কোন হয়রানি ছাড়া অনলাইনে কোর্ট ফি জমা দেয়ার বিধান রেখে কোর্ট ফি’স (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। আইনে কোর্ট ফি আদায়ের জন্য সরকার তফসিলী ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রোভাইডার অথবা সরকার নিয়োজিত এজেন্ট নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। সরকার অনুমোদিত কোন এজেন্ট ছাড়া অপর কেউ স্ট্যাম্প বিক্রি করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান বিলে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার বিলটি উত্থাপন করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
দেশের বিচারপ্রার্থী জনগণ যাতে সহজে, কম খরচে, দ্রুত ও কোন হয়রানি ছাড়া কোর্ট ফি জমা দিতে পারেন সেজন্য ১৪৬ বছর পর এ আইনের সংশোধন সংসদে উত্থাপিত হলো। বিলে বলা হয়েছে, স্ট্যাম্পের সংকট দেখা দিলে অনলাইনে ষ্টাম্পের জন্য জমা দেয়া টাকার রশিদ কার্যকর বলে গণ্য হবে।
বিলের উদ্দেশ্যে ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি বিভিন্ন সেবা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন প্রকার ফি দেয়ার প্রয়োজন হয়। নামজারী, জমির পর্চা ইত্যাদি সেবাসহ সব প্রকার মামলার কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে কোর্ট ফি জমা দিতে হয়। কিন্তু সহজলভ্য না হওয়ায় কোর্ট ফি প্রদানের সময় সাধারণ জনগণ অনেক ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হয়। জনগণের হয়রানি রোধকল্পে, সহজেই এবং দ্রুততার সঙ্গে জনসেবা পৌঁছে দেয়ার স্বার্থে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে/ অনলাইনে কোর্ট ফি জমার সুযোগ সৃষ্টি করতে বিদ্যমান দ্যা কোর্ট ফি’স এ্যাক্ট ১৮৭০-এর সংশোধনী আনা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা গেলে কোর্ট ফি ছাপানো, সংরক্ষণ ও পরিবহনের বিশাল ব্যয়-হ্রাসসহ জালিয়াতি রোধ করা সম্ভব হবে।
একই সঙ্গে তা দেশের সব শ্রেণির মানুষকে বিভিন্ন প্রয়োজনে কোর্ট ফি জমা দিতে অহেতুক ভোগান্তি থেকে রক্ষা করবে এবং নাগরিক সাধারণের ই-সেবা প্রাপ্তি সহজলভ্য হবে বিধায় আইনটি সংশোধন/ প্রতিস্থাপন/ সংযোজন করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে আরো অর্থবহ করে তোলার জন্য উক্ত আইনের সংশোধন আবশ্যক।
পরে পরীক্ষাপূর্বক আগামী ২১ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদাণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
পায়রা বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণে বিল
৬০ দিনের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ড কমিশনার অফিসে প্রকাশ্যে জেলা প্রশাসকের হাত থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিধান রেখে পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন ২০১৬ সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ গতকাল (মঙ্গলবার) জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। পরে পরীক্ষাপূর্বক আগামী ৭ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
বিলের উদ্দেশ্যে ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল অধ্যাদেশ, ১৯৮২ (২ নং অধ্যাদেশ) মোতাবেক দেশে প্রচলিত ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখলের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু বর্ণিত আইনে অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করার বিধান নেই। এ আইনে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।