ঢাকা ১০:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মোদি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০১৫
  • ২৯৪ বার

নরেন্দ্র মোদী বুঝলেন, দেশ চালানো বড় দায়!

বাজপেয়ী জমানায় গুজরাত দাঙ্গার জন্য এই নরেন্দ্র মোদীকেই একদা ভিসা দিতে রাজি হয়নি আমেরিকা। এই মোদীর রাজ্যের গোধরা দাঙ্গা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হয়েছিলেন তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। এমনকী গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মোদীকেই তাঁদের ধর্মীয় টুপি পরাতে পারেননি সংখ্যালঘু সমাজের নেতারা। আর সেই মোদীই কি না আজ সরকারের এক বছর পার হতে না হতে তিরিশ জন ইমাম এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করলেন! আর সেখানেই তিনি জানিয়ে দিলেন, কোনও স্তরেই সাম্প্রদায়িকতাকে বরদাস্ত করা হবে না। উন্নয়নই সব সমস্যার সমাধান। সংখ্যালঘু সমাজের উদ্দেশে এমন একটা বার্তা দেওয়ার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন সব-এ-বরাতের দিনটিকে।

অল ইন্ডিয়া ইমাম সংগঠনের প্রধান ইমাম উমের আহমেদ ইলিয়াসির নেতৃত্বে তিরিশ জনের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আজ নিজের বাসভবনে দেখা করেন মোদী। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে পাশে নিয়ে প্রত্যেকের সঙ্গে আলাপ করেন। আর তার পরেই আলোচনার ফাঁকে বলে দেন, বিভাজনের রাজনীতিতে তিনি বিশ্বাসী নন। মোদীর কথায়, ‘‘সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর রাজনীতি এ দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। উন্নয়নই এখন যাবতীয় সমস্যার সমাধান। আমি সেই লক্ষ্যেই আছি।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও তিনি এই কাজই করেছেন। আজও লক্ষ্যচ্যুত হননি।

পাল্টা বার্তা এসেছে সংখ্যালঘু সমাজের পক্ষ থেকেও। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের বক্তব্য, গত এক বছরে মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রতিনিধি দল বলেছে, উন্নয়নের পথে তাঁরাও শরিক হতে চান। ভোটব্যাঙ্কের বিভাজনের রাজনীতিকে সরাসরি খারিজ করেন এই নেতারাও। একই সঙ্গে ‘মুসলিম যুবকদের এক হাতে কোরান আর এক হাতে কম্পিউটার’ নিয়ে মোদীর দৃষ্টিভঙ্গীরও তারিফ করেন তাঁরা।

ভাবমূর্তি বদলের জন্য মোদীর এই সক্রিয়তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরে। যদিও সরকার ও বিজেপির একটা বড় অংশের বক্তব্য, মোদীর আজকের এই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থান আকস্মিক নয়। সাম্প্রদায়িক বিবৃতি দেওয়ার জন্য গতকালই এক সাক্ষাৎকারে সঙ্ঘ পরিবারের কিছু নেতার বিরুদ্ধে কামান দেগেছিলেন মোদী। আজকের বৈঠক ও বার্তা তারই পরবর্তী ধাপ। গো-হত্যা বন্ধ-সহ বেশ কিছু কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে যে বিতর্ক-উত্তেজনা চলছে, সরকার এখন তাতে জল ঢালতে চাইছে। গো-হত্যা বিতর্কে জল ঢালতে সক্রিয় হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। উত্তর-পূর্বের এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। রিজিজু রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, তিনি নিজেই গরু খান এবং বিভিন্ন এলাকার মানুষের বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা।

