ঢাকা ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ নভেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ১০ বার

উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে যাচ্ছেন মেডিক্যাল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক হলেন- ডাক্তার জাহিদ, ডাক্তার শাহাবুদ্দিন, ডাক্তার আরেফিন, ডাক্তার নূর উদ্দিন, ডাক্তার এফ এম সিদ্দিক, ডাক্তার জাফর, ডাক্তার মামুন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।

জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডনে যাবেন ছেলে তারেক রহমানের কাছে। বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে লন্ডন থেকে তৃতীয় একটি দেশে নিয়ে তাকে কোনো একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টারে’ ভর্তি করা হবে।

দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে অনেক দিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। তার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, বিমানে যাত্রা করার মতো পরিস্থিতি হলেই তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অথবা যুক্তরাজ্যে নেওয়া হতে পারে বলে আগেই জানা গিয়েছিল।

সবশেষ ৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। অধ্যাপক ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হলে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। সেই থেকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হবে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে দ্রুত তাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি, সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টে ওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টার যে দেশে আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৮ নভেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

আপডেট টাইম : ১০:২৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে যাচ্ছেন মেডিক্যাল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক হলেন- ডাক্তার জাহিদ, ডাক্তার শাহাবুদ্দিন, ডাক্তার আরেফিন, ডাক্তার নূর উদ্দিন, ডাক্তার এফ এম সিদ্দিক, ডাক্তার জাফর, ডাক্তার মামুন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।

জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথমে লন্ডনে যাবেন ছেলে তারেক রহমানের কাছে। বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে লন্ডন থেকে তৃতীয় একটি দেশে নিয়ে তাকে কোনো একটি ‘মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টারে’ ভর্তি করা হবে।

দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে অনেক দিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। তার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, বিমানে যাত্রা করার মতো পরিস্থিতি হলেই তাকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অথবা যুক্তরাজ্যে নেওয়া হতে পারে বলে আগেই জানা গিয়েছিল।

সবশেষ ৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। অধ্যাপক ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হলে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। সেই থেকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হবে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে দ্রুত তাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি, সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টে ওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিক্যাল সেন্টার যে দেশে আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি।