হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়া দুই বিএনপি নেতাকে ভোটে হারিয়ে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর নির্বাচনে মেয়র হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম আকন্দ।
নৌকা প্রতীকে নজরুলের পক্ষে বিএনপির দুই নেতার সম্মিলিত ভোটের চেয়েও বেশি ভোট পড়েছে।
মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন শেষে ঘোষিত ফলাফলে জানানো হয়, আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম আকন্দ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৭১৬ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা জালাল উদ্দীন মোবাইল ফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৫২৪ ভোট।দলটির আরেক নেতা মো. আক্তারুজ্জামান খোকন নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪১ ভোট।
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা থাকা বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচনে প্রার্থী না দিলেও দলটির দুই নেতার অংশ নেয়াকে ঘিরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির লড়াই হয়।
ভোটে দ্বিতীয় হওয়া জালাল উদ্দিন পৌরসভাটির সাবেক মেয়র। অন্যদিকে আক্তারুজ্জামান খোকন সদ্য বিদায়ী মেয়র ছিলেন।
নির্বাচনে আরও দুই জন প্রার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের মো. আতাহার আলী হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩২ ভোট। ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোতায়েম হোসেনের জগ প্রতীকেও পড়েছে ১২৫ ভোট।
পৌরসভার মোট ভোটার ২৩ হাজার ১৪৪ জন। এদের মধ্যে ভোট দেন ১৫ হাজার ৬৩৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৩১ টি ভোট। ভোটের শতকরা হার ৬৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বিএনপি নেতা জালাল উদ্দীনের দাবি, ভোটের পরিবেশ আপাতদৃষ্টিতে ভালো হলেও ভোট সুষ্ঠু ছিল না। তিনি বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রের বাইরের পরিস্থিতি আর ভেতরের পরিস্থিতি এক রকম ছিল না । বাহিরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ লক্ষ্য করা গেলেও ভোট কেন্দের ভিতরের পরিবেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নষ্ট করে দিয়েছে৷ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে।’
আরেক পরাজিত প্রার্থী আক্তারুজ্জামান খোকনও বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদেরকে বের করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তার ভোটারদেরও ভোট দিতে বাধা দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী নজরুল ইসলাম আকন্দ এর আগে ছিলেন কাউন্সিলর। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উন্নয়নের সরকার, তাই সরকারের উন্নয়নের যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে জনগণ নৌকা প্রতীককেই বেছে নিয়েছে। এজন্য পৌরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এবার বিএনপি তাদের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু চেহারা পাল্টে ঠিকই অংশ নিয়েছে। বিএনপির কাজই হচ্ছে অভিযোগ করা। এই হিসেবেই তারা বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। আপনারা বিভিন্ন কেন্দ্রে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আশরাফুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো কেন্দ্রেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কারও পক্ষ থেকে কোন অভিযোগও পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে৷’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার শরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি কেন্দ্রেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি ও র্যাবের ভ্রাম্যমাণ টিম পৌর এলাকায় সক্রিয় ছিল।’