ঢাকা ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

খেলনা বিক্রেতা ছেলেটি ঢাবিতে সুযোগ পেলেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫২:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১
  • ১৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘অভাব দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। বাবা-মা কেউ পাশে ছিলেন না। নিজের পড়াশোনা চালানোটা কষ্টসাধ্য ছিল। কখনো গ্রামে গ্রামে খেলনা বিক্রি করেছি। অভাবে এডমিশনের কোচিং করতে পারিনি। আমার এক বড় আপুর নোট পড়েছি। তবে, সাহস ছিল অসীম। এজন্য এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছি।’

কথাগুলো বলছিলেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামের ছেলে মো. আল-আমিন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ‘বি’ ইউনিটে সুযোগ পেয়েছেন। তার বাবা মো. খাইরুল ইসলাম। একজন ভ্যানচালক। মা মৌলুদা বিবি, গৃহিণী। তবে, বাবা-মা কারো সঙ্গে থাকার সুযোগ পাননি তিনি।

আল-আমিন বলেন, ছোটবেলায় মোটামুটি ভালো চলছিল আমাদের সংসার। কিন্তু ঘটনাক্রমে আমার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ফলে অনেক কষ্টে বেড়ে উঠি এবং লেখাপড়া করি। তারমধ্যে বাবা চলে গেলেন সৎমাকে নিয়ে ঢাকায়। এদিকে পড়াশোনার খরচ কিভাবে সামলাবো চিন্তায় পড়ে গেলাম। ঘরবাড়িহীন কখনো নানার বাড়ি, কখনো চাচার বাড়িতে থেকে কাজ করে পড়েছি।

তিনি জানান, একটা সময় একজন শিক্ষকের সহযোগিতায় মাদ্রাসার আবাসিক রুমে থাকতেন। কিন্তু চিন্তায় পড়লেন হাত খরচ ও বই খাতার টাকার। কালবিলম্ব না করে দু’জন ছাত্রকে পড়াতে লাগলেন। এভাবেই হুজুরদের সহায়তায় শেষ হলো আলিম (এইচএসসি-সমমান) জীবন।  রেজাল্ট বের হলো, পেলেন জিপিএ-৪.৮৬। কোথাও থাকার জায়গা না থাকায় চলে আসলেন ঢাকায়।

ভর্তি পরীক্ষায় কি কি করতে হয়, কেমনে দিতে হয় বুঝতেন না তখনো। বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাংলা প্রথমপত্র বই। কিন্তু ভুল ভাঙে দ্রুতই। বড় আপুর দেওয়া কিছু শিট দিয়েই যাত্রা শুরু করলেন। কিনতে পারেননি একটি বইও, কোচিং তো ছিল বিলাসিতা। আবেদন এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের সমস্ত খরচ বহন করেছেন এক শুভাকাঙ্ক্ষী। যার নাম ছাড়া কিছুই জানেন না তিনি। আরও অবাক করা বিষয় হলো, তার ভর্তির খরচ যোগাতে চাঁদা তুলেছেন বেশ কয়েকজন মানুষ, যাদের অনেককে চিনেনও না। এখন ঢাকায় থাকা-খাওয়ার ও পড়াশোনার খরচ আয়ের পথ খুঁজছেন আল-আমিন।

লেখক: শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

খেলনা বিক্রেতা ছেলেটি ঢাবিতে সুযোগ পেলেন

আপডেট টাইম : ০৩:৫২:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘অভাব দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। বাবা-মা কেউ পাশে ছিলেন না। নিজের পড়াশোনা চালানোটা কষ্টসাধ্য ছিল। কখনো গ্রামে গ্রামে খেলনা বিক্রি করেছি। অভাবে এডমিশনের কোচিং করতে পারিনি। আমার এক বড় আপুর নোট পড়েছি। তবে, সাহস ছিল অসীম। এজন্য এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছি।’

কথাগুলো বলছিলেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামের ছেলে মো. আল-আমিন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ‘বি’ ইউনিটে সুযোগ পেয়েছেন। তার বাবা মো. খাইরুল ইসলাম। একজন ভ্যানচালক। মা মৌলুদা বিবি, গৃহিণী। তবে, বাবা-মা কারো সঙ্গে থাকার সুযোগ পাননি তিনি।

আল-আমিন বলেন, ছোটবেলায় মোটামুটি ভালো চলছিল আমাদের সংসার। কিন্তু ঘটনাক্রমে আমার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ফলে অনেক কষ্টে বেড়ে উঠি এবং লেখাপড়া করি। তারমধ্যে বাবা চলে গেলেন সৎমাকে নিয়ে ঢাকায়। এদিকে পড়াশোনার খরচ কিভাবে সামলাবো চিন্তায় পড়ে গেলাম। ঘরবাড়িহীন কখনো নানার বাড়ি, কখনো চাচার বাড়িতে থেকে কাজ করে পড়েছি।

তিনি জানান, একটা সময় একজন শিক্ষকের সহযোগিতায় মাদ্রাসার আবাসিক রুমে থাকতেন। কিন্তু চিন্তায় পড়লেন হাত খরচ ও বই খাতার টাকার। কালবিলম্ব না করে দু’জন ছাত্রকে পড়াতে লাগলেন। এভাবেই হুজুরদের সহায়তায় শেষ হলো আলিম (এইচএসসি-সমমান) জীবন।  রেজাল্ট বের হলো, পেলেন জিপিএ-৪.৮৬। কোথাও থাকার জায়গা না থাকায় চলে আসলেন ঢাকায়।

ভর্তি পরীক্ষায় কি কি করতে হয়, কেমনে দিতে হয় বুঝতেন না তখনো। বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাংলা প্রথমপত্র বই। কিন্তু ভুল ভাঙে দ্রুতই। বড় আপুর দেওয়া কিছু শিট দিয়েই যাত্রা শুরু করলেন। কিনতে পারেননি একটি বইও, কোচিং তো ছিল বিলাসিতা। আবেদন এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের সমস্ত খরচ বহন করেছেন এক শুভাকাঙ্ক্ষী। যার নাম ছাড়া কিছুই জানেন না তিনি। আরও অবাক করা বিষয় হলো, তার ভর্তির খরচ যোগাতে চাঁদা তুলেছেন বেশ কয়েকজন মানুষ, যাদের অনেককে চিনেনও না। এখন ঢাকায় থাকা-খাওয়ার ও পড়াশোনার খরচ আয়ের পথ খুঁজছেন আল-আমিন।

লেখক: শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।