ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রোনে করে হজের স্বপ্ন পূরণ হলো গরিব আবদুল্লাহর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ মে ২০২২
  • ১৩৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিবছর হজের মৌসুমে ড্রোন হাতে এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। সাদা জামা পরা ওই কালো লোকটির গল্প শুনে অবাক হন অনেকে। হজ পালনে মক্কা-মদিনা যাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁর। সেই দরিদ্র মানুষটির নাম হাসান আবদুল্লাহ।

 তিনি ঘানার প্রত্যন্ত গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারের সদস্য। একবার নিজ এলাকায় টেলিভিশনের একটি দলকে দেখতে পান। ড্রোন দিয়ে তারা স্থানীয় চিত্র ধারণ করছিল। তাদের কাছে এমন যন্ত্র দেখে তিনি বলেছিলেন, এমন কোনো ড্রোন আছে কি, যা তাঁকে ইসলামের পবিত্র ভূমি মক্কায় নিয়ে যাবে? বেশ কয়েক বছর আগে গল্পটি তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলে। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তখন খবরটি প্রচারিত হয়।

তুরস্কের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি দল ঘানার একটি গ্রামে ক্যামেরা যুক্ত করে ড্রোন পরিচালনা করছিল। তখন হাসান আবদুল্লাহ সরলভাবে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, তাদের কী এ ধরনের আরেকটু বড় ড্রোন আছে, যা তাঁকে সৌদি আরব পৌঁছে দেবে? যেখানে প্রতিবছর অসংখ্য মুসলিম হজ পালন করতে সমবেত হন।

বস্তুত হাসান ছিলেন খুবই অভাবী ও দরিদ্র। নিজের সাধ্য না থাকলেও স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রবল। তাঁর এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তখন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু এ খবর যাচাই-বাছাই করে তাঁর হজ পালনে সহযোগিতা করেন।

অবশেষে হাসান ২০১৭ সালের ১৮ আগস্ট  (শুক্রবার) হজ পালনের উদ্দেশে ঘানার রাজধানী আক্রা থেকে প্রথমে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আসেন। সেখানে ঘানায় কাজ করা একটি টার্কিশ দাতব্য সংস্থা তাঁকে স্বাগত জানায়। মনের আশা পূরণ হতে চলায় হাসান ছিলেন খুবই অভিভূত। মহান আল্লাহর কাছে তিনি ছিলেন খুবই কৃতজ্ঞ।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসান বলেন, ‘আমি ইস্তাম্বুলে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহে আমি তুরস্কে আসতে পেরেছি। ’ তিনি বলেন, ‘আমার আশা পূরণে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন মহান আল্লাহ তাঁদের উত্তম বিনিময় দিন। তুরস্ক সরকারের সহযোগিতা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, এই সহযোগিতা মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও বন্ধুত্ব দৃঢ় করতে সহায়তা করবে। ’

দাতব্য সংস্থার ডেপুটি চেয়ারম্যান সিহাদ গোকদেমির আবদুল্লাহকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। তিনি জানান, তুর্কি গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একজন কর্মকর্তা আবদুল্লাহর ছবিটি টুইট করার পর গল্পটি খবরের শিরোনাম হয়। এরপর ব্যবসায়ী থেকে কম্পানি নানা পর্যায়ের মানুষ তাঁর কাছে পৌঁছার পথ খুঁজতে শুরু করে। অবশেষে ঘানায় অবস্থিত তুর্কি দূতাবাসের এক তুর্কি পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাই আবদুল্লাহ তুর্কি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ড্রোনে করে হজের স্বপ্ন পূরণ হলো গরিব আবদুল্লাহর

আপডেট টাইম : ১১:২৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ মে ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিবছর হজের মৌসুমে ড্রোন হাতে এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়। সাদা জামা পরা ওই কালো লোকটির গল্প শুনে অবাক হন অনেকে। হজ পালনে মক্কা-মদিনা যাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁর। সেই দরিদ্র মানুষটির নাম হাসান আবদুল্লাহ।

 তিনি ঘানার প্রত্যন্ত গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারের সদস্য। একবার নিজ এলাকায় টেলিভিশনের একটি দলকে দেখতে পান। ড্রোন দিয়ে তারা স্থানীয় চিত্র ধারণ করছিল। তাদের কাছে এমন যন্ত্র দেখে তিনি বলেছিলেন, এমন কোনো ড্রোন আছে কি, যা তাঁকে ইসলামের পবিত্র ভূমি মক্কায় নিয়ে যাবে? বেশ কয়েক বছর আগে গল্পটি তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলে। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তখন খবরটি প্রচারিত হয়।

তুরস্কের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একটি দল ঘানার একটি গ্রামে ক্যামেরা যুক্ত করে ড্রোন পরিচালনা করছিল। তখন হাসান আবদুল্লাহ সরলভাবে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, তাদের কী এ ধরনের আরেকটু বড় ড্রোন আছে, যা তাঁকে সৌদি আরব পৌঁছে দেবে? যেখানে প্রতিবছর অসংখ্য মুসলিম হজ পালন করতে সমবেত হন।

বস্তুত হাসান ছিলেন খুবই অভাবী ও দরিদ্র। নিজের সাধ্য না থাকলেও স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রবল। তাঁর এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তখন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু এ খবর যাচাই-বাছাই করে তাঁর হজ পালনে সহযোগিতা করেন।

অবশেষে হাসান ২০১৭ সালের ১৮ আগস্ট  (শুক্রবার) হজ পালনের উদ্দেশে ঘানার রাজধানী আক্রা থেকে প্রথমে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আসেন। সেখানে ঘানায় কাজ করা একটি টার্কিশ দাতব্য সংস্থা তাঁকে স্বাগত জানায়। মনের আশা পূরণ হতে চলায় হাসান ছিলেন খুবই অভিভূত। মহান আল্লাহর কাছে তিনি ছিলেন খুবই কৃতজ্ঞ।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসান বলেন, ‘আমি ইস্তাম্বুলে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহে আমি তুরস্কে আসতে পেরেছি। ’ তিনি বলেন, ‘আমার আশা পূরণে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন মহান আল্লাহ তাঁদের উত্তম বিনিময় দিন। তুরস্ক সরকারের সহযোগিতা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, এই সহযোগিতা মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও বন্ধুত্ব দৃঢ় করতে সহায়তা করবে। ’

দাতব্য সংস্থার ডেপুটি চেয়ারম্যান সিহাদ গোকদেমির আবদুল্লাহকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। তিনি জানান, তুর্কি গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একজন কর্মকর্তা আবদুল্লাহর ছবিটি টুইট করার পর গল্পটি খবরের শিরোনাম হয়। এরপর ব্যবসায়ী থেকে কম্পানি নানা পর্যায়ের মানুষ তাঁর কাছে পৌঁছার পথ খুঁজতে শুরু করে। অবশেষে ঘানায় অবস্থিত তুর্কি দূতাবাসের এক তুর্কি পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাই আবদুল্লাহ তুর্কি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।