ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিড নিয়েও হারলো বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০১৫
  • ৫৩৬ বার

লক্ষ্য বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতি। এজন্যই সিঙ্গাপুরকে আতিথেয়তা দিয়ে ঢাকায় আনা। কিরগিজস্তান তাজিকিস্তানের ম্যাচের আগে এমন প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ কোচ নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন এটাই স্বাভাবিক। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে চালিয়েছেনও তাই। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হার মেনেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে গোলটি করেন নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। সিঙ্গাপুরের গোল দুটি এসেছে  নওয়াজ ও ইয়াকুবের পা থেকে।
২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলতে আগামী ১১ই জুন কিরগিজস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ওই ম্যাচ। বাছাই পর্ব শুরুর আগে নিজেদের ভুল-ক্রুটিগুলো খুঁজে নিতেই প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করেছিল জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি। সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে প্রীতি এ ম্যাচের আগে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। শুরুতে নিজের কথা রেখেছিলেন তিনি। সফরকারী সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে মাত্র চার মিনিটে তার অসাধারণ ফ্রিকিকে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নাসিরের ওই গোল দেখে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন গ্যালারিতে উপস্থিত ফুটবলপ্রেমীরা। শুরুর দিকে আশা জাগানিয়া পারফরম্যান্সে লোডভিক ডি ক্রুইফের শিষ্যরা বাহবাও কুড়াতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু লিড নিয়েও ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতার কারণে তা আর ধরে রাখতে পারেননি মামুনুল-এমিলিরা। শুরুর মিনিটেই ভুল করেছিলেন ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। তার ভুলে ফ্রিকিক পায় সফরকারীরা। কিন্তু কামালের নেয়া ওই ফ্রিকিক কাজে আসেনি। রায়হান, ইয়াসিনও  বেশ কয়েকটি ভুল করেছেন। এতেই প্রথমার্ধে পাঁচ পাঁচটি ফ্রিকিক আদায় করে নেয় সিঙ্গাপুর। যদিও ভাগ্য সহায় থাকায় গোল খেতে হয়নি স্বাগতিকদের। যে সেটপিস যত ভয় বাংলাদেশের, সেই সেটপিস থেকেই গোল পায় স্বাগতিকরা। ডানপ্রান্ত দিয়ে মামুনুলের নেয়া ফ্রিকিকে নাসির দৌড়ে এসে স্লাইডিং হেডে বল জালে জড়িয়েছিলেন (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে মেতে উঠেন সমর্থকরা। গোল হজম করেই যেনো নিজেদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে  পারেনি সফরকারীরা। একের পর এক আক্রমণ রচনা করে ভিত কাঁপিয়ে দেয় স্বাগতিকদের। তবে গোলের জন্য তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয় ৩১ মিনিট পর্যন্ত। স্বাগতিক ডিফেন্ডারদের ভুলেই ম্যাচে ফিরে আসে সিঙ্গাপুর। শুরুতে হাফিজের ক্রস থেকে হামিদ নওয়াজের হেড গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেলের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে আবারও শট নেন এ ফরোয়ার্ড। ডিফেন্ডার ইয়ামিন মুন্না ও গোলরক্ষক হিমেলের চোখ ফাঁকি দিয়ে বল জালে প্রবেশ করে (১-১)। প্রথমার্ধে নিজেদের গোলের গ্রাফটা আরও উপরে নিয়ে যেতে পারতো সিঙ্গাপুর। ১৩ মিনিটেই সে সুযোগটা ছিল তাদের সামনে। কিন্তু হামিদ নওয়াজের শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেছিলেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন। আর ১৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বিন এসাইনের নেয়া ফ্রিকিক দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ফিস্ট করে সে যাত্রায় দলকে রক্ষা করেছিলেন গোলরক্ষক হিমেল। তবে ম্যাচের ২৬ মিনিটে মামুনুল প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠালেও সহকারী রেফারী কর্নারের কারণে বাতিল করে দেন। