হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা ও তাঁর ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে দুই লাখ ৮০ হাজার ডলার (প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা) পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এস কে সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন।
সে অর্থ বিভিন্ন সময় ভাই অনন্ত কুমার সিনহার আমেরিকার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে দুই লাখ ৮০ হাজার ডলার স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাচার করেন। এ জন্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো।
মামলায় আরো বলা হয়, মূলত এস কে সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অবৈধ টাকা অর্জন করে তা হুন্ডিসহ নানা কায়দায় আমেরিকায় পাচার করে ছোট ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। পাচার করা অর্থ দিয়ে দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারের বিনিময়ে বাড়ি কেনা হয়। বাড়িটি পরোক্ষভাবে এস কে সিনহার নিজের বাড়ি।
মামলায় দুদকের তদন্তে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে বলা হয়, অনন্ত কুমার সিনহা আমেরিকায় দন্ত চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। তিনি সেখানে এক লাখ ৪৫ হাজার ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন। এরপর ২০১৮ সালের ১২ জুন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলার নগদ দিয়ে আরো একটি বাড়ি কিনেছেন। এরই মধ্যে অনন্ত কুমার সিনহার আমেরিকার ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের প্যাটারসন, নিউ জার্সি শাখায় থাকা ব্যাংক হিসাবে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। হিসাবটিতে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত আরো প্রায় ৬০ হাজার ১০ ডলার জমা হয়। এসব অর্থ ইন্দোনেশিয়া ও কানাডার ‘রয় এ’ গ্রুপের কাছ থেকে পাওয়া গেছে বলে ব্যাংককে জানালেও প্রকৃতপক্ষে এটি একটি বার্গারের দোকান।
এদিকে অনন্ত কুমার সিনহা এক লাখ ৫৭ হাজার ৯০ ডলারের ক্যাশিয়ার চেক সংগ্রহের জন্য তাঁর বড় ভাই এস কে সিনহাকে নিয়ে আমেরিকার ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে আসেন। তখন এস কে সিনহা অর্থের উৎস সম্পর্কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান, আমেরিকার প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি কেনার জন্য তিনি বন্ধুর কাছ থেকে ফান্ড পেয়েছেন।