ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

দাফনে ছেলের বাধা, কবরে নয় মর্গে গেলো বাবার মরদেহ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মার্চ ২০২২
  • ১৬০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কফিনে মোড়ানো মরদেহ। খোঁড়া হয়েছে কবর। জানাজার জন্য জড়ো হয়েছেন শতাধিক মানুষ। কিন্তু গৃহত্যাগী এক সন্তান হঠাৎ বাড়ি ফিরে বাবার মরদেহ দাফন বন্ধ করে দেন। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকালে অটোরিকশার ধাক্কায় মারা যান জালাল উদ্দিন (৭০)।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জালাল উদ্দিনের চার ছেলে ও দুই মেয়ে। মেজো ছেলে নুরুল ইসলামের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ভালো ছিল না। অনেক বছর আগে তিনি বাড়ি ছেড়েছেন। বাবা-মার খোঁজ-খবরও নেন না। মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে বাবা ও ভাইদের হুমকি-ধমকি দিতেন। বছর খানেক আগে এ বিষয়ে নুরুল ইসলামের নামে জালাল উদ্দিন থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। গ্রাম্য সালিশ হয়েছে বহুবার।

বৃহস্পতিবার জালাল উদ্দিন নিহত হলে সন্তানরা তার জানাজাসহ দাফনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিন্তু জানাজার ঠিক আগমুহূর্তে হাজির হন নুরুল ইসলাম। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তিনি অভিযোগ করেন তার বাবাকে তিন ভাই মিলে হত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ গ্রামবাসীও দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মরদেহ দাফনে অনুমতি দেওয়ার জন্য নুরুল ইসলামকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও সম্মতি দেননি তিনি।

জালাল উদ্দিনের বড় ছেলে তারা মিয়া জানান, তার ভাই নেশাগ্রস্ত। সন্তানসহ স্ত্রীও তাকে ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এখন নুরুল ইসলাম কোথায় থাকেন, কী করেন তা কেউ জানে না। দীর্ঘদিন ধরে বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ দাবি করে আসছিলেন তিনি। বাবা দিতে রাজি না হওয়ায় বাবা ও ভাইদের মারধর করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মিয়া জানান, জালাল উদ্দিনের জানাজা পড়তে শ্রীবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তার মতো অনেকেই এসেছিলেন। ছেলে নুরুল ইসলাম জানাজা বন্ধ করে পুলিশকে খবর দেন। তিনি ভাইদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে খবর দেন।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্ট ও স্থানীয়দের তথ্যমতে জালাল উদ্দিন অটোরিকশার ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু তার মেজো ছেলে নুরুল ইসলাম অভিযোগ করছেন তার ভাইয়েরা বাবাকে হত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ জানান, কফিনে মোড়ানো অবস্থায় জালাল উদ্দিনের মরদেহ রাতে হাসপাতাল মর্গে পৌঁছেছে। সকালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

দাফনে ছেলের বাধা, কবরে নয় মর্গে গেলো বাবার মরদেহ

আপডেট টাইম : ১০:৪১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মার্চ ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কফিনে মোড়ানো মরদেহ। খোঁড়া হয়েছে কবর। জানাজার জন্য জড়ো হয়েছেন শতাধিক মানুষ। কিন্তু গৃহত্যাগী এক সন্তান হঠাৎ বাড়ি ফিরে বাবার মরদেহ দাফন বন্ধ করে দেন। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকালে অটোরিকশার ধাক্কায় মারা যান জালাল উদ্দিন (৭০)।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জালাল উদ্দিনের চার ছেলে ও দুই মেয়ে। মেজো ছেলে নুরুল ইসলামের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ভালো ছিল না। অনেক বছর আগে তিনি বাড়ি ছেড়েছেন। বাবা-মার খোঁজ-খবরও নেন না। মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে বাবা ও ভাইদের হুমকি-ধমকি দিতেন। বছর খানেক আগে এ বিষয়ে নুরুল ইসলামের নামে জালাল উদ্দিন থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। গ্রাম্য সালিশ হয়েছে বহুবার।

বৃহস্পতিবার জালাল উদ্দিন নিহত হলে সন্তানরা তার জানাজাসহ দাফনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিন্তু জানাজার ঠিক আগমুহূর্তে হাজির হন নুরুল ইসলাম। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তিনি অভিযোগ করেন তার বাবাকে তিন ভাই মিলে হত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ গ্রামবাসীও দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মরদেহ দাফনে অনুমতি দেওয়ার জন্য নুরুল ইসলামকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও সম্মতি দেননি তিনি।

জালাল উদ্দিনের বড় ছেলে তারা মিয়া জানান, তার ভাই নেশাগ্রস্ত। সন্তানসহ স্ত্রীও তাকে ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এখন নুরুল ইসলাম কোথায় থাকেন, কী করেন তা কেউ জানে না। দীর্ঘদিন ধরে বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ দাবি করে আসছিলেন তিনি। বাবা দিতে রাজি না হওয়ায় বাবা ও ভাইদের মারধর করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন মিয়া জানান, জালাল উদ্দিনের জানাজা পড়তে শ্রীবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তার মতো অনেকেই এসেছিলেন। ছেলে নুরুল ইসলাম জানাজা বন্ধ করে পুলিশকে খবর দেন। তিনি ভাইদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে খবর দেন।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্ট ও স্থানীয়দের তথ্যমতে জালাল উদ্দিন অটোরিকশার ধাক্কায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু তার মেজো ছেলে নুরুল ইসলাম অভিযোগ করছেন তার ভাইয়েরা বাবাকে হত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ জানান, কফিনে মোড়ানো অবস্থায় জালাল উদ্দিনের মরদেহ রাতে হাসপাতাল মর্গে পৌঁছেছে। সকালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।