সাম্প্রদায়িকতা বনাম ধর্মনিরপেক্ষতার এই বিতর্ক কিন্তু বিজেপিতে নতুন নয়। যে লালকৃষ্ণ আডবাণী বিরোধী দলে থাকার সময় রামমন্দির আন্দোলন করে হিন্দুত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন, তিনিই পাকিস্তান সফরে গিয়ে জিন্নার সমাধি দর্শন করে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে আডবাণীর চূড়ান্ত সংঘাত শুরু হয়। সেই সংঘাতে শেষ পর্যন্ত বলি হতে হয়েছিল আডবাণীকে। দলের সভাপতির পদও তাঁকে খোয়াতে হয়েছিল।

বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, মোদীর মধ্যেও কিন্তু আসলে দু’টি সত্ত্বা আছে। এক মোদী শিল্প এবং সংস্কারের পক্ষে। অম্বানী থেকে আমেরিকা। তিনি ‘স্যুটেড-বুটেড’, আধুনিক। অন্য জন গৈরিক বসনে হিন্দুরাষ্ট্র নেপাল   সফরে যান। এবং তাতে খুশি হয় নাগপুর। এ এক ভারসাম্যের খেলা। বৈপরীত্যের ঐক্য।

আরএসএসের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে মোদীর এই উদ্যোগ কিন্তু নাগপুরকে জানিয়েই। অমিত শাহ ক’দিন আগেই নাগপুরে গিয়ে এ ব্যাপারে মোদীর কৌশল তাঁদের জানিয়ে এসেছেন। ওই আরএসএস নেতাটি বলেন, সঙ্ঘ এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের রসায়ন যদি ভাল হয়, তা হলে অনেক বড় ব্যাপারও ছোট হয়ে যায়। আর সম্পর্ক খারাপ হলে অনেক ছোট ব্যাপারও বড় হয়ে যায়। বাজপেয়ী জমানায় সুদর্শনের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে ব্যক্তিগত তিক্ততা এসে গিয়েছিল। উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে আডবাণী সেতুর কাজ করতেন। আরএসএসের সমর্থন ছিল তাঁর সঙ্গে। এখন মোদীর সরকারে কিন্তু কোনও আডবাণী নেই। মোদীই বাজপেয়ী, মোদীই আডবাণী!

একই সঙ্গে বলা হচ্ছে, মোহন ভাগবতের সঙ্গে মোদীর সম্পর্কের রসায়ন যথেষ্ট ভাল। আরএসএস নেতৃত্ব বলছেন, এটা ঠিক যে, মোদী সরকারের এক বছরের কাজকর্মের অনেক ত্রুটি তাঁরা অমিত শাহের মাধ্যমে ধরিয়ে দিয়েছেন। তবে তার মানে এই নয় যে, সঙ্ঘ মোদী বিরোধী হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে বিজেপিতে মোদীর কোনও বিকল্প নেই। আরএসএসের এই নেতা আরও বলেন, আরএসএসের কাছে মোদী এমন এক সন্তান, যাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়োজন আছে।

মোদীকে আরএসএস এই আশ্বাসও দিয়েছে, আগামী কয়েক বছর তারা রামমন্দির, ৩৭০ ধারা, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মতো কড়া হিন্দুত্বের প্রসঙ্গগুলি তুলবে না। কারণ সরকারের সামনে পরিস্থিতি বেশ কঠিন। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, শেয়ার বাজারের অবস্থা মোটেই সুবিধের নয়। মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতিও চিন্তার। এই পরিস্থিতিতে মেরুকরণের রাজনীতি ভুলে উন্নয়নের রাস্তায় না হাঁটলে এখন সবথেকে বেশি বিপদ কিন্তু মোদীরই। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েও দিয়েছেন, তাঁর পাখির চোখ উন্নয়ন। বিহারের নির্বাচনের এখনও বেশ কয়েক মাস বাকি আছে। তাই বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকেই এখন তুলে ধরতে হবে মোদীকে। প্রবীণ তোগাড়িয়ার মতো বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কিছু নেতা চেঁচাতে পারেন। কিন্তু সে দিকে নজর দিতে গেলেই বিপদ বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।

সরকার চালানো যে বড় গরজ!

