জমজমাট উরদিঘীর মেলা, বাহারি পণ্যের পসরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মোয়া, মুড়কি, মন্ডা, মিঠাই, বাতাসা। ঐতিহ্যবাহী ও লোভনিয় এসব খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। কড়াইয়ে ভাজা হচ্ছে লাল গুড়ের জিলাপি। গরম গরম এসব জিলাপি সাজিয়ে রাখা হচ্ছে থরে থরে।

মোয়া, মুড়কি, মন্ডা, মিঠাই, বাতাসা, লাল গুড়ের জিলাপির মতো বাহারি সব খাবারই বলে দেয়, এটি উরদিঘীর মেলা প্রাঙ্গণ। গত ৭৫ বছর ধরে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের উরদিঘী গ্রামের সামনে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে দেশের ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের উপকরণ নিয়ে হাজির হয়েছেন কয়েক শ বিক্রেতা।

কী নেই এই মেলায়! শখের হাঁড়ি, মাটির সরা, শোলার ফুল, মাটির পুতুল, কাঠের একতারা, বাঁশের বাঁশি, নকশিকাঁথা, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের নজর কাড়ে ঐতিহ্যবাহী এসব উপকরণ।

এই মেলাকে এলাকার লোকজন ‘উরদিঘীর বান্নি’ হিসেবে চেনে।

মেলায় আছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নাগরদোলা। হাতে ঘোরানো এই নাগরদোলায় চড়ে বড়রাও ফিরে যেতে পারেন শৈশবে।

বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, প্রতিবছর ১৩ ফাল্গুন ওরস ও মেলার তারিখ। বিক্রেতারা আসা শুরু করেন তিন চারদিন আগে থেকে। মেলা চলে ১৫ ফাল্গুন পর্যন্ত।

তিন দিনের এ মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হওয়ার পর মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সব বয়সী মানুষ ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ।

মেলার ঐতিহ্য অনুযায়ী এ এলাকার পরিবারের যার যেখানে আত্মীয়-স্বজন রয়েছে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়। বিয়ে দেয়া মেয়েদের ‘নায়র’ আনা হয় বাড়িতে। ঘরে ঘরে ভাজা হয় মুড়ি, মুড়কি, বিন্নি ধানের খই।

মেলা শেষ হয়ে গেলেও কাঠের আসবাবপত্র বিক্রি চলে মাসব্যাপী। এ মেলায় প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার কাঠের সামগ্রী বিক্রি হয়। এবারের মেলায়ও প্রচুর কাঠের আসবাবপত্র বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা।

জানা গেছে, কথিত পীর পাহাড় খান (রহ.) এর নির্দেশে তার ভক্ত উরদিঘী গ্রামের মরহুম আব্দুল খাবির খান ওরফে হিরু মিয়া গ্রামে ওরসের আয়োজন করেন। সেই ওরসকে ঘিরেই মেলার উৎপত্তি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর