ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুয়াশা ও ভোরের শিশিরে শীতের আগমনী বার্তা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১
  • ২৯৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রকৃতির রানি খ্যাত দেশের একমাত্র উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঋতু পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যাম্পাসও সাজে ভিন্নরূপে। তরুণ-তরুণীর গায়ে ওঠে বাহারি পোশাক। ইতোমধ্যে হেমন্ত প্রকৃতিতে প্রভাব ফেলেছে। মিষ্টি বিকেলে হালকা কুয়াশার চাদর ক্যাম্পাসে জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। অন্যান্য ঋতুর চেয়ে শীতের আগমন যেন এক ভিন্ন মাত্রা।

প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষার ঘনঘটা শেষ করে কার্তিকের কোলজুড়ে এই শীত। এখন প্রতিটি সকালে দূর্বা ঘাসে কিংবা গাছের কচি পাতায় মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করে শিশির বিন্দু। কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব দিগন্তে সূর্যের উদয়। ক্যাম্পাসের দিগন্ত জোড়া মাঠ ও পিচঢালা পথে শীতের আমেজ বিরাজ করছে। অনুভূত হচ্ছে মৃদু ঠাণ্ডা।

এদিকে শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই ক্যাম্পাস অঙ্গনে পাখিদের পদচারণা বেড়েছে। কিচিরমিচির শব্দে ভরে উঠেছে ক্যাম্পাস প্রকৃতি। ঘন গাছপালার মধ্যে দিয়ে কুয়াশার লুকোচুরি খেলা বেশ শোভা ছড়াচ্ছে। ভোর হলেই শীতের সকাল দেখতে বেরিয়ে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের গাছগুলো পাতাশূন্য হতে শুরু করেছে। শিশিরস্নাত সকাল, রোদমাখা দুপুর, পাখিদের কিচিরমিচির ও মেঘমুক্ত আকাশ আরও রহস্যময় করে তোলে ক্যাম্পাস প্রেমীদের কাছে।

কুয়াশামাখা ভোরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে চৌরঙ্গী মোড় ও লেকপাড়। সূর্যের মিটমিট আলোতে যেন চারপাশ আচ্ছাদিত হয়। কুয়াশা ভেদ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ঝাপসা ছবিগুলো যেন এক কল্পকাহিনীর সৃষ্টি করে।

জাহাঙ্গীরনগরের শীত মানেই গায়ে চাদর জড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে চায়ের আড্ডায় মেতে ওঠা। বাহারি ভর্তা আর গরম ভাত খাওয়ার ধুম। শীত আসলে ক্যাম্পাস যেন নতুন রূপে সাজে। লেকে লেকে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। রঙ-বেরঙের পাখিদের কলতানে মুখর হয়ে ওঠে লেক পাড়গুলো। ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা চত্বরগুলো চায়ের কাপের টুং টাং শব্দে ভরে ওঠে। হাসি-ঠাট্টা আর সংগীতের তালে তালে সৃষ্টি হয় শত শত গল্প ও কবিতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাহরাইন জান্নাত বলেন, ‘শীতের আগমনে প্রকৃতি সেজে ওঠে ভিন্ন এক আমেজে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে শীতের আগমনী বার্তা। এখানে শীতের আগমন ঘটে একটু ভিন্নভাবে। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে অতিথি পাখি। জমে ওঠে পিঠেপুলির আড্ডা। প্রকৃতি সেজে উঠছে এক অপরূপ মহিমায়। সবুজ ঘাসের উপর মুক্তার দানার মতো ছড়িয়ে থাকা শিশির বিন্দু আর চারদিকে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দ জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে।’

বাংলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আরাফাত ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘আসলে গ্রামের শীতের যে আমেজ তার সাথে জাবি ক্যাম্পাসের শীতের আমেজের কোনো পার্থক্য নেই। তবে অতিথি পাখির কলতান শীতের আমেজটাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘ দিন কুয়াশামাখা ভোর দেখতে পেরে বেশ আনন্দিত।’

