হাওর বার্তা ডেস্কঃ শরীরে নানাবিধ রোগ দেখা দেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীর রক্তের শর্করা সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এছাড়া রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণ না করলে হৃদরোগ, কিডনি রোগ ও দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো জটিলতার ঝুঁকি রয়েছে।
দীর্ঘসময় রক্তে উচ্চ মাত্রার শর্করার উপস্থিতিতে মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি মৃত্যুও ঘটে থাকে। তাই মৃত্যুঝুঁকি কমাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াবেটিস থাকলে ঘনঘন রক্তে শর্করার মাত্রা চেক করা গুরুত্বপূর্ণ। যাদের প্রিডায়াবেটিস রয়েছে তাদেরও রক্তের শর্করাকে স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে রাখার ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে, অন্যথায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস বিকশিত হবে।
তবে প্রাকৃতিক কিছু উপায়ে রক্তের শর্করা কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনাকে সহায়তা করবে কিছু বিশেষ খাবার। চলুন তবে সে খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক যেগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সক্ষম-
হলুদ
হলুদে থাকা কারকিউমিন নামের উপাদান আমাদের জন্য অনেক উপকারী। এর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে— এটি রক্তের শর্করা কমাতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কারকিউমিন গ্রহণকারীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
রসুন
অনেক পরিচিত একটি মশলা হচ্ছে রসুন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে এটি রক্তের শর্করা কমাতে অনেক কার্যকরী। রসুনে থাকা হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস আমাদের রক্তনালিগুলোকে প্রসারিত করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি বহু বছর ধরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আদা
পেটের জন্য অনেক উপকারী এবং হজমে সহায়তার জন্য সুপরিচিত একটি উপাদান আদা। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সমান করার জন্যও একটি দুর্দান্ত বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড সায়েন্সেস অ্যান্ড নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, আদা ডায়াবেটিস প্রতিরোধের একটি কার্যকর চিকিৎসা হতে পারে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং লিপিড প্রোফাইলের কিছু ভগ্নাংশ উন্নত করতে পারে।
দারুচিনি
রক্তে শর্করা প্রাকৃতিক উপায়েই কমাতে পারে দারুচিনি। গবেষণায় দেখা গেছে যে, দারুচিনিতে ১ শতাংশ ফিনোল নামের উপাদান পাওয়া যায়, যেটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে শর্করা কমাতে অনেক ভালো কাজ করে।
লবঙ্গ
লবঙ্গতে এন্থোকায়ানিন ও কোয়ারসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে। আর এ উপাদানগুলো এন্টিসেপটিক ও জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করা থেকে শুরু করে প্রদাহবিরোধী, ব্যথানাশক এবং হজম সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ২০০৬ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব ব্যক্তি ৩০ দিন ধরে প্রতিদিন কিছু মাত্রায় লবঙ্গ পরিপূরক খেয়েছিল তাদের ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কম ছিল।
ব্লুবেরি
বিভিন্ন সুপারশপে এখন দেখা মেলে বিদেশি ফল ব্লুবেরি। এ ফলটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করার জন্য সুপরিচিত। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য যৌগসমূহ আপনার সুস্থতা বাড়ানোর জন্যও অনেক উপকারী হতে পারে।
চেরি
বিদেশি এই ফলটি রক্তের শর্করা কমাতে অনেক কার্যকরী হিসেবে কাজ করে। ২০০৪ সালে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব নারী চেরি থেকে অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান বেশি খেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রদাহ ও ইনসুলিন প্রতিরোধী সৃষ্টি হয়েছিল।