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমামদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মোদি

আপডেট টাইম : ০৬:২৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০১৫

নরেন্দ্র মোদী বুঝলেন, দেশ চালানো বড় দায়!

বাজপেয়ী জমানায় গুজরাত দাঙ্গার জন্য এই নরেন্দ্র মোদীকেই একদা ভিসা দিতে রাজি হয়নি আমেরিকা। এই মোদীর রাজ্যের গোধরা দাঙ্গা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হয়েছিলেন তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। এমনকী গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মোদীকেই তাঁদের ধর্মীয় টুপি পরাতে পারেননি সংখ্যালঘু সমাজের নেতারা। আর সেই মোদীই কি না আজ সরকারের এক বছর পার হতে না হতে তিরিশ জন ইমাম এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করলেন! আর সেখানেই তিনি জানিয়ে দিলেন, কোনও স্তরেই সাম্প্রদায়িকতাকে বরদাস্ত করা হবে না। উন্নয়নই সব সমস্যার সমাধান। সংখ্যালঘু সমাজের উদ্দেশে এমন একটা বার্তা দেওয়ার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন সব-এ-বরাতের দিনটিকে।

অল ইন্ডিয়া ইমাম সংগঠনের প্রধান ইমাম উমের আহমেদ ইলিয়াসির নেতৃত্বে তিরিশ জনের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আজ নিজের বাসভবনে দেখা করেন মোদী। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে পাশে নিয়ে প্রত্যেকের সঙ্গে আলাপ করেন। আর তার পরেই আলোচনার ফাঁকে বলে দেন, বিভাজনের রাজনীতিতে তিনি বিশ্বাসী নন। মোদীর কথায়, ‘‘সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর রাজনীতি এ দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। উন্নয়নই এখন যাবতীয় সমস্যার সমাধান। আমি সেই লক্ষ্যেই আছি।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও তিনি এই কাজই করেছেন। আজও লক্ষ্যচ্যুত হননি।

পাল্টা বার্তা এসেছে সংখ্যালঘু সমাজের পক্ষ থেকেও। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের বক্তব্য, গত এক বছরে মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রতিনিধি দল বলেছে, উন্নয়নের পথে তাঁরাও শরিক হতে চান। ভোটব্যাঙ্কের বিভাজনের রাজনীতিকে সরাসরি খারিজ করেন এই নেতারাও। একই সঙ্গে ‘মুসলিম যুবকদের এক হাতে কোরান আর এক হাতে কম্পিউটার’ নিয়ে মোদীর দৃষ্টিভঙ্গীরও তারিফ করেন তাঁরা।

ভাবমূর্তি বদলের জন্য মোদীর এই সক্রিয়তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরে। যদিও সরকার ও বিজেপির একটা বড় অংশের বক্তব্য, মোদীর আজকের এই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থান আকস্মিক নয়। সাম্প্রদায়িক বিবৃতি দেওয়ার জন্য গতকালই এক সাক্ষাৎকারে সঙ্ঘ পরিবারের কিছু নেতার বিরুদ্ধে কামান দেগেছিলেন মোদী। আজকের বৈঠক ও বার্তা তারই পরবর্তী ধাপ। গো-হত্যা বন্ধ-সহ বেশ কিছু কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে যে বিতর্ক-উত্তেজনা চলছে, সরকার এখন তাতে জল ঢালতে চাইছে। গো-হত্যা বিতর্কে জল ঢালতে সক্রিয় হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। উত্তর-পূর্বের এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। রিজিজু রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, তিনি নিজেই গরু খান এবং বিভিন্ন এলাকার মানুষের বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা।

