দুর্যোগে বছরে ক্ষতি ৩০ হাজার কোটি টাকা, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশে গত ছয় বছরে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাসসহ ১১ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কৃষি খাতে ক্ষতি হয়েছে ৭১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরে গড়ে ক্ষতি ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার ৪০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের ‘বাংলাদেশ ডিজাস্টার রিলেটেড স্ট্যাটিস্টিক (বিডিআরএস): ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ন্যাচারাল ডিজাস্টার প্রেসপেকটিভ’ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের সারাদেশের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

গত (২৯ মার্চ) জরিপের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন।

পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ পরিসংখ্যান শক্তিশালীকরণ (ইসিডিএস) প্রকল্পের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

জরিপে দেখা গেছে, ছয় বছরে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা ধরনের দুর্যোগের ক্ষতিতে পড়েন তিন কোটি ৪১ লাখ ১২ হাজারের মতো মানুষ। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাতে ক্ষতি হয় ৭১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।

সব খাতের মধ্যে শস্য খাতে ২৮.৯০ শতাংশ, প্রাণিসম্পদে ৩.৯৮ শতাংশ, পোলট্রিতে ১.৫১ শতাংশ, মৎস্য খাতে ৩.৭১ শতাংশ, জমি (ভূমি) অবক্ষয়ে ক্ষতি হয় ৫২.৫৬ শতাংশ।

এ ছাড়া বসতঘর, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, অবকাঠামো প্রভৃতি ৭.৩৮ শতাংশ এবং খানাভিত্তিক সামাজিক বনসহ উঠানের গাছ-পালায় ১.৯৬ শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জরিপে আরও দেখা যায়, দুর্গতদের প্রায় ৩১ শতাংশ ছয় বছরে চারবার দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর তিন বারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে ১৫ শতাংশ পরিবার।

দুর্যোগগুলোর মধ্যে বন্যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে বলে জরিপে বলা হয়েছে। ছয় বছরে বন্যায় আর্থিক ক্ষতি হয় ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকার। নদী বা উপকূলীয় ভাঙনে ২৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা এবং ঘূর্ণিঝড়ে ২৫ হাজারর ৫৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার খানার (পরিবার) সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে লক্ষ্য করা গেছে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস ৩৪ দশমিক ১৮ শতাংশ, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পাস ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, এসএসসি-এইচএসসি-সমমান পাস ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, স্নাতক-স্নাতকোত্তর পাস মাত্র তিন দশমিক ২৬ এবং কোনো ধরনের শিক্ষাই গ্রহণ করেনি ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর