ঢাকা ০৯:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ টুকরা করে হত্যার কারণ জানালেন শাহনাজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ১৯১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই সজীবকে ছুরি মেরে হত্যার পর লাশ কেটে পাঁচ টুকরা করেন শাহনাজ। শুক্রবার শাহনাজ আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিভিন্ন ক্ষোভের কথা জানান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুটিক ব্যবসায়ী সজীব হাসানের সঙ্গে শাহনাজ পারভীন ছাড়াও একাধিক নারীর সম্পর্ক ছিলো। চার দিন আগে শাহনাজ যখন সজীবের বাসায় ওঠেন, তখন তার গয়নাগাটি বিক্রি করে টাকা দিতে চাপ দিচ্ছিলেন সজীব। শাহনাজকে বাসায় একা রেখে তালা লাগিয়ে সজীব বাইরে যেতেন। এরকম বিভিন্ন তথ্য ওঠে এসেছে শাহনাজের জবানবন্দিতে।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্রাবার বিকেলে আদালত শাহনাজের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ওয়ারী বিভাগের পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সজীবের এক খালু শাহনাজ পারভীনকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন। শাহনাজকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তাঁকে আজ বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়।

গতকাল বিকেলে রাজধানীর ওয়ারীর কে এম দাস রোডের ভাড়া বাসা থেকে বুটিক ব্যবসায়ী সজীব হাসানের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকেই শাহনাজকে (৫০) আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, তিন দিন ধরে শাহনাজ নিখোঁজ ছিলেন। তিনিই স্বামীকে ফোন করে নিজের অবস্থান জানান। পরে শাহনাজের স্বামী পুলিশের সহায়তা নিয়ে ওই বাসায় যান।

পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ বলেন, শাহনাজ আদালতকে বলেছেন তার (শাহনাজ) সঙ্গে সজীবের পাঁচ বছর আগে সম্পর্ক হয়। তখন তাকে (শাহনাজকে) স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ১৭/১ কে এম দাস লেনের চতুর্থ তলায় বাসা ভাড়া নেন সজীব। শাহনাজের বাসা পাশের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে (আর কে মিশন)। তখন থেকে সজীবের বাসায় নিয়মিত যেতেন তিনি। শাহনাজের স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার দুই ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং একমাত্র মেয়ে কলেজে পড়েন।

শাহনাজ আদালতকে বলেন, পাঁচ দিন শাহনাজকে তাঁর স্বামী বুটিকস শেখার কাজ বন্ধ করে বাসায় সময় দিতে বলেন। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে শাহনাজের কথা–কাটাকাটি হয়। তখন শাহনাজ স্বামীকে হুমকি দিয়ে বলেন তার সঙ্গে (স্বামী) আর থাকবেন না তিনি।

পরদিনই কাউকে কিছু না বলে ব্যাগভর্তি কাপড়চোপড় স্বর্ণালংকার ও গয়নাগাটি নিয়ে সজীবের বাসায় ওঠেন শাহনাজ। বাসায় ওঠার পর শাহনাজ জানতে পারেন তিনি ছাড়াও সজীবের একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে। সজীব আগেও তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছেন। এখন আবার সজীব গয়নাগাটি বিক্রি করে শাহনাজকে টাকা দিতে বলেন। এসব নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সজীবের সঙ্গে তার কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সজীব তাকে লাঠিপেটা করেন এবং ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় শাহনাজ সজীবের কাছ থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে তাকে (সজীব) আঘাত করেন। এতে সজীব মারা যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাঁচ টুকরা করে হত্যার কারণ জানালেন শাহনাজ

আপডেট টাইম : ১১:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই সজীবকে ছুরি মেরে হত্যার পর লাশ কেটে পাঁচ টুকরা করেন শাহনাজ। শুক্রবার শাহনাজ আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিভিন্ন ক্ষোভের কথা জানান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুটিক ব্যবসায়ী সজীব হাসানের সঙ্গে শাহনাজ পারভীন ছাড়াও একাধিক নারীর সম্পর্ক ছিলো। চার দিন আগে শাহনাজ যখন সজীবের বাসায় ওঠেন, তখন তার গয়নাগাটি বিক্রি করে টাকা দিতে চাপ দিচ্ছিলেন সজীব। শাহনাজকে বাসায় একা রেখে তালা লাগিয়ে সজীব বাইরে যেতেন। এরকম বিভিন্ন তথ্য ওঠে এসেছে শাহনাজের জবানবন্দিতে।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্রাবার বিকেলে আদালত শাহনাজের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ওয়ারী বিভাগের পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সজীবের এক খালু শাহনাজ পারভীনকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন। শাহনাজকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তাঁকে আজ বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়।

গতকাল বিকেলে রাজধানীর ওয়ারীর কে এম দাস রোডের ভাড়া বাসা থেকে বুটিক ব্যবসায়ী সজীব হাসানের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকেই শাহনাজকে (৫০) আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, তিন দিন ধরে শাহনাজ নিখোঁজ ছিলেন। তিনিই স্বামীকে ফোন করে নিজের অবস্থান জানান। পরে শাহনাজের স্বামী পুলিশের সহায়তা নিয়ে ওই বাসায় যান।

পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ বলেন, শাহনাজ আদালতকে বলেছেন তার (শাহনাজ) সঙ্গে সজীবের পাঁচ বছর আগে সম্পর্ক হয়। তখন তাকে (শাহনাজকে) স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ১৭/১ কে এম দাস লেনের চতুর্থ তলায় বাসা ভাড়া নেন সজীব। শাহনাজের বাসা পাশের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে (আর কে মিশন)। তখন থেকে সজীবের বাসায় নিয়মিত যেতেন তিনি। শাহনাজের স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার দুই ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং একমাত্র মেয়ে কলেজে পড়েন।

শাহনাজ আদালতকে বলেন, পাঁচ দিন শাহনাজকে তাঁর স্বামী বুটিকস শেখার কাজ বন্ধ করে বাসায় সময় দিতে বলেন। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে শাহনাজের কথা–কাটাকাটি হয়। তখন শাহনাজ স্বামীকে হুমকি দিয়ে বলেন তার সঙ্গে (স্বামী) আর থাকবেন না তিনি।

পরদিনই কাউকে কিছু না বলে ব্যাগভর্তি কাপড়চোপড় স্বর্ণালংকার ও গয়নাগাটি নিয়ে সজীবের বাসায় ওঠেন শাহনাজ। বাসায় ওঠার পর শাহনাজ জানতে পারেন তিনি ছাড়াও সজীবের একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে। সজীব আগেও তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছেন। এখন আবার সজীব গয়নাগাটি বিক্রি করে শাহনাজকে টাকা দিতে বলেন। এসব নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সজীবের সঙ্গে তার কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সজীব তাকে লাঠিপেটা করেন এবং ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় শাহনাজ সজীবের কাছ থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে তাকে (সজীব) আঘাত করেন। এতে সজীব মারা যান।