ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শরীরের শক্তি বাড়াবে ভেষজ ঔষধি লাল বিট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৭:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০
  • ১৯৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীত চলেই এসেছে। শীতের শুরুতে চারদিকে সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথাসহ শরীরের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত মানুষ। করোনাকালে এবার শীতে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় বাইরের দূষণ ও আমাদের রোজকার অনিয়মিত জীবনযাত্রা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু খাবার আছে যা প্রতিদিন খেলে আমরা শুধুই ভালো থাকব না, এইসব রোগের হাত থেকে বাঁচাও সম্ভব হবে। সেটি হলো লাল বিট।

বিট বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রুট শাক হিসেবে পরিচিত। এটি ভিটামিন এবং খনিজগুলোর পাশাপাশি ভেষজ ঔষধি বৈশিষ্ট্যযুক্ত। লাল বিটের বৈজ্ঞানিক নাম বিটা ওয়ালগারিস। লাল বিট, যার জন্মভূমিটি ভূমধ্যসাগর এবং পালঙ্ক পরিবারের সদস্য। লাল বিট ভিটামিন এবং খনিজগুলোর জন্য একটি সম্পূর্ণ শক্তির উৎস। এতে ভিটামিন এ, বি, পি, সি থাকায় এটি একটি অলৌকিক উদ্ভিদ। এছাড়াও এটি ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ।
বিট এমন একটি খাবার যা এর শিকড় এবং পাতা উভয়ই স্বাস্থ্যের অভিভাবক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এছাড়াও বিটের জুস খেতে পারলে হার্টবিট ঠিক থাকে। বিটের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের নানা কাজে লাগে। যুক্তরাজ্যের ক্যুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ থেকেই এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটেই লাল বিটের জুস খান- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবেই। এছাড়াও হজমের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, হার্টের কোনো সমস্যাতেও এই বিটের জুস খুব ভালো কাজ করে। লাল বিটের উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন। তাহলে দেখে নিন লাল বিট কেন উপকারী।

শক্তি বাড়ায়

শরীরকে সুন্দর এবং ফিট রাখার জন্য রোজ জিমের পাশাপাশি রাখুন লাল বিট। এটি পেশীর শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি এনার্জি আনতে খেতে পারেন বিটের রস।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

লাল বিটে থাকা আলফা লাইপোইক অ্যাসিড এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা গ্লুকোজ স্তর হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। বিটের এই বৈশিষ্ট্যটি স্ট্রেস-ভিত্তিক ডায়াবেটিসের ওঠানামা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

অ্যানিমিয়ায় রক্ত বাড়ায়

যাদের রক্তাল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিট খুব উপকারী। কারণ এতে আছে প্রচুর আয়রন। রক্তস্বল্পতা সমাধান করে, শরীরে প্রয়োজনীয় রক্তের যোগান দেয় এবং অনিয়মিত খুব কম পিরিয়ড যাদের হয় তাদের ক্ষেত্রেও উপকারী। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

এছাড়াও বিট শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি করে লাল বিট খেলে বা বিটের রস পান করলে, উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। এটি ওষুধের থেকেও ভালো কাজ করে। এতে থাকা নাইট্রেট নামক উপাদান এই কাজটি করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচায়।

ক্যানসার প্রতিরোধক

বিটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।

ডিপ্রেশন দূর করে

ডিপ্রেশন দূর করতে বিটের বিটের মতো উপকারী উপাদান খুব কমই আছে। মন ভালো না থাকলে খান বিটের শরবত। এতে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন নামক উপাদান মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ত্বককে ভালো রাখে বিট

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে বেশ উপকারী। এছাড়াও বিট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ও অন্যান্য সমস্যা যেমন ব্রন, বলিরেখা দূর করে। উজ্জ্বল ত্বক পেতে রোজ একগ্লাস করে বিটের সরবত খেলে দারুণ উপকার হবে।

লিভার ভালো থাকে

এখন ফাস্ট ফুডে অভ্যস্থ জীবনে লিভারের অবস্থা খুবই খারাপ হয়। বিট হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম ছাড়াও, এটি পেটের অন্যান্য রোগ যেমন জন্ডিস, ডায়রিয়া, প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রে খুব উপকারী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীরের শক্তি বাড়াবে ভেষজ ঔষধি লাল বিট