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে ম্যাচে নিজেদের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা নষ্ট করেন সোহেল রানা। এনামুলের ফ্রিকিকে গোলরক্ষক আব্দুল্লাহ সানিকে একা পেয়েও গোল আদায়ে ব্যর্থ হন এ মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধে সোহেল রানা, রায়হানের পরিবর্তে জুয়েল রানা ও নাসিরকে মাঠে নামালেই পাল্টে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। জামাল ভূঁইয়া, মামুনুল হেমন্তের কল্যাণে বেশ অ্যাটাকিং মুডে খেলতে শুরু করে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা করে ফেলে সফরকারীদের। ৬৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে এনামুলের ক্রস হেমন্ত শট নিলেও তা রুখে দেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক আব্দুল্লাহ সানি। অন্যদিকে, সফরকারীরা নিজেদে রক্ষণভাগ ঠিক রেখে মাঝে মধ্যেই আক্রমণ রচনা করতে থাকে। আর তাতেই কপাল খুলে ওয়ালটারের শিষ্যদের। দ্বিতীয়ার্ধের ২৭ মিনিটেই গোলের গ্রাফটা একধাপ উপরে নিয়ে স্বাগতিকদের হতাশ করেন শফিক বিন ইয়াকুব। ডানপ্রান্ত দিয়ে হাফিজের কর্ণারকিক গোলরক্ষক হিমেল ফিরিয়ে দিলেও সেই বল গিয়ে পড়ে বক্সের বাইরে দাঁড়ানো শফিক বিন ইয়াকুবের পায়ের সামনে। বল রিসিভ করেই এক মুহূর্ত দেরি না করে দূরপাল্লা এক শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন এ মিডফিল্ডার (২-১)। পিছিয়ে পরেই চারটি পরিবর্তন করান কোচ।  শেষদিকে জুয়েল রানা শাহেদের কল্যাণে সমতায় ফেরার সুযোগও পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বাংলাদেশ : হিমেল  (গোলরক্ষক) নাসির, রায়হান, ইয়াসিন, মুন্না (লিংকন), জামাল ভূঁইয়া (রাজু) , মামুনুল ইসলাম (অধিনায়ক) (শাহেদ), জাহিদ হাসান এমিলি (ওয়াহেদ), হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, সোহেল রানা (জুয়েল রানা), এনামুল হক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

লিড নিয়েও হারলো বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০৬:৫১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০১৫

লক্ষ্য বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতি। এজন্যই সিঙ্গাপুরকে আতিথেয়তা দিয়ে ঢাকায় আনা। কিরগিজস্তান তাজিকিস্তানের ম্যাচের আগে এমন প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ কোচ নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন এটাই স্বাভাবিক। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে চালিয়েছেনও তাই। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হার মেনেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে গোলটি করেন নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। সিঙ্গাপুরের গোল দুটি এসেছে  নওয়াজ ও ইয়াকুবের পা থেকে।
২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলতে আগামী ১১ই জুন কিরগিজস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ওই ম্যাচ। বাছাই পর্ব শুরুর আগে নিজেদের ভুল-ক্রুটিগুলো খুঁজে নিতেই প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করেছিল জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি। সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে প্রীতি এ ম্যাচের আগে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। শুরুতে নিজের কথা রেখেছিলেন তিনি। সফরকারী সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে মাত্র চার মিনিটে তার অসাধারণ ফ্রিকিকে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নাসিরের ওই গোল দেখে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন গ্যালারিতে উপস্থিত ফুটবলপ্রেমীরা। শুরুর দিকে আশা জাগানিয়া পারফরম্যান্সে লোডভিক ডি ক্রুইফের শিষ্যরা বাহবাও কুড়াতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু লিড নিয়েও ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতার