ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধনেপাতা যাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৬:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১
  • ২১৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীত এলেই  ধনেপাতা খাওয়ার একেবারে ধুম পড়ে যায়। যদিও সারাবছরই এটি এখন পাওয়া যায়। তবে শীতের সময়টাতে দামে সস্তা এবং দেশিয়  ধনেপাতা হওয়ায় একটু বেশি খান সবাই। বাঙালি রান্নায় কিংবা ভর্তা সবকিছুতেই চাই একটু  ধনেপাতার ছোঁয়া।

বহুল ব্যবহৃত সুস্বাদু ও সুপরিচিত এই পাতাটির রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। তবে মারাত্মক বেশ কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে এর। যেগুলো একজন সুস্থ সবল মানুষকে মুহূর্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক কারা খেতে পারবেন না  ধনেপাতা এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো-

> যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ধনে পাতা না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া ধনেপাতাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। কিন্তু দেহের মধ্যে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে হৃৎপিন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। চিকিৎসকরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে অতিরিক্ত খেলে সেটা নিম্ন রক্তচাপের সৃষ্টি করে। এছাড়া ধনেপাতা মাথাব্যথারও কারণ হতে পারে।

স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীর হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে। এক গবেষণা বলছে, সপ্তাহে ২০০ গ্রামের বেশি ধনেপাতা খেলে তা গ্যাসের ব্যথা, পেট ব্যথা, পেট ফোলা, বমি হওয়া এমনকি ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে ধনেপাতা। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাদের ধনেপাতা খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কেননা এটি শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা করে। যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। শ্বাসকষ্টের রোগীরা ধনেপাতা খেলে ছোট ছোট নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

> অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না, বরং তা দীর্ঘস্থায়ীও করে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম পরিমাণে ধনেপাতা খেতে পারেন।

সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে, যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ত্বক ভিটামিন ‘কে’ থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকে ক্যান্সারও তৈরি করে থাকে।

ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে অ্যালার্জি তৈরি হয়। এই অ্যালার্জির ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র‌্যাশ ওঠা ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়।

অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার আর একটি ক্ষতিকর দিক হল মুখে ব্যথা হওয়া। ধনেপাতায় বিভিন্ন এসিডিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে। পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হওয়া। সারা মুখ লালও হয়ে যেতে পারে।

নারীদের গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান নারীদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে নারীদের বাচ্চাধারণ ক্ষমতা হৃাস পায়। বাচ্চাধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ধনেপাতা যাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর

আপডেট টাইম : ০৭:১৬:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীত এলেই  ধনেপাতা খাওয়ার একেবারে ধুম পড়ে যায়। যদিও সারাবছরই এটি এখন পাওয়া যায়। তবে শীতের সময়টাতে দামে সস্তা এবং দেশিয়  ধনেপাতা হওয়ায় একটু বেশি খান সবাই। বাঙালি রান্নায় কিংবা ভর্তা সবকিছুতেই চাই একটু  ধনেপাতার ছোঁয়া।

বহুল ব্যবহৃত সুস্বাদু ও সুপরিচিত এই পাতাটির রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। তবে মারাত্মক বেশ কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে এর। যেগুলো একজন সুস্থ সবল মানুষকে মুহূর্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক কারা খেতে পারবেন না  ধনেপাতা এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো-

> যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ধনে পাতা না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া ধনেপাতাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। কিন্তু দেহের মধ্যে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে হৃৎপিন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। চিকিৎসকরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে অতিরিক্ত খেলে সেটা নিম্ন রক্তচাপের সৃষ্টি করে। এছাড়া ধনেপাতা মাথাব্যথারও কারণ হতে পারে।

স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীর হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে। এক গবেষণা বলছে, সপ্তাহে ২০০ গ্রামের বেশি ধনেপাতা খেলে তা গ্যাসের ব্যথা, পেট ব্যথা, পেট ফোলা, বমি হওয়া এমনকি ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে ধনেপাতা। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাদের ধনেপাতা খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কেননা এটি শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা করে। যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। শ্বাসকষ্টের রোগীরা ধনেপাতা খেলে ছোট ছোট নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

> অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না, বরং তা দীর্ঘস্থায়ীও করে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম পরিমাণে ধনেপাতা খেতে পারেন।

সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে, যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ত্বক ভিটামিন ‘কে’ থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকে ক্যান্সারও তৈরি করে থাকে।

ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে অ্যালার্জি তৈরি হয়। এই অ্যালার্জির ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র‌্যাশ ওঠা ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়।

অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার আর একটি ক্ষতিকর দিক হল মুখে ব্যথা হওয়া। ধনেপাতায় বিভিন্ন এসিডিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে। পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হওয়া। সারা মুখ লালও হয়ে যেতে পারে।

নারীদের গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান নারীদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে নারীদের বাচ্চাধারণ ক্ষমতা হৃাস পায়। বাচ্চাধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।