হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলা থেকে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলছে দীর্ঘদিনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে।
দেশে করোনা সংক্রমণের কারণে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। গত বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এই কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। গত আগস্টে করোনার বিস্তার কিছুটা কমে এলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করলেও এগোতে পারেনি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে স্থবির হয়ে পড়ে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবের দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের কারণে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করছে আওয়ামী লীগ। এজন্য অনলাইন প্লাটফর্মকেও কাজে লাগাচ্ছে দলটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দেড় বছরে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ২১টি উপজেলা ও তিনটি জেলায় সম্মেলন করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৯ সালে ডিসেম্বরে দলের ২১তম সম্মেলনকালে শুধু জয়পুরহাট, রাজশাহী মহানগর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সম্মেলন হয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগের ৪৩টি জেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। বেশিরভাগ উপজেলা, থানা ও পৌরসভার কমিটি নেই। ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের কমিটি হয় না বছরের পর বছর।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও তার অধীন ৫টি উপজেলা (সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, পটিয়া, আনোয়ারা ও কর্ণফুলী) আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে অক্টোবর মাসের মধ্যে ওই ৫টি উপজেলাধীন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এবং আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ওই ৫টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ধীরে ধীরে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন করার চিন্তা করছে দলটি। এক্ষেত্রে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এগোতে চান আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সংগঠন গোছাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। করোনা আমাদের অনেক পিছিয়ে দিয়েছে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি, করণীয় ঠিক করছি।’
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংগঠনে সারাদেশের সব জেলা, মহানগর শাখার অধীন উপজেলা, থানা বা পৌর শাখা আওয়ামী লীগের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংগঠনিক টিম গঠন করতে হবে। উক্ত সাংগঠনিক টিম সংশ্লিষ্ট জেলা, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা, থানা, পৌর শাখার বিদ্যমান সাংগঠনিক সমস্যাসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
একইভাবে সব উপজেলা, থানা, পৌর শাখার অধীন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ইউনিট আওয়ামী লীগের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে উপজেলা, থানা, পৌর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংগঠনিক টিম করতে হবে। উক্ত সাংগঠনিক টিম সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বিদ্যমান সাংগঠনিক সমস্যাসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
অভ্যন্তরীণ বিভেদে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়ানো নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার শৃঙ্খলাজনিত নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘কোথাও কোনো সমস্যা হলে বিভাগীয় পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বসে সমাধান করবে। দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন অপকর্মে জড়িত হলে অথবা আইন নিজের হাতে তুলে নিলে সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আদর্শ, স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্য দেওয়া থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।