হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রাচীনকাল থেকেই রোগমুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রয়েছে বাসক পাতার। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এই পাতা বেশ উপকারী। শীতে মৌসুমী জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি, বুকে কফ জমাসহ শ্বাসকষ্ট অনেকেই ভুগছেন। তাই বিভিন্ন ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক এই উপাদানে ভরসা রাখলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
এই পাতা তাজা বা শুকানো রয়েছে ওষুধি গুণ। বাসক পাতায় ভাসিসিন নামক ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে থাকে।
সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালির প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় বাসকের ভেষজ গুণাবলী প্রমাণিত হয়েছে। এর মূল, পাতা, ফুল, ছাল সবই ব্যবহার হয়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কীভাবে বাসক পাতার রস ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে-
> শিশুর ঠাণ্ডা-কাশি সারাতে এই পাতা বেশ উপকারী। বাসক পাতার এক বা দুই চামচ রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে উপকার মিলবে।
> এছাড়া আমবাত ও ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থায় বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়।
> বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট বা কাশি হয়। তখন বাসক পাতার রস এক বা দুই চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।
> প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা থাকলে বাসক ফুলে উপকার মিলবে। বাসকের ফুল বেটে নিন। এবার দুই বা তিন চামচ ফুলের পেস্টের সঙ্গে মিছরি মিলিয়ে শরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যাবে।
> জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫ বা ১০ গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলিলিটার পানিতে ফুটিয়ে ২৫ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিন। এরপর দিনে ২ বার করে খান। তাতে জ্বর এবং কাশি দুটোই চলে যাবে।
> বাসকের কচিপাতা ১০ থেকে ১২টি ও এক টুকরো হলুদ এক সঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে তা সেরে যায়।
> এক কলসি পানিতে তিন থেকে চারটি বাসক পাতা তিন থেকে চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। এরপর এই পানি প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারবেন।
> পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে ২০টি বাসক পাতা থেঁতিয়ে দুই কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে নিন। এ পানি দিয়ে উষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়া বাসকের পাতা সবুজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পাতা থেকে হলদে রং পাওয়া যায়। বাসক পাতায় এমন কিছু ক্ষারীয় পদার্থ আছে যায় ফলে ছত্রাক জন্মায় না এবং পোকামাকড় ধরে না বলে ফল প্যাকিং এবং সংরক্ষণ করার কাজেও ব্যবহৃত হয়।