মাংস ও পোলাও চালের দাম আকাশছোঁয়া

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদুল ফিতর ঘিরে সারা দেশে উৎসবের আমেজ। সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক কেনার পর এবার কাঁচাবাজারে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে স্বস্তি নেই। সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে বেশি দরে। ঈদ সামনে রেখে গুঁড়াদুধ, সেমাই, কিশমিশ ও চিনির দাম বেড়েছে। আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাংস ও পোলাও চাল। পাশাপাশি ভোজ্যতেল, ডাল ও মসলা পণ্যের দরও চড়া। বাজারে এসে ক্রেতারা অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন।

রাজধানীর জিনজিরা বাজার, নয়াবাজার ও রায়সাহেব বাজার ঘুরে শুক্রবার খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিকেজি পোলাও চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৩০ টাকা, যা রোজার আগে ছিল ৯০-১০০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি পোলাও চালে ১০-৩০ টাকা বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, যা রোজার আগে ছিল ৯০-১১০ টাকা।

কেজিতে মসুর ডাল ৫ টাকা বেড়ে ১১০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৫০ টাকা। প্রতিকেজি সোনালি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা, যা আগে ২৮০-২৯০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এক মাস আগে যা ছিল ৫৮০-৬০০ টাকা। প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ৮৫০ টাকা ছিল।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ১৬০ টাকা। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বশেষ প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের খুচরা মূল্য ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এই দরে খোলা তেল পাওয়া যায়নি। সরকারের বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে লিটারপ্রতি প্রায় ৬৪ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দুই ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন নেই বললেই চলে। এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, যা সরকার ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি  বলেন, রোজা-ঈদসহ কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান এলে দেশে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিমুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তাই ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে হলে সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে। তিনি বলেন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে আইন আছে। সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে ভোক্তা সুফল পাবে।

খুচরা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বাজারে ৫০০ গ্রামের ডিপ্লোমা ও ডানো প্যাকেটজাত গুঁড়াদুধ ৩৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ৩৩০-৩৪০ টাকা। এক কেজির ফ্রেশ প্যাকেটজাত গুঁড়াদুধ বিক্রি হচ্ছে ৬২০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৫৯০ টাকা। এক কেজি ওজনের মার্কস গুঁড়াদুধ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, যা আগে ৫৮০ টাকা ছিল। এছাড়া ২০০ গ্রামের প্যাকেটজাত লাচ্চা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ৩৫ টাকা ছিল। আর ২০০ গ্রামের প্যাকেটজাত চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, যা আগে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৮২-৮৫ টাকা, যা এক মাস আগে ৮০ টাকা ছিল।

রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা লাইজু আক্তার বলেন, কয়েক মাস ধরে বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেশি। আয় নেই কিন্তু সবকিছু কিনতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ঈদের দিন সবাই চায় পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু ভালো খাবারের আয়োজন করতে। কিন্তু বাজারে এসে দেখি পোলাও চাল ও মাংস বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই। এছাড়া সেমাই-চিনির দামও বেশি।

এদিকে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ছোট এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৩ হাজার টাকা। প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৯০ টাকা, এক মাস আগে যা ৩৫০ টাকা ছিল। শুকনা মরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা এক মাস আগে ২৮০ টাকা ছিল।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর