ঢাকা ১২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কান পরিষ্কারে কটন বাড ব্যবহারে সতর্কতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কান চুলকালে বা সুরসুর করলে অনেকে কটন বাড, সেফটিপিন বা কাঠি দিয়ে কানের ভিতরে ঘোরানো শুরু করেন। আরামের জন্য দাম দিয়ে ক্ষণিকের যে কটন বাডস কিনে কানের ভিতরে দিলেন তা আসলে কানের পর্দার ক্ষতির অন্যতম কারণ। অসাবধানতায় কানের ভেতর অধিক খোঁচাখুঁচিতে বিপদ হতে পারে। এগুলো থেকে সংক্রমণও ছড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কানের ময়লা বা খোলেরও উপকারিতা আছে। কাজেই তাকেও টেনেটুনে বাইরে নিয়ে আসার খুব একটা দরকার নেই। খুব প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের দেখানো পথেই কান পরিষ্কার রাখা উচিত।
কটন বাডের তুলো অসাবধানতায় কানে ঢুকে গিয়ে মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। কটন বাডসের খোঁচা কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে। কানের তরুণাস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শ্রবণশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সময়ই অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হয় এমন বিপদে।

কটন বাড ব্যবহারের ফলে কানের ভিতরের ময়লা আরও বেশি ভিতরে ঢুকে যায়। কানের পর্দার আরও কাছে পৌছে যায় ময়লা। কানের মধ্যে থেকে যতটা না ময়লা বের হয়, তার চেয়ে বেশি ভিতরেই থেকে যায়। কানে ক্ষত সৃষ্টির আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। আঘাত লাগলে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। কানের হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। শোনার ক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নষ্ট হয়ে যেতে পারে শরীরের ভারসাম্য।

কানের ময়লা যার পোশাকি নাম ইয়ারওয়াক্স বা চলতি কথায় কানের খোল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কানের ময়লা কিন্তু আসলে কানকে সুরক্ষা দেয়। এটি আসলে কানের বাইরে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থির ক্ষরণ যাকে বলে সেরুমেন।

কানের খোলের আসল কাজ হলো কানকে সুরক্ষা দেওয়া। সেরুমেন সামান্য অ্যাসিডিক, এর কাজ জীবাণু নাশ করা, কানকে হাইড্রেটেড রাখা। ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্রোপ্টোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে নাশ করে এই সেরুমেন। কানের অন্দরমহলকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। দরকার হলে কান নিজেই এই খোল সাফ করতে পারে। আসলে কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে জানে। কিন্তু ঘনঘন কটন বাড বা ইয়ার বাড দিয়ে কান খোঁচালে সেই স্তর নষ্ট হয়ে যায়। তখনই যাবতীয় ইনফেকশন, ব্যথা ইত্যাদি শুরু হয়।

কটন বাড ব্যবহার সাময়িক আরাম দিতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্ভাবনাই প্রবল। কটন বাড ব্যবহারের ফলে কানে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। বহুদিন ধরে এটি ব্যবহার করলে ছত্রাক সংক্রমণও হতে পারে। অহেতুক কটন বাড নিয়ে কান খোঁচাখুঁচি বিপজ্জ্বনক। কানের ভিতরে চামড়ার নানা সমস্যা ও ব্যথার কারণও কটন বাড।

অনেকসময় কটন বাডের তুলোর খানিকটা অংশ কানে থেকে গিয়ে বিপদ বাড়ায়। কানের ময়লা সাধারণত বিশেষ কারণ ছাড়া আলাদাভাবে পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রাকৃতিকভাবেই কানের ময়লা বেরিয়ে আসে। প্রয়োজন হলে কান পরিষ্কারের জন্য ডাক্তারের কাছেই যাওয়া উচিত। কানের সুস্থতার জন্য তাই এখনই ছাড়ুন কটন বাড। নয়ত বিপদে পা বাড়াচ্ছেন আপনি নিজেই। অযথা কান পরিষ্কার করারই দরকার নেই। কারণ কানের ময়লা প্রাকৃতিকভাবেই পরিষ্কার হয়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কান পরিষ্কারে কটন বাড ব্যবহারে সতর্কতা

