ঢাকা ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

শসায় বেশি লাভ, বদলেছে দিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
  • ১৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরে শসা চাষে বদলে গেছে প্রান্তিক কৃষকের দিন। উন্নত জাতের শসা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে মুখে। তাই শসা চাষে দিন দিন বাড়ছে আগ্রহ। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় শসা চাষের দিকে ঝুঁকছেন এখানকার অনেক কৃষক। এছাড়া গুণগত মান ভালো হওয়ায় উৎপাদিত শসা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। শসা চাষ করে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা।

জেলার মোট উৎপাদিত শসার সিংহভাগ সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকায় উৎপাদন হয়। পাশাপাশি সদরের লাহারকান্দি, উত্তরজয়পুর, শাকচর, টুমচর, কালীরচর, চররমনি মোহন ও তেওয়ারীগঞ্জ এলাকা শসা চাষের উত্তম স্থান। এছাড়া কমলনগর উপজেলার উত্তর চরলরেঞ্চ, মধ্য মার্টিন, উত্তর মার্টিন, চর কালকিনি, চর ফলকন, চর কাদিরা, চরলরেঞ্চ এলাকায়ও শসার উৎপাদন হচ্ছে বেশ। সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকার মিয়ার বেড়ি, ছটকির সাঁকো, চরভূতা, পিয়ারাপুর, চর মনসা এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ হচ্ছে এসব শসা। ক্ষেত পরিচর্যা, শসা তোলা ও বিক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা।

প্রতিদিন সকাল হলে সদরের ভবানীগঞ্জ কলেজ গেট সংলগ্ন রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে সারি সারি শসার স্তূপের দেখা মেলে। ক্ষেত থেকে শসা সংগ্রহ করে প্রথমে জমানো হয় এখানে। পাইকারের অপেক্ষায় থাকেন চাষিরা। পরবর্তীতে দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার এসে মূল্য নির্ধারণ করে নিয়ে যান নিজেদের পছন্দনীয় শসা।

দর-দাম করছেন পাইকাররা

কৃষকরা জানান, খুচরা বাজারে এখন শসার দাম বেশি। প্রতি কেজি শসা ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তাই চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। প্রতি মণ শসা পাইকারি ১৫০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিরা এসে ক্ষেত থেকে শসা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

তারা আরো জানান, আগে শসার এত ভালো দাম ছিল না। ফলে গত মৌসুমে লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। তবে এবার খরচ উঠিয়ে অধিক লাভ করতে পরবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের কৃষক জালাল আহমেদ বলেন, উন্নত জাতের শসার বীজ বপনের পর ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফলন পেতে শুরু করে। এ জাতের শসা গাছ থেকে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। দেশি জাতের গাছে ফলন অপেক্ষাকৃত কম পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ফলন তোলা যায়।

তিনি বলেন, হাইব্রিড জাতের শসা গাছে ফলন বেশি। কিন্তু মাত্র দু-তিন মাস পর্যন্ত ফলন তোলা যায়। সপ্তাহে দুদিন ক্ষেত থেকে শসা তুলতে হয়। এ সময়টায় ক্ষেতে পানি থাকে।

কৃষক জালাল আরো বলেন, আমি প্রায় ৫ একর জমিতে শসা চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে সাত লাখ টাকার মতো। এ মৌসুমে ১০ লাখ টাকার বেশি শসা বিক্রি করতে পারব বলে আশা রাখি।

বস্তায় শসা নিচ্ছেন চাষিরা স্থানীয় কৃষি অধিদফতরের তথ্যমতে, প্রতি হেক্টরে ১৫০-১৬০ মণ শসা উৎপাদন হয়। এতে এ মৌসুমে শুধু ভবানীগঞ্জ এলাকায় শসার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২শ’ মেট্রিক টনেরও বেশি। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, দুই মৌসুমেই সবজির চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। লক্ষ্মীপুর থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভরে বিভিন্ন জাতের সবজি ঢাকাসহ দেশের বড় বড় সবজি মোকামে পাইকারি দরে বিক্রি হয়। এখানকার মাটি ও জমি শসা চাষে উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই এ উপজেলায় চাষ বাড়ছে। সমন্বিত নিয়মের মাধ্যমে প্রায় সব সময় শসা চাষ সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তাদের জন্য সরকারি বরাদ্দ করা প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

শসায় বেশি লাভ, বদলেছে দিন

আপডেট টাইম : ১২:৩২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরে শসা চাষে বদলে গেছে প্রান্তিক কৃষকের দিন। উন্নত জাতের শসা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে মুখে। তাই শসা চাষে দিন দিন বাড়ছে আগ্রহ। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় শসা চাষের দিকে ঝুঁকছেন এখানকার অনেক কৃষক। এছাড়া গুণগত মান ভালো হওয়ায় উৎপাদিত শসা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। শসা চাষ করে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা।

জেলার মোট উৎপাদিত শসার সিংহভাগ সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকায় উৎপাদন হয়। পাশাপাশি সদরের লাহারকান্দি, উত্তরজয়পুর, শাকচর, টুমচর, কালীরচর, চররমনি মোহন ও তেওয়ারীগঞ্জ এলাকা শসা চাষের উত্তম স্থান। এছাড়া কমলনগর উপজেলার উত্তর চরলরেঞ্চ, মধ্য মার্টিন, উত্তর মার্টিন, চর কালকিনি, চর ফলকন, চর কাদিরা, চরলরেঞ্চ এলাকায়ও শসার উৎপাদন হচ্ছে বেশ। সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকার মিয়ার বেড়ি, ছটকির সাঁকো, চরভূতা, পিয়ারাপুর, চর মনসা এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ হচ্ছে এসব শসা। ক্ষেত পরিচর্যা, শসা তোলা ও বিক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা।

প্রতিদিন সকাল হলে সদরের ভবানীগঞ্জ কলেজ গেট সংলগ্ন রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে সারি সারি শসার স্তূপের দেখা মেলে। ক্ষেত থেকে শসা সংগ্রহ করে প্রথমে জমানো হয় এখানে। পাইকারের অপেক্ষায় থাকেন চাষিরা। পরবর্তীতে দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার এসে মূল্য নির্ধারণ করে নিয়ে যান নিজেদের পছন্দনীয় শসা।

দর-দাম করছেন পাইকাররা

কৃষকরা জানান, খুচরা বাজারে এখন শসার দাম বেশি। প্রতি কেজি শসা ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তাই চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। প্রতি মণ শসা পাইকারি ১৫০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিরা এসে ক্ষেত থেকে শসা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

তারা আরো জানান, আগে শসার এত ভালো দাম ছিল না। ফলে গত মৌসুমে লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। তবে এবার খরচ উঠিয়ে অধিক লাভ করতে পরবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের কৃষক জালাল আহমেদ বলেন, উন্নত জাতের শসার বীজ বপনের পর ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফলন পেতে শুরু করে। এ জাতের শসা গাছ থেকে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। দেশি জাতের গাছে ফলন অপেক্ষাকৃত কম পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ফলন তোলা যায়।

তিনি বলেন, হাইব্রিড জাতের শসা গাছে ফলন বেশি। কিন্তু মাত্র দু-তিন মাস পর্যন্ত ফলন তোলা যায়। সপ্তাহে দুদিন ক্ষেত থেকে শসা তুলতে হয়। এ সময়টায় ক্ষেতে পানি থাকে।

কৃষক জালাল আরো বলেন, আমি প্রায় ৫ একর জমিতে শসা চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে সাত লাখ টাকার মতো। এ মৌসুমে ১০ লাখ টাকার বেশি শসা বিক্রি করতে পারব বলে আশা রাখি।

বস্তায় শসা নিচ্ছেন চাষিরা স্থানীয় কৃষি অধিদফতরের তথ্যমতে, প্রতি হেক্টরে ১৫০-১৬০ মণ শসা উৎপাদন হয়। এতে এ মৌসুমে শুধু ভবানীগঞ্জ এলাকায় শসার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২শ’ মেট্রিক টনেরও বেশি। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, দুই মৌসুমেই সবজির চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। লক্ষ্মীপুর থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভরে বিভিন্ন জাতের সবজি ঢাকাসহ দেশের বড় বড় সবজি মোকামে পাইকারি দরে বিক্রি হয়। এখানকার মাটি ও জমি শসা চাষে উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই এ উপজেলায় চাষ বাড়ছে। সমন্বিত নিয়মের মাধ্যমে প্রায় সব সময় শসা চাষ সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তাদের জন্য সরকারি বরাদ্দ করা প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।