসোসের বিষয় হলো একটি ব্যাগের দাম থেকে ৫০-৬০ পয়সা সরকারকে ভ্যাট দিতে হয়। সরকার এ ভ্যাট মওকুফ করলে ব্যাগের দাম কমবে। ব্যাগ ব্যবহারে চাষিরা আরও আগ্রহ হবে। ফলে বিশ্ববাজারেও নিরাপদ আমের চাহিদা আরও বাড়বে। বিশ্ববাজারে আম পাঠাতে কার্গো ভাড়া বেশি লাগছে। ভাড়া বেশি হলে বাহির দেশে আমের দামে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন রফতানিকারকরা।
গত কয়েক বছর ধরে সুইডেন আর হংকংয়ে আম রফতানি করছেন ম্যাংগো ফাউডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব। তিনি বলেন, সুইডেনে প্রতি কেজি আম পাঠাতে খরচ হয় ২৭০ টাকা আর হংকংয়ে আম পাঠাতে খরচ হয়েছে ১০০ টাকারও বেশি। কার্গো ভাড়া বেশি হওয়ায় অনান্য আম রফতানি কারকরা বাহির দেশে আম পাঠাতে পারছেনা। ভাড়া যত বেশি হবে, ভিনদেশের বাজারে আমের দাম ততো বাড়বে। আমাদের দেশের মতো পাকিস্তান, ভারত আম রফতানি করে। তাদের দেশের কার্গো ভাড়া কম হওয়ায় আমের দামও কম। কম দামে আম বিক্রি হওয়ায় ওইসব দেশের আম কিনছেন ভিনদেশের মানুষেরা।
ইলাতালিতে প্রতিকেজি আম পাঠাতে ৩৭০ টাকা আর ইংল্যান্ডে ৩৫০ টাকা মত খরচ হয়। তাছাড়া অনান্য খরচ আছে। সরকার যদি বিমানের ভাড়া কমায় তাহলে প্রান্তিক আম চাষিরাও বিষমুক্ত আম বিদেশে পাঠাতে পারবে বলে মনে করেন আরেক আম ব্যবসায়ী। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত¡ গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান বলেন, নিরাপদ আম উৎপাদনে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ব্যবহার বেড়েছে। আমের ওজন ৬০-১০০ গ্রাম হলে ফ্রুট ব্যাগ করার উপযুক্ত সময়। এতে ব্যাগিং করা আমটি অধিক পরিমানে হলুদ রং ধারণ করে। এসব আমের বিশ্ববাজারে চাহিদা রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, বিদেশে আম রফতানি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের ৭-১০টি দেশে আম রফতানি করা হচ্ছে। নিরাপদ আম উৎপাদন করলে ভিনদেশে আমের চাহিদা বাড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর