ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষোভের আগুন দ্রুত নেভানোর পরামর্শ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০১৬
  • ৭৯৬ বার

কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া ক্ষোভের আগুন দ্রুত ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি একটি মহল এ ইস্যুতে দেশের শিক্ষাঙ্গনসহ বিভিন্ন খাত অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে। সেনানিবাসের সংরক্ষিত এলাকায় সংঘটিত এ নৃশংস হত্যাকা-কে ভর করে স্বার্থান্বেষী মহল একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে বিতর্কিত করে তোলার চেষ্টা করছে বলেও দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেছে। এ ছাইচাপা আগুন দ্রুত নেভানো না গেলে তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলেও গোয়েন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে এরই মধ্যে মৌলবাদী একটি ছাত্র
সংগঠনসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে যানবাহন ভাংচুর, অগি্নসংযোগ ও বোমাবাজিসহ নানা ধরনের নাশকতার ছক সাজিয়ে তা বাস্তবায়নে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা তনু ইস্যুতে সৃষ্ট ক্ষোভের ভিন্নমুখী হওয়ার আশঙ্কার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্রকারী চক্র এ স্পর্শকাতর ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য দেশের প্রতিটি জেলার এসপি (পুলিশ সুপার) বরাবর বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রকারীদের গতিবিধি সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ এ ফাঁদে যাতে পা না দেয় এ জন্য জনসচেতনতা বাড়ানোরও নির্দেশনা রয়েছে। এ ব্যাপারে সব প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।
এদিকে স্পর্শকাতর এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা আনার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, তদন্তের অস্বচ্ছ কোনো ইস্যু পাওয়ামাত্র ষড়যন্ত্রকারী চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাবে। আর এতে শুধু বিশৃঙ্খলাই সৃষ্টি হবে না, তদন্ত কাজও মারাত্মকভাবে বিঘি্নত হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আগামী ৩ এপ্রিল সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালনে তারা শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বাধা দেবে না। তবে এ ইস্যুতে কেউ যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য মাঠপর্যায়ের পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওইদিন অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের সড়কগুলোতে সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের পাশাপাশি অতিরিক্ত টহল পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তুতি থাকছে।
এদিকে ক্ষোভের আগুন ভিন্নমুখী হওয়ার আশঙ্কাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন তনু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। তাদের ভাষ্য, উত্তাল আন্দোলন ঠেকাতেই এ ধরনের আশঙ্কার ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে। এভাবে তাদের প্রতিহত করা যাবে না বলে হুশিয়ার করেন তারা।
তবে তনু হত্যার প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন যাতে কেউ কারো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার করে তুলতে না পারে এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন আন্দোলনে সক্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থী নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনায় গড়ে ওঠা প্রতিটি আন্দোলনের নেতৃত্ব বহিরাগত সন্ত্রাসীরা কৌশলে ছিনিয়ে নিয়ে এর গতিধারা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। এমনকি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি আদায়ের আন্দোলনেও তারা বাগড়া দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ঢাবির ওই শিক্ষার্থী।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে যায়যায়দিনকে বলেন, তনু হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভের আগুন যেভাবে দ্রুত দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে তা সামাল দেয়া সত্যিকার অর্থেই প্রশাসনের পক্ষে কঠিন হবে।
এ আন্দোলনের গতিপ্রবাহ ভিন্নমুখী হওয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রথিতযশা এ শিক্ষক বলেন, বৃহৎ আন্দোলন নির্দিষ্ট গ-িতে বন্দি রাখা বাস্তবিক অর্থে দুরূহ। এর ওপর দেশের সরকারবিরোধী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা হয়ে থাকায় তাদের সে সুযোগ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তনু হত্যা রহস্য দ্রুত উদ্ঘাটন করে এ ইস্যুতে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিভিয়ে ফেলা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে তনু হত্যাকা- ইস্যুতে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের ফাঁদ ফেলার অপচেষ্টা এরই মধ্যে সেনাবাহিনীরও দৃষ্টিগোচরে এসেছে। মঙ্গলবার আইএসপিআর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক অন্য সবার মতো সেনাবাহিনীরও এটা প্রত্যাশা। অথচ কিছু স্বার্থান্বেষী মহল জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর লক্ষ্যে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী সম্পর্কে অনুমাননির্ভর বক্তব্য দিচ্ছেন ও প্রচার করছে। সেনাবাহিনী প্রথম থেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্তকারী প্রতিটি সংস্থাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলেও সেনাসদরের পাঠানো ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের (সম্মান) ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী ও ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সদস্য সোহাগী জাহান তনু গত ২০ মার্চ সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ানোর জন্য বের হয়। পরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি পার হয়ে গেলেও তনু বাসায় ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাতে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন কালভার্টের পাশে ঝোঁপের মধ্যে তার লাশ পাওয়া যায়। এই জঘন্য হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতে ঢাকা ও কুমিল্লাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সংগঠন তীব্র প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্ষোভের আগুন দ্রুত নেভানোর পরামর্শ

আপডেট টাইম : ১১:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০১৬

কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া ক্ষোভের আগুন দ্রুত ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি একটি মহল এ ইস্যুতে দেশের শিক্ষাঙ্গনসহ বিভিন্ন খাত অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে। সেনানিবাসের সংরক্ষিত এলাকায় সংঘটিত এ নৃশংস হত্যাকা-কে ভর করে স্বার্থান্বেষী মহল একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে বিতর্কিত করে তোলার চেষ্টা করছে বলেও দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেছে। এ ছাইচাপা আগুন দ্রুত নেভানো না গেলে তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলেও গোয়েন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে এরই মধ্যে মৌলবাদী একটি ছাত্র
সংগঠনসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে যানবাহন ভাংচুর, অগি্নসংযোগ ও বোমাবাজিসহ নানা ধরনের নাশকতার ছক সাজিয়ে তা বাস্তবায়নে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা তনু ইস্যুতে সৃষ্ট ক্ষোভের ভিন্নমুখী হওয়ার আশঙ্কার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্রকারী চক্র এ স্পর্শকাতর ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য দেশের প্রতিটি জেলার এসপি (পুলিশ সুপার) বরাবর বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রকারীদের গতিবিধি সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ এ ফাঁদে যাতে পা না দেয় এ জন্য জনসচেতনতা বাড়ানোরও নির্দেশনা রয়েছে। এ ব্যাপারে সব প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।
এদিকে স্পর্শকাতর এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা আনার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, তদন্তের অস্বচ্ছ কোনো ইস্যু পাওয়ামাত্র ষড়যন্ত্রকারী চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাবে। আর এতে শুধু বিশৃঙ্খলাই সৃষ্টি হবে না, তদন্ত কাজও মারাত্মকভাবে বিঘি্নত হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আগামী ৩ এপ্রিল সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালনে তারা শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের বাধা দেবে না। তবে এ ইস্যুতে কেউ যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য মাঠপর্যায়ের পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওইদিন অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের সড়কগুলোতে সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের পাশাপাশি অতিরিক্ত টহল পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তুতি থাকছে।
এদিকে ক্ষোভের আগুন ভিন্নমুখী হওয়ার আশঙ্কাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন তনু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। তাদের ভাষ্য, উত্তাল আন্দোলন ঠেকাতেই এ ধরনের আশঙ্কার ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে। এভাবে তাদের প্রতিহত করা যাবে না বলে হুশিয়ার করেন তারা।
তবে তনু হত্যার প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন যাতে কেউ কারো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার করে তুলতে না পারে এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন আন্দোলনে সক্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থী নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনায় গড়ে ওঠা প্রতিটি আন্দোলনের নেতৃত্ব বহিরাগত সন্ত্রাসীরা কৌশলে ছিনিয়ে নিয়ে এর গতিধারা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। এমনকি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি আদায়ের আন্দোলনেও তারা বাগড়া দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ঢাবির ওই শিক্ষার্থী।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে যায়যায়দিনকে বলেন, তনু হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভের আগুন যেভাবে দ্রুত দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে তা সামাল দেয়া সত্যিকার অর্থেই প্রশাসনের পক্ষে কঠিন হবে।
এ আন্দোলনের গতিপ্রবাহ ভিন্নমুখী হওয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রথিতযশা এ শিক্ষক বলেন, বৃহৎ আন্দোলন নির্দিষ্ট গ-িতে বন্দি রাখা বাস্তবিক অর্থে দুরূহ। এর ওপর দেশের সরকারবিরোধী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা হয়ে থাকায় তাদের সে সুযোগ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তনু হত্যা রহস্য দ্রুত উদ্ঘাটন করে এ ইস্যুতে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিভিয়ে ফেলা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে তনু হত্যাকা- ইস্যুতে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের ফাঁদ ফেলার অপচেষ্টা এরই মধ্যে সেনাবাহিনীরও দৃষ্টিগোচরে এসেছে। মঙ্গলবার আইএসপিআর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক অন্য সবার মতো সেনাবাহিনীরও এটা প্রত্যাশা। অথচ কিছু স্বার্থান্বেষী মহল জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর লক্ষ্যে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী সম্পর্কে অনুমাননির্ভর বক্তব্য দিচ্ছেন ও প্রচার করছে। সেনাবাহিনী প্রথম থেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্তকারী প্রতিটি সংস্থাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলেও সেনাসদরের পাঠানো ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের (সম্মান) ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী ও ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সদস্য সোহাগী জাহান তনু গত ২০ মার্চ সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ানোর জন্য বের হয়। পরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি পার হয়ে গেলেও তনু বাসায় ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাতে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন কালভার্টের পাশে ঝোঁপের মধ্যে তার লাশ পাওয়া যায়। এই জঘন্য হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতে ঢাকা ও কুমিল্লাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সংগঠন তীব্র প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।