ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কচুর লতিতে ভাগ্য বদল পাঁচবিবির কৃষকদের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১
  • ২৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে লতিরাজ কচু। কচুর লতি দেশের সীমানা পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ চাষ বাড়ছে। পাঁচবিবির কচুর লতি কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে এ অর্থকরী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। আর অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন উপজেলার কৃষকরা।
জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে হাল চাষ, শ্রম, সেচ, গোবর, ডিএপি, পটাশ, জিপসাম, ইউরিয়া বাবদ ১৮-২২ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩-৪ হাজার কেজি কচুর লতি পেয়ে থাকে কৃষকরা।

লতির পাশাপাশি কাণ্ডও উৎপাদন হয়, এতে কৃষকদের ভাগ্য অনেকটাই বদলাতে শুরু করেছে।
সরজমিন দেখা গেছে বাগজানা, ধরঞ্জি, স্লুইস গেট, শিমুলতলী, দরগাপাড়া, আয়মারসুলপুর, বালিঘাটা, কড়িয়া, বেলপুকুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা

গেছে, ৩০ বছর আগে সখের বসে উপজেলার পাটাবুকা গ্রামের ভূমিহীন এক কৃষক লুৎফর রহমান, আমির আলি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবুর রহমান (হবু) ও সানোয়ার পরীক্ষামূলকভাবে লতিরাজ কচু চাষ শুরু করেন। অল্প সময়ে এতে প্রথম উৎপাদন ও লাভ হওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অন্য কৃষকদের মাঝে। এ কচুর লতি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অল্প খরচে অধিক লাভ  হওয়ায় পাঁচবিবি উপজেলার দেখাদেখি এ কচুর লতি এখন জয়পুরহাট সদর, দিনাজপুর, বিরামপুর, নওগাঁর বদলগাছীসহ দূর-দূরান্তে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলার  আয়মা রসুলপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের সফল লতি চাষি আবেদ আলী জানান, এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এর পুরো মৌসুম হলেও সারা বছর এর ফলন পাওয়া যায়।
লতির পাইকরী ক্রেতা  মুমিন ও রনি বলেন, বটতলীতে এ লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন তারা। বর্তমানে কৃষকদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি  লতি ২৫-৪০ টাকা দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তবে রমজান মাস ও করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করায় পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে চাষি ও পাইকাররা রীতিমত বিপাকে পড়েছে। উৎপাদিত কচুর লতির প্রধান পাইকারী বাজার ঢাকার কারওয়ান বাজার। কচুর লতি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও চলে যাচ্ছে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, বাইপাইল, টাঙ্গাইল, দৌলতপুর, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কচুর লতিতে ভাগ্য বদল পাঁচবিবির কৃষকদের

আপডেট টাইম : ০৪:২৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে লতিরাজ কচু। কচুর লতি দেশের সীমানা পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ চাষ বাড়ছে। পাঁচবিবির কচুর লতি কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে এ অর্থকরী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। আর অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন উপজেলার কৃষকরা।
জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে হাল চাষ, শ্রম, সেচ, গোবর, ডিএপি, পটাশ, জিপসাম, ইউরিয়া বাবদ ১৮-২২ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩-৪ হাজার কেজি কচুর লতি পেয়ে থাকে কৃষকরা।

লতির পাশাপাশি কাণ্ডও উৎপাদন হয়, এতে কৃষকদের ভাগ্য অনেকটাই বদলাতে শুরু করেছে।
সরজমিন দেখা গেছে বাগজানা, ধরঞ্জি, স্লুইস গেট, শিমুলতলী, দরগাপাড়া, আয়মারসুলপুর, বালিঘাটা, কড়িয়া, বেলপুকুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা

গেছে, ৩০ বছর আগে সখের বসে উপজেলার পাটাবুকা গ্রামের ভূমিহীন এক কৃষক লুৎফর রহমান, আমির আলি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবুর রহমান (হবু) ও সানোয়ার পরীক্ষামূলকভাবে লতিরাজ কচু চাষ শুরু করেন। অল্প সময়ে এতে প্রথম উৎপাদন ও লাভ হওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অন্য কৃষকদের মাঝে। এ কচুর লতি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অল্প খরচে অধিক লাভ  হওয়ায় পাঁচবিবি উপজেলার দেখাদেখি এ কচুর লতি এখন জয়পুরহাট সদর, দিনাজপুর, বিরামপুর, নওগাঁর বদলগাছীসহ দূর-দূরান্তে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলার  আয়মা রসুলপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের সফল লতি চাষি আবেদ আলী জানান, এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এর পুরো মৌসুম হলেও সারা বছর এর ফলন পাওয়া যায়।
লতির পাইকরী ক্রেতা  মুমিন ও রনি বলেন, বটতলীতে এ লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন তারা। বর্তমানে কৃষকদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি  লতি ২৫-৪০ টাকা দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তবে রমজান মাস ও করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করায় পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে চাষি ও পাইকাররা রীতিমত বিপাকে পড়েছে। উৎপাদিত কচুর লতির প্রধান পাইকারী বাজার ঢাকার কারওয়ান বাজার। কচুর লতি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও চলে যাচ্ছে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, বাইপাইল, টাঙ্গাইল, দৌলতপুর, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।