হাওর বার্তা ডেস্কঃ দি প্রশ্ন করা হয়, বানর কী মানুষের মতো হাসে? মুহূর্তেই উত্তরদাতা চিন্তায় পড়ে যাবেন। সেসঙ্গে এ প্রশ্নের পর যদি এই ছবিটি তাকে দেখানো হয়, তবে খুব সহজেই চিন্তারেখার প্রকাশ ঘটবে তার কপালে।
সময় গড়াতে থাকবে কিন্তু উত্তরদাতার কাছে থেকে সঠিক উত্তরটি আসবে না। কারণ তিনি ছবিটি দেখার পর ততক্ষণে দোটানায় পড়ে গেছেন। কিছুতেই মনঃস্থির করে সঠিক উত্তরটি দিতে পারবেন না।
তবে ধাঁধা বা ধান্দা লাগারই তো কথা! সেই বানরটির মুখ খোলা এবং দাঁত বের করা দৃশ্য যে অবিকল মানুষেরই মতো। ছবি দেখে গুলিয়ে যাওয়ার স্রোতে বিজ্ঞানসম্মত সঠিক উত্তরটি কখনোই প্রকাশিত হতে পারবে না। অবিকল মানুষের মতো হাসি হলেও তা মানুষের হাসি নয়।
সম্প্রতি সিলেট বনবিভাগের সংরক্ষিণ বন সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এ ছবিটি তুলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান।
তিনি বলেন, এটা আসলে বানরের হাসি নয়। তার শারীরিক প্রকাশভঙ্গি। গাছের ডালে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ানার সময় তার মুখের একটি অন্যরকম প্রকাশভঙ্গি এটি। যা আমরা কখনই দেখিনি আগে। আপাতদৃষ্টিতে বানরের হাসি মনে হলেও এটি তা নয়।
বানরটির নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আসলে আসামের বানর (Assamese Macaque)। ‘আসামি বানর’ শব্দবন্ধটি এভাবে লিখলে দেখতে খারাপ লাগে। তাই এর সঠিক নামকরণ হবে অহমী বানর বা আসামের বানর। আমাদের দেশে দেখা পাওয়া সাধারণ আকারের বানরের চেয়ে এরা বড়। এরা আমাদের দেশের সিলেট বিভাগের রেমাকালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং চট্টগ্রামের চিরসবুজ বনের প্রাণী।
ড. মনিরুল আরো বলেন, অহমী বানর বা আসামের বানর আমাদের বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় এবং বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। মৌলভীবাজারের নিউসমনবাগ চা বাগানে এক সময় এ বানরটি ছিলো বলে জানতে পেরেছি।
সম্প্রতি এর ছবি ধারণ করি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এসে। সকালের দিকে ছবিটি তুলেছি। এটি পুরুষ অহমী বানর।
আইইউসিএন, বাংলাদেশের ‘লাল তালিকায়’ প্রাণীটিকে ‘প্রায় বিপদগ্রস্ত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল।