হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের প্রতিদিনের খাবারে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার কিছু না কিছু হলেও থাকে। আবার অনেকেই চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে ভালোবাসেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন অতিরিক্ত চিনি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। চিনি পুষ্টিহীন ক্যালোরি। খেলে ওজন বাড়ে।
এমনকি বেড়ে যায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও। এছাড়াও অতিরিক্ত চিনি খেলে হার্ট ও লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে, কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে, বাড়ে কিছু ক্যান্সারের আশঙ্কাও।
সম্পতি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে নানা রোগে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ মারা যান।
সংক্রামক রোগে যত মানুষ আক্রান্ত হন, তার চেয়ে বেশি মানুষ অসুস্থ হন চিনির বিষক্রিয়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষদের দিনে ৯ চামচ ও নারীদের ৬ চামচের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়।
আমেরিকান সরকারের ডায়াটেরি গাইড লাইন অনুযায়ী দিনে যত ক্যালোরি আমরা খাই তার ১০-১৫ শতাংশের কম আসা উচিত চিনি থেকে।
তবে বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে এই মাত্রা খুব কম মানুষই মানেন। বরং চিনি থেকে ২৫ শতাংশও অব্দি ক্যালোরি গ্রহণ করেন।
প্রসেস করা খাবারেও প্রচুর চিনি থাকে। তা সেই খাবার খেতে মিষ্টি হোক বা না হোক। যেমন, কর্নফ্লেক্স, পাউরুটি, বিস্কুট, মেয়োনিজ ও অন্যান্য সালাদ ইত্যাদি।
প্যাকেটের ফলের রস, বিয়ার, সস, কেচাপ, ক্যান্ডি, নরম পানীয় ইত্যাদিরও মধ্যেও রয়েছে অতিরিক্ত চিনি। তবে ভোজন রসিক বাঙালির খাওয়ার পর একটু মিষ্টি না খেলে মন ভরে না।
তবে কৃত্রিম চিনি বর্জন করে প্রাকৃতিক চিনি খান। চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি বা অ্যাসপারটেম খাবেন না। অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কৃত্রিম চিনি খান।
কৃত্রিম চিনি বা অ্যাসপারটেম খেলে ওজন যে কমবেই এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিভিন্ন সমীক্ষায় বরং এর উল্টোটাই প্রমাণিত হয়েছে।
অতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি খাওয়ার ফলে মাইগ্রেন, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, বমিভাব, ঘুমের সমস্যা, পেট ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন সন্ধিতে ব্যথা, মানসিক অবসাদ, এমনকি মস্তিষ্কের ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়তে পারে। কৃত্রিম চিনি সাধারণ চিনির চেয়েও বেশি ক্ষতিকর।
তাই ভিটামিন-মিনারেলযুক্ত প্রাকৃতিক চিনি খান। যেমন গুড়, আখের রস, নারকেল চিনি, খেজুর, কিসমিস বা অন্য শুকনো বা টাটকা ফল।
তবে এই সমস্ত খাবারে ক্যালোরি বেশি বলে মাত্রা রেখে খাবেন। ভাবছেন গুড় বা আখের রস খাওয়া গেলে চিনি কেন নয়? চিনিরও তো মূল উৎস সেই আখ?
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আখের রস থেকেই চিনি বানানো হয়। কিন্তু বানানোর সময় এমন সব পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া হয় যাতে একদিকে তার গুণ শেষ হয়ে যায়।
অন্যদিকে সালফার ডাই-অক্সাইড নামের এক ক্ষতিকর রাসায়নিক এসে মেশে তাতে। এর প্রভাবে বাড়তে পারে শ্বাসকষ্টের প্রকোপ।
আন্তর্জাতিক হিসেব অনুযায়ী চিনিতে সালফার ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যা থাকার কথা এ দেশে তার প্রায় সাত গুণেরও বেশি থাকে। তাই চিনি খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক হন আজই।