ঢাকা ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি বাঙালির স্বপ্ন পূরণের রাত আজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০১৬
  • ২৭২ বার

আজ ভালোবাসার রাত, ভালোলাগার রাত। আজকের রাত ক্রিকেটের জন্য ভালোবাসা। তাই আজকের রাত হতে পারে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসবের। আজ রোববার রাতে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে মাশরাফিবাহিনী। এ ম্যাচ জিততে পারলে তা হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন। আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে বড় বিনোদনই এই ক্রিকেট। আর যদি এশিয়ার সেরা হওয়া যায়, তাহলে তো কথা-ই নেই। স্বপ্ন যেন সত্যি হয়ে যাবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি বাঙালির।

আজ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিমরা নামছেন মিরপুরের সবুজ ঘাসের উইকেটে। তাদের সঙ্গী ১৬ কোটি ক্রিকেট পাগল বাঙালির অফুরন্ত ভালোবাসা, অকুণ্ঠ সমর্থন ও ৩২ কোটি হাতের প্রাণ নিংড়ানো প্রার্থনা। মাশরাফিদের ঘিরে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত স্বপ্ন দেখছে ভারতকে হারিয়ে এশিয়ার সেরা হওয়ার। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার।

গত ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার পর থেকেই সবার মধ্যে এই ছিল স্বপ্ন, একই বাসনা। প্রার্থনাও সেই

একই-মাশরাফিবাহিনী ফাইনাল যেন জিতে যায়। আর তাই সেই কাক্সিক্ষত ইতিহাস গড়ার রাতের জন্য প্রস্তুত গোটা দেশ, জাতি। লাল-সবুজের পতাকার বাংলাদেশ। যার শুরুটা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি…।

সব বাধা পেরিয়ে পুরো দেশকে সোনালি রঙে মুড়িয়ে দিতে প্রস্তুত কোটি ভক্তের মাশরাফি-সাকিবরা। তাই আজ এক টুকরো মিরপুর স্টেডিয়াম যেন এখন গোটা বাংলাদেশ। ম্যাচের শেষটা হবে শিরোপা দ্বৈরথ। এই দ্বৈরথকে ঘিরে ইতিমধ্যে লঙ্কাকান্ড ঘটে গেছে। ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি রয়েছে ঘরের বাইরে। টেলিভিশনে, জায়ান্ট স্ক্রিনে চোখ থাকবে ছাপান্নো হাজার বর্গ মাইলের এই দেশের সর্বত্র। পারলে স্টেডিয়ামে বসেই খেলা দেখার জন্য ইচ্ছে ষোল কোটি বাংলাদেশি। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়। তারপরও অনেকেই এই বাস্তবতা মানতে নারাজ। তারা যে কোনোভাবেই হোক মাঠে বসেই খেলা দেখবেন। আর তাই একটি টিকিটের জন্য রক্তপাতের ঘটনাও ঘটে গেছে।

তার আগে বঙ্গোপসাগরের পাড়ঘেঁষা দেশটিতে যে উন্মাদনা ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে, বিস্মিত প্রতিপক্ষ ভারতও। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। ফাইনালের সাক্ষী হয়ে থাকতে পুরো দেশ যেন ভেঙে পড়তে চাইছে। উপস্থিত থাকতে চাইছে ২৫ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে। সাক্ষী হওয়ার তাড়নায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন একটি টিকিট পেতে।

আগামীকালই ঘোষণা দিয়েছিলেন ফাইনাল খেলার আগের দিন বিকেল থেকে ওয়ারলেস এলাকায় মিছিল বের করা হবে। একইসঙ্গে আয়োজন থাকবে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানোর। এমন উৎসবের প্রস্তুতি সারাদেশেই। ক্রিকেটেই এখন বাংলাদেশের প্রাণ। ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জয়, ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর গোটা দেশ এক কাতারে দাঁড়িয়ে বিজয়োৎসবে মেতে ছিল। এরপরও যে কয়বার এদেশের মানুষ দলমত ভুলে এক হয়ে আনন্দ করেছে তা এই ক্রিকেটের কল্যাণেই। তাই সহজে অনুমেয়, যদি এশিয়া কাপ ক্রিকেটের শিরোপা মাশরাফিবাহিনী জিততে সক্ষম হয় তবে বাংলাদেশে আরেকবার কি হতে চলেছে! টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার আকাশ আতশবাজি আর রং ছটায় রঙিন হয়ে উঠবে। নেচে-গেয়ে উঠবে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের রাতের বিজয়োল্লাসের অপেক্ষা-ই শুধু এখন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি বাঙালির স্বপ্ন পূরণের রাত আজ

