হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খান জাহান আলী রহঃ এর মাজার সংলগ্ন দিঘীর অসুস্থ কুমির মাদ্রাজের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
বুধবার (৭ জুলাই) দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা ও করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের সদস্যদের সহায়তায় কুমিরটিকে উপরে উঠানো হয়। পরে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান এবং করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবীর কুমিরটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন। কুমিরটিকে সুস্থ করতে তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। পর্যবেক্ষণের জন্য কুমিরটিকে আগামী দশ দিন দিঘী সংলগ্ন একটি বাড়িতে রাখা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা জামাল ফকির বলেন, ‘কুমিরটি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। ডিসি স্যারের নির্দেশনায় আমরা কয়েকজন মিলে খুব সতর্কভাবে কুমিরটিকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে উপরে উঠিয়েছি। এসময় করমজলের কুমির বিশেষজ্ঞ আজাদ ভাই আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’
সুন্দরবন বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবীর বলেন, ‘কুমিরটিকে উপরে উঠানোর পরে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি। কুমিরটির চোয়ালের মাঝে যে ক্ষত ছিলো সেটি এখন নেই। তবে শুনেছি কুমিরটি একটি চোখে মোটেও দেখতে পাচ্ছে না। এবং একটি চোখে ঝাপসা দেখছে। তাই জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শক্রমে দশ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কুমিরটি দেখে আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটির বয়স অন্তত ৪০ থেকে ৫০ বছর। যার ফলে এটির ওজন অনেক বেড়ে গেছে। যা ৮০০ থেকে ৯০০ কেজির মত হবে। অপ্রয়োজনীয় চর্বি কমানোর জন্য কুমিরটিকে পরিমিত খাবার দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ‘কুমিরটিকে উপরে উঠানোর পরে আমরা তাৎক্ষণিক কিছু ওষুধ প্রয়োগ করেছি। কুমিরটি এখন মোটামুটি সুস্থ রয়েছে। তবে কুমিরটির চোখ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো।’
খানজাহান আলী রহঃ এর মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে কুমিরটি অসুস্থ ছিলো। আমরা জেলা প্রশাসক, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। আজকে কুমিরটির চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আশা করি কুমিরটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, প্রায় ৬শ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী খান জাহান আলী রহঃ এর দিঘীর শতবর্ষী কুমির কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় এর মৃত্যুর পর ২০০৬ সালে মাদ্রাজ থেকে মিঠাপানির দুটি কুমির এই দিঘীতে অবমুক্ত করা হয়।