কারণে তা আর ধরে রাখতে পারেননি মামুনুল-এমিলিরা। শুরুর মিনিটেই ভুল করেছিলেন ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী। তার ভুলে ফ্রিকিক পায় সফরকারীরা। কিন্তু কামালের নেয়া ওই ফ্রিকিক কাজে আসেনি। রায়হান, ইয়াসিনও  বেশ কয়েকটি ভুল করেছেন। এতেই প্রথমার্ধে পাঁচ পাঁচটি ফ্রিকিক আদায় করে নেয় সিঙ্গাপুর। যদিও ভাগ্য সহায় থাকায় গোল খেতে হয়নি স্বাগতিকদের। যে সেটপিস যত ভয় বাংলাদেশের, সেই সেটপিস থেকেই গোল পায় স্বাগতিকরা। ডানপ্রান্ত দিয়ে মামুনুলের নেয়া ফ্রিকিকে নাসির দৌড়ে এসে স্লাইডিং হেডে বল জালে জড়িয়েছিলেন (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে মেতে উঠেন সমর্থকরা। গোল হজম করেই যেনো নিজেদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে  পারেনি সফরকারীরা। একের পর এক আক্রমণ রচনা করে ভিত কাঁপিয়ে দেয় স্বাগতিকদের। তবে গোলের জন্য তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয় ৩১ মিনিট পর্যন্ত। স্বাগতিক ডিফেন্ডারদের ভুলেই ম্যাচে ফিরে আসে সিঙ্গাপুর। শুরুতে হাফিজের ক্রস থেকে হামিদ নওয়াজের হেড গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেলের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে আবারও শট নেন এ ফরোয়ার্ড। ডিফেন্ডার ইয়ামিন মুন্না ও গোলরক্ষক হিমেলের চোখ ফাঁকি দিয়ে বল জালে প্রবেশ করে (১-১)। প্রথমার্ধে নিজেদের গোলের গ্রাফটা আরও উপরে নিয়ে যেতে পারতো সিঙ্গাপুর। ১৩ মিনিটেই সে সুযোগটা ছিল তাদের সামনে। কিন্তু হামিদ নওয়াজের শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেছিলেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন। আর ১৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বিন এসাইনের নেয়া ফ্রিকিক দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ফিস্ট করে সে যাত্রায় দলকে রক্ষা করেছিলেন গোলরক্ষক হিমেল। তবে ম্যাচের ২৬ মিনিটে মামুনুল প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠালেও সহকারী রেফারী কর্নারের কারণে বাতিল করে দেন। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে ম্যাচে নিজেদের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা নষ্ট করেন সোহেল রানা। এনামুলের ফ্রিকিকে গোলরক্ষক আব্দুল্লাহ সানিকে একা পেয়েও গোল আদায়ে ব্যর্থ হন এ মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধে সোহেল রানা, রায়হানের পরিবর্তে জুয়েল রানা ও নাসিরকে মাঠে নামালেই পাল্টে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। জামাল ভূঁইয়া, মামুনুল হেমন্তের কল্যাণে বেশ অ্যাটাকিং মুডে খেলতে শুরু করে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা করে ফেলে সফরকারীদের। ৬৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে এনামুলের ক্রস হেমন্ত শট নিলেও তা রুখে দেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক আব্দুল্লাহ সানি। অন্যদিকে, সফরকারীরা নিজেদে রক্ষণভাগ ঠিক রেখে মাঝে মধ্যেই আক্রমণ রচনা করতে থাকে। আর তাতেই কপাল খুলে ওয়ালটারের শিষ্যদের। দ্বিতীয়ার্ধের ২৭ মিনিটেই গোলের গ্রাফটা একধাপ উপরে নিয়ে স্বাগতিকদের হতাশ করেন শফিক বিন ইয়াকুব। ডানপ্রান্ত দিয়ে হাফিজের কর্ণারকিক গোলরক্ষক হিমেল ফিরিয়ে দিলেও সেই বল গিয়ে পড়ে বক্সের বাইরে দাঁড়ানো শফিক বিন ইয়াকুবের পায়ের সামনে। বল রিসিভ করেই এক মুহূর্ত দেরি না করে দূরপাল্লা এক শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন এ মিডফিল্ডার (২-১)। পিছিয়ে পরেই চারটি পরিবর্তন করান কোচ।  শেষদিকে জুয়েল রানা শাহেদের কল্যাণে সমতায় ফেরার সুযোগও পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বাংলাদেশ : হিমেল  (গোলরক্ষক) নাসির, রায়হান, ইয়াসিন, মুন্না (লিংকন), জামাল ভূঁইয়া (রাজু) , মামুনুল ইসলাম (অধিনায়ক) (শাহেদ), জাহিদ হাসান এমিলি (ওয়াহেদ), হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, সোহেল রানা (জুয়েল রানা), এনামুল হক।