উন্নয়ন ফ্রেমওয়ার্কে ৮৭ হাজার গ্রাম

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্যতম হচ্ছে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। অর্থাৎ গ্রামে শহরের সব সুবিধা পৌঁছানো। এটি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

তৈরি করা হবে ৩০টি গাইডলাইন, ৫১টি সমীক্ষা প্রতিবেদন ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি)। এছাড়া দেশের ৮৭ হাজার ২৩০টি গ্রাম উন্নয়নের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্কও করা হবে।

এজন্য ‘আমার গ্রাম আমার শহর : নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা’ একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩১ কোটি টাকা।

আজ বুধবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে অনুমোদন পেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কাজ বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় আমার গ্রাম আমার শহরের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।

এছাড়া তৈরি হতে যাওয়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও এ বিষয়ের প্রতিফলন রয়েছে। কেননা এটি সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। তাই এর বাস্তব রূপায়নের বিষয়টি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছে।

সূত্র জানায়, কারিগরি সহায়তা সংক্রান্ত এ প্রকল্পের আওতায় ৩০টি গাইডলাইন তৈরি করা হবে।

এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মপরিধি সংক্রান্ত ৭টি বিষয় যেমন, গ্রামীণ যোগাযোগ, গ্রামীণ গ্রোথ সেন্টার/হাটবাজার, গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি স্পেস ও বিনোদন, উপজেলা মাস্টারপ্ল্যান, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও অন্য বিষয়।

এছাড়া ৩৬টি সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। সেই সঙ্গে ১৫টি পাইলট গ্রামের আলাদা সমীক্ষা করা হবে।

এসবের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণের চ্যালেঞ্জগুলো এবং উত্তরণের উপায় উদ্ভাবন করা হবে।

এছাড়া দেশের ৮টি বিভাগের সমতলের ৮টি গ্রাম এবং ডেল্টা প্ল্যানের হট স্পট ও অর্থনৈতিক অঞ্চল সংলগ্ন ১৫টি গ্রামে পাইলট গ্রাম নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই করা করে প্রকল্প তৈরি করা হবে।

ভিশন ২০৪১ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য পল্লী অঞ্চলে অধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঞ্চার করা হবে। কর্মসংস্থান তৈরির জন্য দেশের ৮৭ হাজার ২৩০টি গ্রাম উন্নয়নের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্কও তৈরি করা হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, আধুনিক ব্যবস্থাপনায় গ্রামাঞ্চলের জনগণের জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য গ্রামগুলোর শহরের আদলে রূপান্তর করা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার। আমার গ্রাম আমার শহর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের প্রস্তুতির জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। যেটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পটি হাতে নেয়া হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পরামর্শক সেবা খাতে ২২ কোটি ২৬ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিপিপিতে পরামর্শকের প্রয়োজনীয়তা, ক্যাটাগরি অনুযায়ী নাম, সংখ্যা, জনমাস, কার্যপরিধি উল্লেখ করা প্রয়োজন।

এছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে ২ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং স্থানীয় সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে এ ব্যয় বাদ দেয়া যেতে পারে। স্থানীয় প্রশিক্ষণ খাতে ৫০ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।

এ খাতে ব্যয় যুক্তিযুক্তভাবে কমানো আবশ্যক। অন্য স্টেশনারি খাতে ৫০ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ব্যয়ও যুক্তিযুক্ত করা প্রয়োজন। প্রকল্পে প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে দেড় কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ খাতে এত বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ রাখার যৌক্তিকতা নেই। তাই এটি বাদ দেয়া যেতে পারে। আরও বলা হয়েছে প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যয় পর্যালোচনা করে যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটি চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে এটি প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর সম্মতি নেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর