ঢাকা ০৪:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরীক্ষা ছাড়াই পাস,পড়াশোনা যেন থেমে না থাকে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০
  • ১৭৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার মাধ্যমিক স্তরের শ্রেণিগুলোয় বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

উল্লেখ্য, সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরে এক কোটির বেশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বার্ষিক পরীক্ষা হবে কিনা অথবা হলেও কবে নাগাদ হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন।

সরকারের এ সিদ্ধান্তে তাদের উদ্বেগের কিছুটা অবসান হল। করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছরের মাধ্যমিক স্তরের জেএসসি ও জেডিসি এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে আগেই।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও হচ্ছে না। এবার সিদ্ধান্ত এলো মাধ্যমিক স্তরের শ্রেণিগুলোর পরীক্ষা না হওয়ার বিষয়ে। বস্তুত এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকেই।

সারাবিশ্বেই করোনা মহামারীর প্রভাব পড়েছে শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্বের প্রায় সব দেশ বিকল্প উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এখনও। কোনো কোনো দেশ সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের দেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার এবং স্বাভাবিক উপায়ে পরীক্ষা গ্রহণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারতেন। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলার সুযোগ নেই।

তবে বিদ্যমান বাস্তবতায় যে বিষয়টিতে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার তা হল, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ছাড়াই পাস করার কারণে শিক্ষার গুণগত মান যেন পড়ে না যায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি দায়িত্ব রয়েছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারেরও।

পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই পড়াশোনায় শৈথিল্য না দেখায়, সেদিকে বিশেষ করে অভিভাবকদের নজরদারি থাকতে হবে। বিদ্যমান বাস্তবতায় পড়াশোনা অব্যাহত রাখা শুধু নয়, তা আরও বাড়িয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। কারণ ভবিষ্যতে তাদের উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণের জন্য ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি সিলেবাস প্রণয়ন করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে।

সেই অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে তা পূরণের চেষ্টা করা হবে। তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে সেই ঘাটতি কতটুকু পূরণ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বরং ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে গেলে শিখনের ওপর প্রভাব পড়বে।

সেটি পূরণ করতে গিয়ে শিক্ষকদের ওপরও চাপ বাড়বে। কাজেই পরীক্ষা না হওয়ার ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, তার একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পরীক্ষা ছাড়াই পাস,পড়াশোনা যেন থেমে না থাকে

আপডেট টাইম : ০৭:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার মাধ্যমিক স্তরের শ্রেণিগুলোয় বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

উল্লেখ্য, সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরে এক কোটির বেশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বার্ষিক পরীক্ষা হবে কিনা অথবা হলেও কবে নাগাদ হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন।

সরকারের এ সিদ্ধান্তে তাদের উদ্বেগের কিছুটা অবসান হল। করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছরের মাধ্যমিক স্তরের জেএসসি ও জেডিসি এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে আগেই।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও হচ্ছে না। এবার সিদ্ধান্ত এলো মাধ্যমিক স্তরের শ্রেণিগুলোর পরীক্ষা না হওয়ার বিষয়ে। বস্তুত এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকেই।

সারাবিশ্বেই করোনা মহামারীর প্রভাব পড়েছে শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্বের প্রায় সব দেশ বিকল্প উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এখনও। কোনো কোনো দেশ সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের দেশেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার এবং স্বাভাবিক উপায়ে পরীক্ষা গ্রহণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারতেন। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলার সুযোগ নেই।

তবে বিদ্যমান বাস্তবতায় যে বিষয়টিতে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার তা হল, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ছাড়াই পাস করার কারণে শিক্ষার গুণগত মান যেন পড়ে না যায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি দায়িত্ব রয়েছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারেরও।

পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই পড়াশোনায় শৈথিল্য না দেখায়, সেদিকে বিশেষ করে অভিভাবকদের নজরদারি থাকতে হবে। বিদ্যমান বাস্তবতায় পড়াশোনা অব্যাহত রাখা শুধু নয়, তা আরও বাড়িয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। কারণ ভবিষ্যতে তাদের উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণের জন্য ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি সিলেবাস প্রণয়ন করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে।

সেই অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে তা পূরণের চেষ্টা করা হবে। তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে সেই ঘাটতি কতটুকু পূরণ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বরং ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে গেলে শিখনের ওপর প্রভাব পড়বে।

সেটি পূরণ করতে গিয়ে শিক্ষকদের ওপরও চাপ বাড়বে। কাজেই পরীক্ষা না হওয়ার ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, তার একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে।