হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বাভাবিক জীবন যাপন করার আগ্রহ থেকে বাড়তি ওজন নিয়ে হতাশা নতুন কিছু নয়। অনেকেই মনে করেন ওজন একবার বেড়ে গেছে মানে এখানেই সব শেষ। তা কিন্তু একেবারেই নয়। বাড়তি ওজন কমানোর জন্য রয়েছে বেশ কিছু উপায়। আদিকাল থেকে গোলমরিচের গুঁড়া মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। গোলমরিচকে বলা হয় মসলার রাজা। কারণ গোলমরিচের মতো গুনাগুণ নাকি আর কোনো মসলায় এত নেই। গোলমরিচ উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম পিপার নিগ্রাম। এটি একটি লতাজাতীয় উদ্ভিদ। এদের ফলকে শুকিয়ে মসলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ঔষধি গুণাগুণের জন্যেও এটি সমাদৃত।
পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে এতে ক্যালরি কম, আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন সি। পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও সোডিয়াম ইত্যাদি খনিজও এতে বিদ্যমান। তাই খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি চর্বি কমাতেও তা অনন্য। গোলমরিচের নানা উপকারিতা আছে। আমাদের শরীরের ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে গোলমরিচ। মুখের স্বাদ বাড়াতে গোলমরিচের জুড়ি নেই। প্রতিদিন হালকা গরম পানির সঙ্গে গোলমরিচের গুঁড়া আর একচামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে কিন্তু মুখে স্বাদ ফিরবে। এছাড়াও কমবে অতিরিক্ত ওজন।
প্রতিদিন দুই চামচের বেশি গোলমরিচ খাওয়া উচিত নয়। দুই চামচ গোলমরিচ মানেও তাতে থাকে প্রায় ১০-১২টা গোলমরিচের দানা। বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। বিশেষত যাদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা আছে, তারা খুব বেশি খাবেন না। এছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গোলমরিচ খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা। এতে মিসক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানির সঙ্গে এক চামচ গোলমরিচের গুঁড়া আর এক চামচ মধু মিশিয়ে খান। প্রচুর উপকার পাবেন।
এছাড়াও যারা সকালে লেবু পানি বা অন্য কিছু খান তারা যদি গোলমরিচের গুঁড়া লিকার চায়ের সঙ্গে পাঁচ মিনিট ধরে ফুটিয়ে খান তাহলেও চলবে। গরম চায়ে বেশ ঝালের স্বাদ থাকবে। বেশি ঘাম হলেই বুঝবেন তা ওজন কমানোর সহায়ক।
যারা চায়েই দিন শুরু করেন তারা এই ভাবে বানাতে পারেন। একটি পাত্রে পানি গরম করতে বসান। এবার ওর মধ্যে আদা থেঁতো করে দিয়ে দিন। পাঁচ মিনিট ধরে ফোটান। এবার কাপে ঢালুন। কাপের মধ্যে গ্রিন টি ব্যাগ আগে থেকেই দিয়ে রাখুন। পাঁচ মিনিট পর ওর মধ্যে হাফ চামচ গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এবার চুমুক দিয়ে খেয়ে নিন।
সকালে উঠে এই ডিটক্স ওয়াটারও বানিয়ে নিতে পারেন। এককাপ পানি গরম করুন। এর মধ্যে এক চামচ মধু দিয়ে দিন। এবার এক চামচ গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। গ্লাসে একটা পাতিলেবুর রস বের করে রাখুন। এবার এই পানি মিশিয়ে একটু ঠান্ডা করে খেয়ে নিন।
অনেকেই সকালে গাজরের জুস খান। তারা গাজরের জুস বানিয়ে তার মধ্যে যদি এক চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে খুব ভালো ফল পাবেন। সেই সঙ্গে ওজনও কমবে তাড়াতাড়ি।
হালকা ঠান্ডা লাগলে আগে গোলমরিচ খান। তারপর ওষুধ। যদি ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচতে বা ত্বককে ভালো রাখতে চান, খান গোলমরিচ। আর যদি সুস্থ্ থাকতে চান, তাহলে রোজ রান্নায় এবার থেকে একটু করে গোলমরিচ দিতে ভুলবেন না।
যারা নিয়মিত গ্যাস, অম্বলের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন সকালে পাঁচটা করে গোলমরিচ চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস জল খান। টানা ৭ দিন করুন। দেখবেন সমস্যা অনেক কমে গিয়েছে।
ঠান্ডা লাগলে গরম দুধে গোলমরিচ কষ্ট থেকে উপশম দেয়। যাদের প্রায়ই ঠান্ডা লাগে বা হাঁচি হয় ঘন ঘন, তারা যদি কয়েকটা গোলমরিচ রোজ চিবিয়ে খেয়ে নেন, উপকার পাবেনই পাবেন।