আপডেট টাইম : ০২:২৭:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীত চলেই এসেছে। শীতের শুরুতে চারদিকে সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথাসহ শরীরের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত মানুষ। করোনাকালে এবার শীতে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় বাইরের দূষণ ও আমাদের রোজকার অনিয়মিত জীবনযাত্রা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু খাবার আছে যা প্রতিদিন খেলে আমরা শুধুই ভালো থাকব না, এইসব রোগের হাত থেকে বাঁচাও সম্ভব হবে। সেটি হলো লাল বিট।

বিট বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রুট শাক হিসেবে পরিচিত। এটি ভিটামিন এবং খনিজগুলোর পাশাপাশি ভেষজ ঔষধি বৈশিষ্ট্যযুক্ত। লাল বিটের বৈজ্ঞানিক নাম বিটা ওয়ালগারিস। লাল বিট, যার জন্মভূমিটি ভূমধ্যসাগর এবং পালঙ্ক পরিবারের সদস্য। লাল বিট ভিটামিন এবং খনিজগুলোর জন্য একটি সম্পূর্ণ শক্তির উৎস। এতে ভিটামিন এ, বি, পি, সি থাকায় এটি একটি অলৌকিক উদ্ভিদ। এছাড়াও এটি ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ।
বিট এমন একটি খাবার যা এর শিকড় এবং পাতা উভয়ই স্বাস্থ্যের অভিভাবক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এছাড়াও বিটের জুস খেতে পারলে হার্টবিট ঠিক থাকে। বিটের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের নানা কাজে লাগে। যুক্তরাজ্যের ক্যুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ থেকেই এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটেই লাল বিটের জুস খান- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবেই। এছাড়াও হজমের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, হার্টের কোনো সমস্যাতেও এই বিটের জুস খুব ভালো কাজ করে। লাল বিটের উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন। তাহলে দেখে নিন লাল বিট কেন উপকারী।

শক্তি বাড়ায়

শরীরকে সুন্দর এবং ফিট রাখার জন্য রোজ জিমের পাশাপাশি রাখুন লাল বিট। এটি পেশীর শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি এনার্জি আনতে খেতে পারেন বিটের রস।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

লাল বিটে থাকা আলফা লাইপোইক অ্যাসিড এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা গ্লুকোজ স্তর হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। বিটের এই বৈশিষ্ট্যটি স্ট্রেস-ভিত্তিক ডায়াবেটিসের ওঠানামা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

অ্যানিমিয়ায় রক্ত বাড়ায়

যাদের রক্তাল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিট খুব উপকারী। কারণ এতে আছে প্রচুর আয়রন। রক্তস্বল্পতা সমাধান করে, শরীরে প্রয়োজনীয় রক্তের যোগান দেয় এবং অনিয়মিত খুব কম পিরিয়ড যাদের হয় তাদের ক্ষেত্রেও উপকারী। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

এছাড়াও বিট শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি করে লাল বিট খেলে বা বিটের রস পান করলে, উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। এটি ওষুধের থেকেও ভালো কাজ করে। এতে থাকা নাইট্রেট নামক উপাদান এই কাজটি করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচায়।

ক্যানসার প্রতিরোধক

বিটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।

ডিপ্রেশন দূর করে

ডিপ্রেশন দূর করতে বিটের বিটের মতো উপকারী উপাদান খুব কমই আছে। মন ভালো না থাকলে খান বিটের শরবত। এতে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন নামক উপাদান মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ত্বককে ভালো রাখে বিট

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে বেশ উপকারী। এছাড়াও বিট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ও অন্যান্য সমস্যা যেমন ব্রন, বলিরেখা দূর করে। উজ্জ্বল ত্বক পেতে রোজ একগ্লাস করে বিটের সরবত খেলে দারুণ উপকার হবে।

লিভার ভালো থাকে

এখন ফাস্ট ফুডে অভ্যস্থ জীবনে লিভারের অবস্থা খুবই খারাপ হয়। বিট হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম ছাড়াও, এটি পেটের অন্যান্য রোগ যেমন জন্ডিস, ডায়রিয়া, প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রে খুব উপকারী।