ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নৌকা’র প্রার্থী বড় ভাই, ছোট ভাইয়ের ‘লাঙ্গল’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১
  • ১৬৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই দলের মনোনয়নে দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আপন দুই ভাই। তাদের মধ্যে বড় ভাই মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং ছোট ভাই মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দিগদাইড় ইউনিয়নের বরুহা গ্রামের মৃত ছায়েব আলী ভূঞার দুই ছেলে মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ ও মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ায় এ নিয়ে আলোচনা চলছে তাড়াইল উপজেলা সদরসহ আশে-পাশের ইউনিয়নেও।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পরেও উপজেলা সদরসহ ইউনিয়নের সর্বত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয় এঁর ছবিসহ বাহারী রঙ্গের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে প্রার্থিতার জানান দিয়েছিলেন।
ব্যক্তিজীবনে তিনি তাড়াইল বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোন কমিটিতে তাঁর নাম নেই।

এ পরিস্থিতিতে গত ৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষরে দলীয় মনোনয়ন মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদের বড় ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপকে দেয়া হয়।

এদিকে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নির্বাচনে লাঙ্গলের প্রার্থী হওয়ার আশায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্নু এম.পি’র হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি.এম কাদের) এঁর স্বাক্ষরে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদকে চুড়ান্ত মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’ দেয়া হয়।

অন্যদিক তাঁর বড় ভাই মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক। দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ লাভ করেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা, রাউতি, ধলা, জাওয়ার, দামিহা, দিগদাইড় ও তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়নে ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ভোটারদের ভাবনা জানতে কথা হয় দিগদাইড় ইউনিয়নের বরুহা, দিগদাইড়, কল্লা, সিন্দা ও করাতি গ্রামের বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে। তারা জানান, ভাই-ভাইয়ের লড়াই ভোটারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা-সমালোচনার কমতি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে।

দিগদাইড় ইউনিয়নের দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যান পদে এবার ওই দুই ভাই ছাড়াও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাঁদের ভাষ্যমতে লড়াই হবে ‘ত্রিমুখী’।

বরুহা গ্রামের এক চা-দোকানে আড্ডা দেওয়া একাধিক ভোটার বলেন, শুধু দলীয় বিবেচনায় নয়, ব্যক্তি পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে (ইউনিয়ন পরিষদ) ত্রিমূখী লড়াইয়ে প্রার্থীগণ ভোট পাবেন।

একই কথা বলেন, ইউনিয়নের করাতি গ্রামের একজন গৃহিণী।

দিগদাইড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভূঞা বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দিগদাইড় ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। দলীয় প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না।

অন্যদিকে দিগদাইড় ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা বিএনপি’র শীর্ষপদের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি (ধানের শীষ) অংশগ্রহণ করছে না। তাই দলীয়ভাবে তাদের এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য নেই।

তাড়াইল উপজেলা সদরের একটি ওষুধ দোকান মালিক হুমায়ুন কবির আকন্দ বলেন, দোকানে ওষুধ নিতে আসা স্থানীয় বেশির ভাগ ব্যক্তি ওই দুই ভাইয়ের লড়াই নিয়ে কথা বলছেন। কেউ-কেউ দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করছেন।

জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ বলেন, দলীয় আদর্শগত দিক থেকে আমরা দুই ভাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। ব্যক্তি ও দলগতভাবে নির্বাচনে আমি এবারের নির্বাচনে বিজয় নিয়ে শতভাগ আশাবাদী।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ বলেন, বিগত সময়েও আমি দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এবারও সাধারণ ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন, ইনশাআল্লাহ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নৌকা’র প্রার্থী বড় ভাই, ছোট ভাইয়ের ‘লাঙ্গল’

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই দলের মনোনয়নে দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আপন দুই ভাই। তাদের মধ্যে বড় ভাই মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং ছোট ভাই মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দিগদাইড় ইউনিয়নের বরুহা গ্রামের মৃত ছায়েব আলী ভূঞার দুই ছেলে মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ ও মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ায় এ নিয়ে আলোচনা চলছে তাড়াইল উপজেলা সদরসহ আশে-পাশের ইউনিয়নেও।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পরেও উপজেলা সদরসহ ইউনিয়নের সর্বত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয় এঁর ছবিসহ বাহারী রঙ্গের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে প্রার্থিতার জানান দিয়েছিলেন।
ব্যক্তিজীবনে তিনি তাড়াইল বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোন কমিটিতে তাঁর নাম নেই।

এ পরিস্থিতিতে গত ৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষরে দলীয় মনোনয়ন মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদের বড় ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপকে দেয়া হয়।

এদিকে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নির্বাচনে লাঙ্গলের প্রার্থী হওয়ার আশায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্নু এম.পি’র হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি.এম কাদের) এঁর স্বাক্ষরে মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদকে চুড়ান্ত মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’ দেয়া হয়।

অন্যদিক তাঁর বড় ভাই মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক। দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ লাভ করেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা, রাউতি, ধলা, জাওয়ার, দামিহা, দিগদাইড় ও তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়নে ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ভোটারদের ভাবনা জানতে কথা হয় দিগদাইড় ইউনিয়নের বরুহা, দিগদাইড়, কল্লা, সিন্দা ও করাতি গ্রামের বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে। তারা জানান, ভাই-ভাইয়ের লড়াই ভোটারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা-সমালোচনার কমতি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে।

দিগদাইড় ইউনিয়নের দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যান পদে এবার ওই দুই ভাই ছাড়াও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাঁদের ভাষ্যমতে লড়াই হবে ‘ত্রিমুখী’।

বরুহা গ্রামের এক চা-দোকানে আড্ডা দেওয়া একাধিক ভোটার বলেন, শুধু দলীয় বিবেচনায় নয়, ব্যক্তি পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে (ইউনিয়ন পরিষদ) ত্রিমূখী লড়াইয়ে প্রার্থীগণ ভোট পাবেন।

একই কথা বলেন, ইউনিয়নের করাতি গ্রামের একজন গৃহিণী।

দিগদাইড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভূঞা বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দিগদাইড় ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। দলীয় প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না।

অন্যদিকে দিগদাইড় ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা বিএনপি’র শীর্ষপদের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি (ধানের শীষ) অংশগ্রহণ করছে না। তাই দলীয়ভাবে তাদের এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য নেই।

তাড়াইল উপজেলা সদরের একটি ওষুধ দোকান মালিক হুমায়ুন কবির আকন্দ বলেন, দোকানে ওষুধ নিতে আসা স্থানীয় বেশির ভাগ ব্যক্তি ওই দুই ভাইয়ের লড়াই নিয়ে কথা বলছেন। কেউ-কেউ দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করছেন।

জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঞা আসাদ বলেন, দলীয় আদর্শগত দিক থেকে আমরা দুই ভাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। ব্যক্তি ও দলগতভাবে নির্বাচনে আমি এবারের নির্বাচনে বিজয় নিয়ে শতভাগ আশাবাদী।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. গোলাপ হোসেন ভূঞা গোলাপ বলেন, বিগত সময়েও আমি দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এবারও সাধারণ ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন, ইনশাআল্লাহ।