সাম্প্রদায়িকতা বনাম ধর্মনিরপেক্ষতার এই বিতর্ক কিন্তু বিজেপিতে নতুন নয়। যে লালকৃষ্ণ আডবাণী বিরোধী দলে থাকার সময় রামমন্দির আন্দোলন করে হিন্দুত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন, তিনিই পাকিস্তান সফরে গিয়ে জিন্নার সমাধি দর্শন করে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে আডবাণীর চূড়ান্ত সংঘাত শুরু হয়। সেই সংঘাতে শেষ পর্যন্ত বলি হতে হয়েছিল আডবাণীকে। দলের সভাপতির পদও তাঁকে খোয়াতে হয়েছিল।

বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, মোদীর মধ্যেও কিন্তু আসলে দু’টি সত্ত্বা আছে। এক মোদী শিল্প এবং সংস্কারের পক্ষে। অম্বানী থেকে আমেরিকা। তিনি ‘স্যুটেড-বুটেড’, আধুনিক। অন্য জন গৈরিক বসনে হিন্দুরাষ্ট্র নেপাল   সফরে যান। এবং তাতে খুশি হয় নাগপুর। এ এক ভারসাম্যের খেলা। বৈপরীত্যের ঐক্য।

আরএসএসের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে মোদীর এই উদ্যোগ কিন্তু নাগপুরকে জানিয়েই। অমিত শাহ ক’দিন আগেই নাগপুরে গিয়ে এ ব্যাপারে মোদীর কৌশল তাঁদের জানিয়ে এসেছেন। ওই আরএসএস নেতাটি বলেন, সঙ্ঘ এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের রসায়ন যদি ভাল হয়, তা হলে অনেক বড় ব্যাপারও ছোট হয়ে যায়। আর সম্পর্ক খারাপ হলে অনেক ছোট ব্যাপারও বড় হয়ে যায়। বাজপেয়ী জমানায় সুদর্শনের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে ব্যক্তিগত তিক্ততা এসে গিয়েছিল। উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে আডবাণী সেতুর কাজ করতেন। আরএসএসের সমর্থন ছিল তাঁর সঙ্গে। এখন মোদীর সরকারে কিন্তু কোনও আডবাণী নেই। মোদীই বাজপেয়ী, মোদীই আডবাণী!

একই সঙ্গে বলা হচ্ছে, মোহন ভাগবতের সঙ্গে মোদীর সম্পর্কের রসায়ন যথেষ্ট ভাল। আরএসএস নেতৃত্ব বলছেন, এটা ঠিক যে, মোদী সরকারের এক বছরের কাজকর্মের অনেক ত্রুটি তাঁরা অমিত শাহের মাধ্যমে ধরিয়ে দিয়েছেন। তবে তার মানে এই নয় যে, সঙ্ঘ মোদী বিরোধী হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে বিজেপিতে মোদীর কোনও বিকল্প নেই। আরএসএসের এই নেতা আরও বলেন, আরএসএসের কাছে মোদী এমন এক সন্তান, যাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়োজন আছে।

মোদীকে আরএসএস এই আশ্বাসও দিয়েছে, আগামী কয়েক বছর তারা রামমন্দির, ৩৭০ ধারা, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মতো কড়া হিন্দুত্বের প্রসঙ্গগুলি তুলবে না। কারণ সরকারের সামনে পরিস্থিতি বেশ কঠিন। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, শেয়ার বাজারের অবস্থা মোটেই সুবিধের নয়। মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতিও চিন্তার। এই পরিস্থিতিতে মেরুকরণের রাজনীতি ভুলে উন্নয়নের রাস্তায় না হাঁটলে এখন সবথেকে বেশি বিপদ কিন্তু মোদীরই। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েও দিয়েছেন, তাঁর পাখির চোখ উন্নয়ন। বিহারের নির্বাচনের এখনও বেশ কয়েক মাস বাকি আছে। তাই বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকেই এখন তুলে ধরতে হবে মোদীকে। প্রবীণ তোগাড়িয়ার মতো বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কিছু নেতা চেঁচাতে পারেন। কিন্তু সে দিকে নজর দিতে গেলেই বিপদ বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।

সরকার চালানো যে বড় গরজ!