আপডেট টাইম : ০৩:৩০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কান চুলকালে বা সুরসুর করলে অনেকে কটন বাড, সেফটিপিন বা কাঠি দিয়ে কানের ভিতরে ঘোরানো শুরু করেন। আরামের জন্য দাম দিয়ে ক্ষণিকের যে কটন বাডস কিনে কানের ভিতরে দিলেন তা আসলে কানের পর্দার ক্ষতির অন্যতম কারণ। অসাবধানতায় কানের ভেতর অধিক খোঁচাখুঁচিতে বিপদ হতে পারে। এগুলো থেকে সংক্রমণও ছড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কানের ময়লা বা খোলেরও উপকারিতা আছে। কাজেই তাকেও টেনেটুনে বাইরে নিয়ে আসার খুব একটা দরকার নেই। খুব প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের দেখানো পথেই কান পরিষ্কার রাখা উচিত।
কটন বাডের তুলো অসাবধানতায় কানে ঢুকে গিয়ে মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। কটন বাডসের খোঁচা কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে। কানের তরুণাস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শ্রবণশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সময়ই অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হয় এমন বিপদে।

কটন বাড ব্যবহারের ফলে কানের ভিতরের ময়লা আরও বেশি ভিতরে ঢুকে যায়। কানের পর্দার আরও কাছে পৌছে যায় ময়লা। কানের মধ্যে থেকে যতটা না ময়লা বের হয়, তার চেয়ে বেশি ভিতরেই থেকে যায়। কানে ক্ষত সৃষ্টির আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। আঘাত লাগলে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। কানের হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। শোনার ক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নষ্ট হয়ে যেতে পারে শরীরের ভারসাম্য।

কানের ময়লা যার পোশাকি নাম ইয়ারওয়াক্স বা চলতি কথায় কানের খোল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কানের ময়লা কিন্তু আসলে কানকে সুরক্ষা দেয়। এটি আসলে কানের বাইরে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থির ক্ষরণ যাকে বলে সেরুমেন।

কানের খোলের আসল কাজ হলো কানকে সুরক্ষা দেওয়া। সেরুমেন সামান্য অ্যাসিডিক, এর কাজ জীবাণু নাশ করা, কানকে হাইড্রেটেড রাখা। ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্রোপ্টোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে নাশ করে এই সেরুমেন। কানের অন্দরমহলকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। দরকার হলে কান নিজেই এই খোল সাফ করতে পারে। আসলে কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে জানে। কিন্তু ঘনঘন কটন বাড বা ইয়ার বাড দিয়ে কান খোঁচালে সেই স্তর নষ্ট হয়ে যায়। তখনই যাবতীয় ইনফেকশন, ব্যথা ইত্যাদি শুরু হয়।

কটন বাড ব্যবহার সাময়িক আরাম দিতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্ভাবনাই প্রবল। কটন বাড ব্যবহারের ফলে কানে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। বহুদিন ধরে এটি ব্যবহার করলে ছত্রাক সংক্রমণও হতে পারে। অহেতুক কটন বাড নিয়ে কান খোঁচাখুঁচি বিপজ্জ্বনক। কানের ভিতরে চামড়ার নানা সমস্যা ও ব্যথার কারণও কটন বাড।

অনেকসময় কটন বাডের তুলোর খানিকটা অংশ কানে থেকে গিয়ে বিপদ বাড়ায়। কানের ময়লা সাধারণত বিশেষ কারণ ছাড়া আলাদাভাবে পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রাকৃতিকভাবেই কানের ময়লা বেরিয়ে আসে। প্রয়োজন হলে কান পরিষ্কারের জন্য ডাক্তারের কাছেই যাওয়া উচিত। কানের সুস্থতার জন্য তাই এখনই ছাড়ুন কটন বাড। নয়ত বিপদে পা বাড়াচ্ছেন আপনি নিজেই। অযথা কান পরিষ্কার করারই দরকার নেই। কারণ কানের ময়লা প্রাকৃতিকভাবেই পরিষ্কার হয়ে যায়।