ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন শিক্ষাক্রমও হোঁচট করোনায় প্রি-প্রাইমারি নিয়ে শঙ্কা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১
  • ১৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এ জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। করোনা সংক্রমণের কারণে শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি। পরে সেটা পিছিয়ে নেওয়া হয় ২০২২ সালে। কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসে মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০২৩ সাল থেকে আংশিকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমে বই ও শিক্ষাদান শুরু হবে। তবে ২০২২ সালেও স্কুল-কলেজ খোলা না গেলে এ সিদ্ধান্তেও পরিবর্তন আসতে পারে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২২ সালে মাধ্যমিক স্তরের ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমের কাজ হবে। এরপর ২০২৩ সালে গিয়ে এই দুইটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হবে।

 

এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২০২১ সালে প্রথম, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণি, ২০২২ সালে তৃতীয়, চতৃর্থ, সপ্তম, নবম ও একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৩ সালে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু করোনার কারণে ২০২১ সালে এই কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

জাতীয় শিক্ষাক্রমে সর্বশেষ পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০১২ সালে। এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৭৬ সালে আরো দুই বার শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। আর ২০২১ সাল থেকে পরিবর্তন আনার কথা ছিল জাতীয় শিক্ষাক্রমে। কিন্তু করোনার কারণে বদলে যায় সর্বশেষ কারিকুলাম বাস্তবায়নের শুরুর সময়ও।

এনসিটিবির সদস্য (মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মো. মশিউজ্জামান, ২০২১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আগামী শিক্ষাবর্ষেও এটি কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাই ২০২৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে বদলে যাবে বই, বইয়ের ধরন ও পরীক্ষা পদ্ধতিও। এছাড়া শিখন কৌশলেও নানা পরিবর্তন আসবে। এ সংক্রান্ত রূপরেখায় বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে মূল্যায়ন হবে। এদের কোনো বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শ্রেণিকক্ষে ৭০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষা হবে ৩০ শতাংশ নম্বরের। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে শ্রেণিকক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে। আর একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণিকক্ষে ৩০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে।

প্রি-প্রাইমারি নিয়ে শঙ্কা

বর্তমানে চালু করা দুই বছর মেয়াদি প্রি-প্রাইমারি শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ২০১১ সালে প্রণিত জাতীয় শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে ২০১৪ সালে ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য সারা দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। কিন্তু সরকার চলতি বছর থেকে এ স্তর ৪+ বছর থেকে চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী চলতি বছর থেকে নির্বাচিত ২ হাজার ৬৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি ৪+ বছর বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত ছিল। আর এরই ধারাবাহিতকায় ২০২২ সালে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু করোনার কারণে প্রি-প্রাইমারি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

আজিজুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, তার সন্তানের বয়স চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো স্কুলে ভর্তি করতে পারিনি। যদি করোনার প্রাদুর্ভাব না কমে তাহলে আগামী শিক্ষাবর্ষেও স্কুলে পাঠানো সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ থেকে সে বঞ্চিত হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নতুন শিক্ষাক্রমও হোঁচট করোনায় প্রি-প্রাইমারি নিয়ে শঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৯:১৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এ জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। করোনা সংক্রমণের কারণে শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি। পরে সেটা পিছিয়ে নেওয়া হয় ২০২২ সালে। কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসে মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০২৩ সাল থেকে আংশিকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমে বই ও শিক্ষাদান শুরু হবে। তবে ২০২২ সালেও স্কুল-কলেজ খোলা না গেলে এ সিদ্ধান্তেও পরিবর্তন আসতে পারে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২২ সালে মাধ্যমিক স্তরের ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমের কাজ হবে। এরপর ২০২৩ সালে গিয়ে এই দুইটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হবে।

 

এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২০২১ সালে প্রথম, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণি, ২০২২ সালে তৃতীয়, চতৃর্থ, সপ্তম, নবম ও একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৩ সালে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু করোনার কারণে ২০২১ সালে এই কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

জাতীয় শিক্ষাক্রমে সর্বশেষ পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০১২ সালে। এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৭৬ সালে আরো দুই বার শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। আর ২০২১ সাল থেকে পরিবর্তন আনার কথা ছিল জাতীয় শিক্ষাক্রমে। কিন্তু করোনার কারণে বদলে যায় সর্বশেষ কারিকুলাম বাস্তবায়নের শুরুর সময়ও।

এনসিটিবির সদস্য (মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মো. মশিউজ্জামান, ২০২১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আগামী শিক্ষাবর্ষেও এটি কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাই ২০২৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে বদলে যাবে বই, বইয়ের ধরন ও পরীক্ষা পদ্ধতিও। এছাড়া শিখন কৌশলেও নানা পরিবর্তন আসবে। এ সংক্রান্ত রূপরেখায় বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে মূল্যায়ন হবে। এদের কোনো বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শ্রেণিকক্ষে ৭০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষা হবে ৩০ শতাংশ নম্বরের। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে শ্রেণিকক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে। আর একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণিকক্ষে ৩০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ নম্বরের মূল্যায়ন হবে।

প্রি-প্রাইমারি নিয়ে শঙ্কা

বর্তমানে চালু করা দুই বছর মেয়াদি প্রি-প্রাইমারি শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ২০১১ সালে প্রণিত জাতীয় শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে ২০১৪ সালে ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য সারা দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। কিন্তু সরকার চলতি বছর থেকে এ স্তর ৪+ বছর থেকে চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী চলতি বছর থেকে নির্বাচিত ২ হাজার ৬৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি ৪+ বছর বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত ছিল। আর এরই ধারাবাহিতকায় ২০২২ সালে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু করোনার কারণে প্রি-প্রাইমারি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

আজিজুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, তার সন্তানের বয়স চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো স্কুলে ভর্তি করতে পারিনি। যদি করোনার প্রাদুর্ভাব না কমে তাহলে আগামী শিক্ষাবর্ষেও স্কুলে পাঠানো সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ থেকে সে বঞ্চিত হবে।