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কুয়াশা ও ভোরের শিশিরে শীতের আগমনী বার্তা

আপডেট টাইম : ১০:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রকৃতির রানি খ্যাত দেশের একমাত্র উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঋতু পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যাম্পাসও সাজে ভিন্নরূপে। তরুণ-তরুণীর গায়ে ওঠে বাহারি পোশাক। ইতোমধ্যে হেমন্ত প্রকৃতিতে প্রভাব ফেলেছে। মিষ্টি বিকেলে হালকা কুয়াশার চাদর ক্যাম্পাসে জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। অন্যান্য ঋতুর চেয়ে শীতের আগমন যেন এক ভিন্ন মাত্রা।

প্রতিবারের মতো এবারও বর্ষার ঘনঘটা শেষ করে কার্তিকের কোলজুড়ে এই শীত। এখন প্রতিটি সকালে দূর্বা ঘাসে কিংবা গাছের কচি পাতায় মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করে শিশির বিন্দু। কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব দিগন্তে সূর্যের উদয়। ক্যাম্পাসের দিগন্ত জোড়া মাঠ ও পিচঢালা পথে শীতের আমেজ বিরাজ করছে। অনুভূত হচ্ছে মৃদু ঠাণ্ডা।

এদিকে শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই ক্যাম্পাস অঙ্গনে পাখিদের পদচারণা বেড়েছে। কিচিরমিচির শব্দে ভরে উঠেছে ক্যাম্পাস প্রকৃতি। ঘন গাছপালার মধ্যে দিয়ে কুয়াশার লুকোচুরি খেলা বেশ শোভা ছড়াচ্ছে। ভোর হলেই শীতের সকাল দেখতে বেরিয়ে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের গাছগুলো পাতাশূন্য হতে শুরু করেছে। শিশিরস্নাত সকাল, রোদমাখা দুপুর, পাখিদের কিচিরমিচির ও মেঘমুক্ত আকাশ আরও রহস্যময় করে তোলে ক্যাম্পাস প্রেমীদের কাছে।

কুয়াশামাখা ভোরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে চৌরঙ্গী মোড় ও লেকপাড়। সূর্যের মিটমিট আলোতে যেন চারপাশ আচ্ছাদিত হয়। কুয়াশা ভেদ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ঝাপসা ছবিগুলো যেন এক কল্পকাহিনীর সৃষ্টি করে।

জাহাঙ্গীরনগরের শীত মানেই গায়ে চাদর জড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে চায়ের আড্ডায় মেতে ওঠা। বাহারি ভর্তা আর গরম ভাত খাওয়ার ধুম। শীত আসলে ক্যাম্পাস যেন নতুন রূপে সাজে। লেকে লেকে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। রঙ-বেরঙের পাখিদের কলতানে মুখর হয়ে ওঠে লেক পাড়গুলো। ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা চত্বরগুলো চায়ের কাপের টুং টাং শব্দে ভরে ওঠে। হাসি-ঠাট্টা আর সংগীতের তালে তালে সৃষ্টি হয় শত শত গল্প ও কবিতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাহরাইন জান্নাত বলেন, ‘শীতের আগমনে প্রকৃতি সেজে ওঠে ভিন্ন এক আমেজে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে শীতের আগমনী বার্তা। এখানে শীতের আগমন ঘটে একটু ভিন্নভাবে। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে অতিথি পাখি। জমে ওঠে পিঠেপুলির আড্ডা। প্রকৃতি সেজে উঠছে এক অপরূপ মহিমায়। সবুজ ঘাসের উপর মুক্তার দানার মতো ছড়িয়ে থাকা শিশির বিন্দু আর চারদিকে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দ জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে।’

বাংলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আরাফাত ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘আসলে গ্রামের শীতের যে আমেজ তার সাথে জাবি ক্যাম্পাসের শীতের আমেজের কোনো পার্থক্য নেই। তবে অতিথি পাখির কলতান শীতের আমেজটাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘ দিন কুয়াশামাখা ভোর দেখতে পেরে বেশ আনন্দিত।’

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।