রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, হাওরের মানুষ সবদিক থেকেই বঞ্চিত-অবহেলিত ছিল। একসময় এখানকার গ্রাম তো দূরের কথা, ইউনিয়নেও কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ক্রমে ক্রমে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল ও কলেজ হয়েছে। মালদ্বীপের সাথে হাওরকে তুলনা করে তিনি বলেন, মালদ্বীপের মতো এখানকার প্রতিটি গ্রামই একেকটি দ্বীপ। বর্ষায় এই গ্রামগুলো পানিতে ভাসতে থাকে। এখানে এক সময় কারো মৃত্যু হলে পানিতে ভাসিয়ে দেয়া ছাড়া উপায় ছিল না। এই উন্নয়নবঞ্চিত হাওরে এখন উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা সদরে পুরাতন ডাকবাংলোর মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, হাওরে পানিতে চলাচল ছাড়া যেখানে আর কোন ব্যবস্থা ছিল না, সেখানে এখন সড়ক হচ্ছে। সারা বছর এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাবে। তিনি আরও বলেন, আমি সকলের রাষ্ট্রপতি। কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের রাষ্ট্রপতি নই। হাওরের উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে যত ভাল কথা হয়, সে তুলনায় অতীতে ভাল কাজের কোনে দৃষ্টান্ত ছিল না। তিনি বেশি কথা না বলে ভাল কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখন ভাল কাজের অ্যাকশনে যেতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল না। তাই তখন কোন উন্নয়ন হয়নি। এখন ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করতে হবে।
সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ.ফ.ম. মুস্তফা কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন, এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির। কিন্তু বিপথগামী কিছু মানুষ তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। তাকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। এখন তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাল ধরেছেন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবেই।
এর আগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রাম হাওরের সারা বছরের চলাচল উপযোগী প্রায় ২৯ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। প্রায় ছয়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর মহাসড়কটি নির্মাণ করছে।
এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি, অ্যাডভোকেট সোহরাবউদ্দিন এমপি উপস্থিত ছিলেন।