আপডেট টাইম : ০৯:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০১৬

আজ ভালোবাসার রাত, ভালোলাগার রাত। আজকের রাত ক্রিকেটের জন্য ভালোবাসা। তাই আজকের রাত হতে পারে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসবের। আজ রোববার রাতে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে মাশরাফিবাহিনী। এ ম্যাচ জিততে পারলে তা হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন। আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে বড় বিনোদনই এই ক্রিকেট। আর যদি এশিয়ার সেরা হওয়া যায়, তাহলে তো কথা-ই নেই। স্বপ্ন যেন সত্যি হয়ে যাবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি বাঙালির।

আজ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিমরা নামছেন মিরপুরের সবুজ ঘাসের উইকেটে। তাদের সঙ্গী ১৬ কোটি ক্রিকেট পাগল বাঙালির অফুরন্ত ভালোবাসা, অকুণ্ঠ সমর্থন ও ৩২ কোটি হাতের প্রাণ নিংড়ানো প্রার্থনা। মাশরাফিদের ঘিরে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত স্বপ্ন দেখছে ভারতকে হারিয়ে এশিয়ার সেরা হওয়ার। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার।

গত ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার পর থেকেই সবার মধ্যে এই ছিল স্বপ্ন, একই বাসনা। প্রার্থনাও সেই

একই-মাশরাফিবাহিনী ফাইনাল যেন জিতে যায়। আর তাই সেই কাক্সিক্ষত ইতিহাস গড়ার রাতের জন্য প্রস্তুত গোটা দেশ, জাতি। লাল-সবুজের পতাকার বাংলাদেশ। যার শুরুটা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি…।

সব বাধা পেরিয়ে পুরো দেশকে সোনালি রঙে মুড়িয়ে দিতে প্রস্তুত কোটি ভক্তের মাশরাফি-সাকিবরা। তাই আজ এক টুকরো মিরপুর স্টেডিয়াম যেন এখন গোটা বাংলাদেশ। ম্যাচের শেষটা হবে শিরোপা দ্বৈরথ। এই দ্বৈরথকে ঘিরে ইতিমধ্যে লঙ্কাকান্ড ঘটে গেছে। ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি রয়েছে ঘরের বাইরে। টেলিভিশনে, জায়ান্ট স্ক্রিনে চোখ থাকবে ছাপান্নো হাজার বর্গ মাইলের এই দেশের সর্বত্র। পারলে স্টেডিয়ামে বসেই খেলা দেখার জন্য ইচ্ছে ষোল কোটি বাংলাদেশি। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়। তারপরও অনেকেই এই বাস্তবতা মানতে নারাজ। তারা যে কোনোভাবেই হোক মাঠে বসেই খেলা দেখবেন। আর তাই একটি টিকিটের জন্য রক্তপাতের ঘটনাও ঘটে গেছে।

তার আগে বঙ্গোপসাগরের পাড়ঘেঁষা দেশটিতে যে উন্মাদনা ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে, বিস্মিত প্রতিপক্ষ ভারতও। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। ফাইনালের সাক্ষী হয়ে থাকতে পুরো দেশ যেন ভেঙে পড়তে চাইছে। উপস্থিত থাকতে চাইছে ২৫ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে। সাক্ষী হওয়ার তাড়নায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন একটি টিকিট পেতে।

আগামীকালই ঘোষণা দিয়েছিলেন ফাইনাল খেলার আগের দিন বিকেল থেকে ওয়ারলেস এলাকায় মিছিল বের করা হবে। একইসঙ্গে আয়োজন থাকবে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানোর। এমন উৎসবের প্রস্তুতি সারাদেশেই। ক্রিকেটেই এখন বাংলাদেশের প্রাণ। ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফি জয়, ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর গোটা দেশ এক কাতারে দাঁড়িয়ে বিজয়োৎসবে মেতে ছিল। এরপরও যে কয়বার এদেশের মানুষ দলমত ভুলে এক হয়ে আনন্দ করেছে তা এই ক্রিকেটের কল্যাণেই। তাই সহজে অনুমেয়, যদি এশিয়া কাপ ক্রিকেটের শিরোপা মাশরাফিবাহিনী জিততে সক্ষম হয় তবে বাংলাদেশে আরেকবার কি হতে চলেছে! টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার আকাশ আতশবাজি আর রং ছটায় রঙিন হয়ে উঠবে। নেচে-গেয়ে উঠবে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের রাতের বিজয়োল্লাসের অপেক্ষা-ই শুধু এখন।