হাওর বার্তা ডেস্কঃ শক্তিশালী গ্রীক দেবতা টাইটানের নামে রাখা হয়েছিল ব্রিটিশ প্রমোদতরী টাইটানিকের নাম। ৭৫ লাখ ডলারের বিনিময়ে পাঁচ বছর ধরে বানানো হয়েছিল ২৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই জাহাজ। উত্তর আটলান্টিকে ভাসা হিমশৈলে ধাক্কা খেয়ে ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল ভোর রাতে ডুবে গিয়েছিল ‘আরএমএস টাইটানিক’।
টাইটানিক সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট পর, দুর্ঘটনাস্থলে এসেছিল ‘কারপাথিয়া’ নামে একটি জাহাজ। হিমশীতল সমুদ্রের বুকে লাইফবোটে ভেসে বেড়ানো ৭০৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছিল জাহাজটি।
অভিশপ্ত সেই রাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৫০০ জন যাত্রী। চলুন দেখে আসা যাক রোমাঞ্চকর টাইটানিকের যাত্রাপথের বিরল কিছু ছবি।
১৯১২ সাল। এপ্রিল মাস সবে শুরু হয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট ডকে দাঁড়িয়ে আছে টাইটানিক। প্রস্তুত হচ্ছে তার প্রথম ও শেষ সমুদ্র যাত্রার জন্য।
এপ্রিল মাসের ২ তারিখ। বেলফাস্ট ছেড়ে টাইটানিক চলেছে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দরের দিকে। যেখান থেকে যাত্রীরা জাহাজে উঠবেন।
ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে টাইটানিক। জাহাজে আছেন ২২০৫ জন যাত্রী।
বন্দরে উপস্থিত ছিলেন প্রচুর মানুষ। কেউ এসেছিলেন চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী টাইটানিককে দেখার জন্য। কেউ এসেছিলেন জাহাজে থাকা প্রিয়জনদের বিদায় জানাতে।
১০ এপ্রিল ১৯১২। সাউদাম্পটন বন্দর ছেড়ে চিরতরে চলে যাচ্ছে টাইটানিক।
যাত্রা শুরুর পরে তোলা ছবি। টাইটানিকের প্রথম শ্রেণীর ড্রইংরুম। প্রথম শ্রেণীর একক যাত্রীদের বার্থের জন্য দিতে হয়েছিল ৩০ পাউন্ড যা বর্তমান মূল্যে দুই লাখ টাকার কাছাকাছি।
যাত্রা শুরুর পরে তোলা প্রথম শ্রেণীর লাউঞ্জের ছবি। প্রথম শ্রেণীর কেবিনের যাত্রীদের দিতে হয়েছিল ৮৭০ পাউন্ড যা আজকের মূল্যে প্রায় পঁচাশি লাখ টাকার সমান।
দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের ডাইনিং রুম। দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা দিয়েছিলেন ১৩ পাউন্ড। যা আজকের হিসাবে প্রায় এক লাখ টাকার সমান।
তৃতীয় শ্রেণীর ডাইনিং রুমে প্রথম দিনের লাঞ্চ। তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা দিয়েছিলেন সাত পাউন্ড। যা আজকের মূল্যে প্রায় আটষট্টি হাজার টাকার সমান।
১০-১৪ এপ্রিলের মধ্যে কোনো একদিনের ছবি। জাহাজের ডেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা।
বরফ জমা আটলান্টিকের সেই অভিশপ্ত স্থান। এখানেই ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। ডুবে যাওয়ার আগের দিন ( ১৪ এপ্রিল) তোলা ছবি। দূরে দেখা যাচ্ছে দুটি হিমশৈল।
অনুমান করা হয় এই সেই ঘাতক হিমশৈল। যার সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পরের দিন সকালে তোলা ছবি। ছবিটি উদ্ধারকারী জাহাজ কারপাথিয়া থেকে তোলা।
১৫ এপ্রিল সকাল। লাইফবোটে চড়ে টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা এগিয়ে আসছেন উদ্ধারকারী জাহাজের দিকে।
কারপাথিয়া জাহাজে অভিশপ্ত যাত্রা থেকে বেঁচে ফেরা যাত্রীরা। দেওয়া হয়েছে নতুন পোশাক। গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কম্বল।
বাবার সঙ্গে জাহাজে ছিল দুই ফরাসি ভাই মাইকেল ও এডমন্ড। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার কিছু আগে তাদের বাবা লাইফবোটে দুই ভাইকে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজে উঠতে পারেননি। প্রাণ হারিয়েছিলেন সেই অভিশপ্ত রাতে। জাহাজে এদের মা ছিলেন না। তিনি ছিলেন ফ্রান্সে। পরে কাগজে ছবি দেখে তিনি চিনতে পারেন তার দুই ছেলেকে। ফ্রান্সে নিয়ে যান কয়েকমাস পরে।
টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পরের দিনের ছবি। টাইটানিকের মালিক হোয়াইট স্টার লাইন কোম্পানির লন্ডনের অফিসের সামনে খবরের কাগজ বিক্রি করছে এক কিশোর। কাগজের হেডলাইনে টাইটানিক ট্রাজেডি।