ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফাহাদ হত্যা: আদালত পরিবর্তনে সময় আবেদন মঞ্জুর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • ১৭০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আদালত পরিবর্তন করে হাইকোর্টে আবেদন করতে সময় চেয়েছিল আসামিপক্ষ। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই মামলার বিচার কাজ মুলতবি করা হয়েছে।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) সময় আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই আদেশ দেন।

গত ৩০ নভেম্বর একই আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরাআদালত বর্জন করেন। এ বিষয়ে সময় চেয়ে একটি লিখিত আবেদনও দেন তারা। আদালত আবেদনের বিষয়ে আদেশের জন্য ৬ ডিসেম্বর দিন রেখেছিলেন।

এই আদালতেই বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ৬০ সাক্ষীর ৩৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আবেদনে বলা হয়, সাক্ষীদের জবানবন্দির পর জেরায় আইনজীবীদের প্রশ্ন হুবুহু রেকর্ড হয়নি। এছাড়াবৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের ৩৩ নম্বর সাক্ষী রকিবুল হাসানের সাক্ষী রিকল করে জবানবন্দি নেন। আসামিপক্ষকে রিকলের বিষয়ে জানানোর কথা থাকলেও তা না করেই বেআইনিভাবে পুনরায় সাক্ষ্য নেওয়ার অভিযোগ করে আসামিপক্ষ।

তাই ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় এই আদালতের প্রতিঅনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার জন্য মামলাটি মুলতবি রাখার দরখাস্ত দিয়ে বেরিয়ে যান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিটভুক্ত ২৫ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর ৫ অক্টোবর আবরারের বাবা বরকতউল্লাহরজবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্য শুরু হয়।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলেছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা বরকতউল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।

গতবছর ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

মামলার তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও এসএম মাহমুদ সেতু। পরে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

গ্রেফতারদের মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এসএম মাহমুদসেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার আট আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন-ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

মোর্শেদ অমত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসামি পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

তাই এখন পলাতক রয়েছেন আর তিন আসামি। তারা হলেন-মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফাহাদ হত্যা: আদালত পরিবর্তনে সময় আবেদন মঞ্জুর

আপডেট টাইম : ০২:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আদালত পরিবর্তন করে হাইকোর্টে আবেদন করতে সময় চেয়েছিল আসামিপক্ষ। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই মামলার বিচার কাজ মুলতবি করা হয়েছে।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) সময় আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই আদেশ দেন।

গত ৩০ নভেম্বর একই আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরাআদালত বর্জন করেন। এ বিষয়ে সময় চেয়ে একটি লিখিত আবেদনও দেন তারা। আদালত আবেদনের বিষয়ে আদেশের জন্য ৬ ডিসেম্বর দিন রেখেছিলেন।

এই আদালতেই বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ৬০ সাক্ষীর ৩৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আবেদনে বলা হয়, সাক্ষীদের জবানবন্দির পর জেরায় আইনজীবীদের প্রশ্ন হুবুহু রেকর্ড হয়নি। এছাড়াবৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের ৩৩ নম্বর সাক্ষী রকিবুল হাসানের সাক্ষী রিকল করে জবানবন্দি নেন। আসামিপক্ষকে রিকলের বিষয়ে জানানোর কথা থাকলেও তা না করেই বেআইনিভাবে পুনরায় সাক্ষ্য নেওয়ার অভিযোগ করে আসামিপক্ষ।

তাই ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় এই আদালতের প্রতিঅনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার জন্য মামলাটি মুলতবি রাখার দরখাস্ত দিয়ে বেরিয়ে যান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিটভুক্ত ২৫ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর ৫ অক্টোবর আবরারের বাবা বরকতউল্লাহরজবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্য শুরু হয়।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলেছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা বরকতউল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।

গতবছর ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

মামলার তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও এসএম মাহমুদ সেতু। পরে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

গ্রেফতারদের মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এসএম মাহমুদসেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার আট আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন-ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

মোর্শেদ অমত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসামি পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

তাই এখন পলাতক রয়েছেন আর তিন আসামি। তারা হলেন-মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।