হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে যমুনা নদীতে মাছ ধরার জালে ধরা পড়েছে মিঠাপানির মহাবিপন্ন প্রজাতির প্রাণী ঘড়িয়াল।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, সকালে যমুনা নদীতে মাছ ধরার সময় জেলেদের বের জালে ঘড়িয়ালটি ধরা পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
নরসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ঘড়িয়ালটি চার ফিটের মতো লম্বা হবে। সকালে ধরা পড়া ঘড়িয়ালটি দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভিড় করে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘড়িয়ালটি যমুনায় অবমুক্ত করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে পদ্মা, যমুনা ও ব্রক্ষপুত্র এবং এগুলোর শাখা-প্রশাখায় এক সময় প্রচুর দেখা যেত। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে প্রজননক্ষম কোনো ঘড়িয়াল প্রকৃতিতে নেই বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ঘড়িয়াল বিপন্ন প্রাণী যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ দ্বারা সংরক্ষিত।
ঘড়িয়াল ৫০ থেকে ৬০ বছর বাঁচে। প্রায় দুই হাজার মিলিয়ন বছর ধরে ঘড়িয়াল পৃথিবীতে বেঁচে আছে। পুরুষ ঘড়িয়ালের ওপরের চোয়ালে, নাকের ঠিক ওপরে, কলস বা ঘড়া আকৃতির একটি পিণ্ড থাকে। এ কারণেই সম্ভবত ঘড়িয়াল নাম। বর্তমানে পৃথিবীতে মাত্র ২শ’ বুনো ঘড়িয়াল রয়েছে। যার সবগুলোই বাংলাদেশ, ভারত, নেপালের নদীগুলোতে। এদের সবচেয়ে পছন্দ বালুচরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ পোহানো। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। বরং রাক্ষুসে মাছ খেয়ে ঘড়িয়াল প্রাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খল ঠিক রাখে।
আঁশবিহীন মাছ, বিশেষ করে বোয়াল, আইড়, গুঁজি, পাঙ্গাস বেশি পছন্দ করে এরা। লম্বা চোয়াল মাছ ধরার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। মাছ প্রধান খাবার বলে এরা মেছো কুমির নামেও পরিচিত। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) মহাবিপদাপন্ন প্রাণীর তালিকায় যার নাম লেখা আছে লাল হরফে।