হাওর বার্তা ডেস্কঃ গর্ভাবস্থায় হবু মায়েদের শরীরে নানারকম পরিবর্তন দেখা দেয়। শারীরিক এবং মানসিক দুই দিকেই এই পরিবর্তন আসে। হরমোনের তারতম্যের কারণে শরীরে রক্ত এবং তরলের উৎপাদন প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ কারণেই গর্ভাবস্থার সময় দেহের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওঠে।
প্রেগনেন্সির সময় একজন নারীর শরীরে প্রায় ২৫ শতাংশ ওজন বাড়ে, শুধু এই অতিরিক্ত তরলের কারণে। এজন্যই হাত, মুখ, পা এবং গোড়ালি ফোলা ফোলা দেখায়। সাধারণত গর্ভাবস্থায় এই শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে। এর মধ্যে এডিমা বা পা ফুলে যাওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার। এর ফলে পা, পায়ের পাতা এবং গোড়ালির জায়গাগুলোতে ফুলে যায়। সাধারণত এটি হয়ে থাকে গর্ভাবস্থার শেষ কয়েক মাসে।
চলুন জেনে নেয়া যাক কী কী কারণে-
হরমোনের পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে, যা দেহে সোডিয়াম এবং তরলের মাত্রা বাড়ায়। ফলে শরীরের অনেক অংশ ফুলে যায়।
জরায়ু বৃদ্ধি হওয়া
গর্ভাবস্থায় ক্রমবর্ধিত জরায়ু পেলভিক শিরা এবং ভেনা কাভাতে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে। এর ফলে পেলভিক-এ রক্ত প্রবাহের গতি বেশ ধীর হয়ে যায় এবং রক্ত শরীরের নীচের অংশে জড়ো হতে শুরু করে। জড়ো হওয়ার রক্ত টিস্যুতে উপস্থিত তরলের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং পায়ে ফোলাভাব ঘটায়।
প্রি এক্লাম্পশিয়া
প্রি এক্লাম্পশিয়ার কারণেও গর্ভবতী মহিলাদের হাত ও মুখে ফোলা হতে পারে। প্রি এক্লাম্পশিয়া এমন একটি দশা, যার ফলে গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেতে পারে। এর সঙ্গে আবার দ্রুত ওজন বৃদ্ধি এবং প্রস্রাবে প্রোটিনের মত অন্যান্য কিছু উপসর্গও যুক্ত হতে পারে।
পা এবং পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়-
> যখন বসে থাকবেন সেই সময় পা দুটি মুড়ে বা আড়াআড়িভাবে ভাঁজ করে রাখবেন না। কিছুক্ষণ পরপর সেগুলোকে প্রসারিত করুন। পা ঝুলিয়ে রাখার পরিবর্তে তুলে রাখুন।
> দীর্ঘ সময় একভাবে একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন।
> সহজেই যাতে পায়ের পাতা প্রসারিত করতে পারেন এমন ধরনের আলগা জুতা পরুন।
> নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন। হাঁটাচলা করা ও সাঁতার অনুশীলনও করতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এইসব করুন।
> স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চলুন। অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।