হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের দেশে একেক মৌসুমে একেক রকম সবজি পাওয়া যায়। তেমনি শীতকালীন অন্যান্য সবজিগুলোর মধ্যে ফুলকপি একটি। সাদা ছাড়াও বাজারে এখন বেগুনি, সবুজ কিংবা কমলা রঙের ফুলকপি দেখতে পাওয়া যায়। জানেন কি, সুন্দর এই সবজিটি যে শুধু খেতেই সুস্বাদু তা কিন্তু নয়, এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও।
ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
গবেষকদের মতে ফুলকপি খেলে মূত্রথলির ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমে যায়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের রসওয়েল পার্ক ক্যান্সার ইনস্টিটিউট সপ্তাহে অন্তত তিনবার ফুলকপি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক সপ্তাহে তিনবার ফুলকপি খাওয়ার আরো কিছু বিশেষ কারণ-
ক্যান্সার প্রতিরোধক
ক্যান্সার প্রতিরোধে ফুলকপির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এটি ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে। এছাড়া পাকস্থলী, প্রোষ্টেট, স্তন ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে ফুলকপি।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
ফুলকপিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফুলকপি খাওয়া প্রয়োজন। তবে ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, প্রোটিন ও পটাসিয়াম থাকায় এটি কিডনি রোগীদের জন্য উপযোগী নয়। সুতারং যারা কিডনির জটিলতায় ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফুলকপি খাবেন।
ফুসফুসকে রক্ষা করে
ফুলকপি ফুসফুস রক্ষায় সহায়তা করে। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, ভয়াবহ ফুসফুস রোগের জন্য যেসব কারণ দায়ী তা প্রতিরোধে ফুলকপি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালীর যে ক্ষতি হয় সবজিটি তা প্রতিরোধেও সহায়তা করে। এছাড়া ফুলকপি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
ভিটামিন ও খনিজের ভালো উৎস
নিয়মিত ফুলকপি খেলে শরীরের পুষ্টির অভাব পূরণ হয়। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন কে, প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার ভিটামিন বি৬, ফলেট, পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজেরও ভালো উৎস ফুলকপি।
মস্তিষ্ক ভালো রাখে
ফুলকপিতে ভিটামিন বি রয়েছে যা মস্তিষ্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। গর্ভাবস্থায় এ সবজি একটি ভালো খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। নবজাতকের মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করতে কাজ করে সবজিটি।
হজমে সাহায্য করে
ফাইবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হওয়ায় ফুলকপি হজমে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, সবজিটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সুস্থ থাকতেও ভূমিকা রাখে।
চোখ ভালো রাখে
ফুলকপিতে ভিটামিন এ-এর পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে এটি আমাদের চোখকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এমনকি দেহের কোথাও কেটে গেলে ফুলকপির কচি পাতার রস লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
চুলকানি প্রতিরোধক
শীতকালে ঠাণ্ডায় ত্বক লালচে হয়ে ফুলে যায় এবং চুলকানিও হয়। সেক্ষেত্রে ফুলকপির কচি পাতা বেটে লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
এছাড়া ফুলকপিতে ভিটামিনি এ ও সি রয়েছে যা শীতকালে জ্বর, সর্দি, কাশি প্রতিরোধ করে। এর আয়রন, পটাশিয়াম, সালফার ও ক্যালসিয়ামও শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
কিছু সতর্কতা
>> যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তারা ফুলকপি খেতে একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন। অনেকের ফুলকপি খেলে গ্যাস দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে পরিমিতভাবে ঝোল করে ফুলকপি খেতে পারেন।
>> মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের কারণে ইদানিং সব সবজিতেই ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি থাকে বেশি। তাই ফুলকপি সংগ্রহের আগেই যতটা সম্ভব নিশ্চিত হয়ে নিন, এটা নিরাপদ কিনা?