হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় বিলভাতিয়ায় ৯ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন আব্দুর রহিম। কিন্তু উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে গেছে। ফলে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না এ কৃষক।
তার জমিতে ফাটল ধরেছে। শেষ ভরসা হিসেবে ১০-১২ ফুট গভীর গর্ত করে সেখানে শ্যালো মেশিন বসিয়েছেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
নিজস্ব শ্যালো মেশিনে ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে সেচ দিয়ে গত বছর থেকে আবাদ করছেন তিনি। এ বছর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এখন দুচোখে অন্ধকার দেখছেন।
উপজেলার কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, কেবল আব্দুর রহিমই নন, সেচ সংকটে পড়েছেন এখানের হাজারো কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে উপজেলার অন্তত ৩ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান।
কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, গত বছরও পানির সংকট দেখা দেয়। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ধান বাঁচাতে পেরেছিলাম। এ বছর এখন পর্যন্ত বৃষ্টি নেই। উপায় না পেয়ে ড্রামে পানি ভরে ধানে স্প্রে করছি।
তিনি বলেন, এসব এলাকায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে যেসব জমিতে সেচ দেওয়া হয় ,এ বছর যেসব জমির ধান মরে গেছে। প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় বেরো ধানচাষি তৈয়নুর বলেন, মাঠের সব শ্যালো মেশিন বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ মরা ধান কেটে কেটে গরু-মহিষকে খাওয়ানোর জন্য বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।
কৃষক মইনুর বলেন, ৩০ বিঘা জমিতে বেরো ধান চাষ করেছিলাম। ভূগর্ভস্থ পানি না ওঠায় সেচ দিতে পারিনি। ফলে সব ধান গাছ মরে গেছে। এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে শ্রমিক, সার-বিষ, হালচাষসহ খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এ উপজেলায় বোরো আবাদ করা কৃষকরা এবার প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন।
মইনুরের দাবি, শ্যালো মেশিনে ভূগর্ভস্থ পানির সমস্যা হলেও বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে সেমিডিপ স্থাপন করলে এসব জমিতে পানি সঙ্কট থাকবে না। বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যাপক ব্যয়বহুল হওয়ায় কৃষকরা সেমিডিপ স্থাপন করতে পারছেন না। সরকারি উদ্যোগে সেমিডিপ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।