ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে নারীরা হতে পারবে না বিয়ের কাজি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজি হতে পারবে না বলে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনজন মহিলার নাম প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মত দিয়ে ওই প্রস্তাব বাতিল করে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন প্রস্তাবিত ওই নিকাহ্ রেজিস্ট্রার প্যানেলের একজন নারী সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা।

এরপর সেই রিটের শুনানি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্ত কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে রুলটি খারিজ করে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো: হুমায়ুন কবির।

সম্প্রতি এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। এই রায় অনুযায়ী মুসলিম নারীরা নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

রায়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে হাইকোর্টের এই বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রাকৃতিকভাবে প্রত্যেক মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় একজন নারীর ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশনের কথা বলা হয়েছে। ওই সময়টাতে একজন মুসলিম নারী নামাজও আদায় করতে পারেন না কিংবা মসজিদে যেতে পারেন না। আমাদের দেশে যেহেতু মুসলিম বিয়ে মসজিদেও হয়, অতএব ওই বিশেষ সময় কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান হলে একজন নারী কিভাবে তা সামলাবেন? এমন প্রশ্ন রাখা হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে। এছাড়া একজন নারী মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেব দায়িত্ব পালনে কিছু সামাজিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ফাউন্ডেশন ফর ল’ এন্ড ডেভলপমেন্টের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিমানের পাইলট নারী, সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করছে নারীরা; সেখানে কেন নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না? আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে লড়ব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে কারণে নারীরা হতে পারবে না বিয়ের কাজি

আপডেট টাইম : ০২:০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজি হতে পারবে না বলে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনজন মহিলার নাম প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মত দিয়ে ওই প্রস্তাব বাতিল করে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন প্রস্তাবিত ওই নিকাহ্ রেজিস্ট্রার প্যানেলের একজন নারী সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা।

এরপর সেই রিটের শুনানি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্ত কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে রুলটি খারিজ করে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো: হুমায়ুন কবির।

সম্প্রতি এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। এই রায় অনুযায়ী মুসলিম নারীরা নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

রায়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে হাইকোর্টের এই বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রাকৃতিকভাবে প্রত্যেক মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় একজন নারীর ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশনের কথা বলা হয়েছে। ওই সময়টাতে একজন মুসলিম নারী নামাজও আদায় করতে পারেন না কিংবা মসজিদে যেতে পারেন না। আমাদের দেশে যেহেতু মুসলিম বিয়ে মসজিদেও হয়, অতএব ওই বিশেষ সময় কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান হলে একজন নারী কিভাবে তা সামলাবেন? এমন প্রশ্ন রাখা হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে। এছাড়া একজন নারী মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেব দায়িত্ব পালনে কিছু সামাজিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ফাউন্ডেশন ফর ল’ এন্ড ডেভলপমেন্টের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিমানের পাইলট নারী, সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করছে নারীরা; সেখানে কেন নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না? আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে লড়ব।