হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জ জেলা জুড়ে রোপা আমন তোলা শেষে বোরো ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর।
জেলার কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে কৃষকরা আবাদের সরঞ্জাম নিয়ে হাওরে যাচ্ছেন। কেউ বীজতলা তৈরি করছেন, কোথাও কোথাও পুরোদমে চলছে রোপনের কাজ। পুরুষের সঙ্গে নারী ও শিশুরা কাজে যোগ দেওয়ায় নেই শ্রমিক সংকটও।
কৃষি বিভাগ জেলার ৯ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪৯ হাজার, উফসী ৭৩ হাজার ২২০ ও স্থানীয় জাতের ধান ৮০ হেক্টর। জমিগুলো থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ২২ হাজার ১০৯ মেট্রিক টন।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কৃষক ওয়ারিশ মিয়া, শামছুল আলম, তুহেল মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন ও সাজিজুল মিয়া বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সফলভাবে রোপা আমন ধান তোলা শেষ হয়েছে। শুরুতে ধানের ন্যায্যমূল্য থাকলেও শেষের দিকে দাম অনেকটা কমে যাওয়ায় তাদের ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বোরো চাষে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
বানিয়াচং উপজেলার তৌফিক মিয়া জানান, ইতোমধ্যেই হাওরের নীচু জমিতে চারা রোপন শেষ। এখন উঁচু জমিতে সেচের মাধ্যমে আবাদ চলছে। এবার রোপা আমনের জমিতেও বোরো চাষ করা হচ্ছে। এতে আবাদের পরিমাণ বেড়েছে।
লাখাই উপজেলার অরুন চন্দ্র দাশ বলেন, তিনি এবার ১৫০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবেন। ইতোমধ্যে ১০০ বিঘা জমির চাষ শেষ। চারা রোপনের পরপরই তিনি জমিতে সার প্রয়োগ ও আগাছা পরিষ্কারের কাজে লেগে যাবেন।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলার সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৪০০ হেক্টর, মাধবপুরে ১১ হাজার ৭০, চুনারুঘাটে ১০ হাজার ৮৯৫, বাহুবলে ৮ হাজার ৬১০, নবীগঞ্জে ১৯ হাজার ৫৮০, লাখাইয়ে ১১ হাজার ১২০, বানিয়াচংয়ে ৩৩ হাজার ৬৮৫ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১৪ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখান থেকে ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা ৫ লাখ ২২ হাজার ১০৯ মেট্রিক টন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, এখন পর্যন্ত হাওরের অবস্থা ভালো। সামনের দিনে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।