হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে গণধর্ষণের শিকার হয়ে এক স্কুল ছাত্রী এখন অন্ত:সত্ত্বা। উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নে ৭ম শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৩) গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মুনছুর মিয়া (৫৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর প্রথম গেইট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গত ২৫ জুন স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মুনছুর মিয়া ও শেখ নজরুল ইসলাম (৪৫) এই দুইজনের বিরুদ্ধে অষ্টগ্রাম থানায় মামলা (নং-৯) দায়ের করেন।
অন্ত:সত্ত্বা স্কুল ছাত্রী, পরিবার ও মামলার তথ্য মতে, কিশোরী স্থানীয় অষ্টগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ১৬ জানুয়ারি রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে পাশের বাড়ির মুনছুর মিয়া ও শেখ নজরুল ইসলাম কিশোরীর ঘরে ঢুকে দড়ি দিয়ে মেয়েটিকে বেঁধে ফেলে। প্রথমে মুনছুর ও পরে নজরুল হত্যার হুমকি দিয়ে মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
মেয়েটির চিৎকারে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী টের পেয়ে গেলে দুই ধর্ষক দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গণধর্ষণের শিকার হয়ে এই ছাত্রী এখন প্রায় নয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা।
ছাত্রীর মা জানান, তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে সেই স্ত্রীর সাথে থাকেন। দারিদ্রতার কারণে তিনি মেয়েকে নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করেন। জীবিকার তাগিদে মেয়েকে বাড়িতে রেখে তিনি ঢাকায় গিয়ে গুলশান এলাকার একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নিয়েছেন। ছুটিতে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন।
মেয়েটি বাড়িতে একা থেকে স্কুলে লেখাপড়া করে। এ সুযোগে প্রতিবেশী মুনছুর তার সহযোগী নজরুলকে নিয়ে তার মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
সুবিচারের আশায় তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বিষয়টি মীমাংসা না করে বরং উল্টো ছাত্রী ও তার পরিবারের উপর নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করে দুই ধর্ষকের পরিবার ও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ আসামিদের ধরতে তৎপরতা শুরু করে। কিন্তু দুই আসামিই অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির হওয়ায় তারা কৌশলে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করে আসছিল।
অবশেষে মূল অভিযুক্ত মুনছুর মিয়ার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর প্রথম গেইট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ব্যাপারে পরবর্তি আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এছাড়া অপর আসামি নজরুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পারবো।