ঢাকা ০১:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রিকেট কিংবদন্তি ইমরান খানের ৬৮তম জন্মদিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তর্কসাপেক্ষে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার ইমরান খান। ছিলেন দুর্দান্ত স্টাইলিশ, সুদর্শন ও তুমুল জনপ্রিয় ক্রিকেটার।

ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বল হয় তাকে। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বে তিনি চিরস্থায়ী আসন দখল করে আছেন অবিশ্বাস্য নেতৃত্ব গুণের স্বাক্ষর রেখে পাকিস্তানকে প্রথম ও একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়ে।

অবসরের পর পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্মগ্রহণ করা এই কিংবদন্তির আজ ৬৮তম জন্মদিন।

ক্রিকেটার ইমরান খানের অর্জন অসংখ্য। তার ব্যাটিং স্টাইল ছিল অনেকটা ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার গ্যারি সোবার্সের মতো। ব্যাট হাতে ছিলেন আগ্রাসী আর বলে ছিলেন দারুণ কার্যকর পেসার। মাঠের চারদিকেই শট খেলার অসাধারণ দক্ষতা ছিল তার। প্রতিপক্ষের বোলারদের নাস্তানাবুদ করে দিতে পারতেন সহজেই।

ক্যারিয়ারে ৮৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৬ সেঞ্চুরি ও ১৮ হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৮০৭ রান করেছিলেন তিনি। আর পাকিস্তানের জার্সিতে ১৭৫টি ওয়ানডে ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৭০৯ রান, সেঞ্চুরি ১টি আর হাফ সেঞ্চুরি ১৯টি।

টেস্ট ক্রিকেটে বল হাতে ইমরানের ঝুলিতে আছে ৩৬২টি উইকেট। টেস্টে ইমরানের সেরা বোলিং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। লঙ্কানদের বিপক্ষে এক ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ওয়ানডেতে তার অর্জন ১৮২ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার সেরা বোলিং ভারতের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে তিনি ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মাত্র ১৪ রানে।

ইমরান খানের সবচেয়ে সাফল্য ছিল মাঠে তার অসাধারণ নেতৃত্ব। দলে তার প্রভাব ছিল একচেটিয়া। দলকে একসুতোয় গাঁথার কাজটি তিনি সুনিপুণভাবে করতে পারতেন। খেলোয়াড়দের কঠিন পরিস্থিতিতেও তাঁতিয়ে দিতেন যাতে তারা পিছিয়ে না গিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করে।

১৯৮২ সালে অধিনায়ক হওয়ার পর ৪৮ টেস্টে ইমরানের অধীনে ১৪ ম্যাচে জয়, ৮টিতে হার আর বাকিগুলোতে ড্র করে পাকিস্তান। ১৩৯ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ৭৭ ম্যাচে জয় এনে দেন তিনি। বাকি ৫৭টিতে হার আর একটিতে টাই দেখে পাকিস্তান।

ইমরান এমন সময় পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন যখন ক্রিকেটবিশ্বে একক আধিপত্য ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু সেই ‘পরাক্রমশালী’ ক্যারিবীয়দেরও তিনি চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার অধীনেই ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জেতার স্বাদ পায় পাকিস্তান। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ওয়াসিম আকরাম, আমির সোহেল, আকিব জাভেদের মতো তরুণ ও অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ জিতিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি।

দেশকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতানোর পর অবসর নেন ইমরান।  ক্রিকেট মাঠের নেতৃত্ব থেকে দেশের নেতৃত্বে এখন ইমরান খান। তবে তার চলার পথটা মোটেও সহজ ছিল না। তেহরিক-ই-ইনসাফ নামের রাজনৈতিক দল গঠন করে বহু পথ পাড়ি দিয়ে সাফল্য ধরা দেয় তার হাতে। একজন ক্রিকেটারের এমন রাজনৈতিক সাফল্য রীতিমত অবিশ্বাস্য।

ইমরান খান নিয়ে ৫টি ভিন্ন তথ্য:
.    ইমরান খানের পুরো নাম আহমেদ খান নিয়াজি ইমরান। তবে ক্রিকেটার হিসেবে কখনোই তাকে পুরো নাম ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
.    ২০১২ সালে এশিয়া সোসাইটির জরিপে ‘এশিয়া’স পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন ইমরান৷
.    মাত্র ১৬ বছর বয়সে লাহোরের হয়ে পেশাদার ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। এর মাত্র ২ বছর পর ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলে।
.    ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করতে গিয়ে ইংলিশ স্কুল ক্রিকেটে দারুণ সফল ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। এছাড়া সাসেক্স ও ওরচেস্টারশায়ের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটও খেলেছেন তিনি।
.    ১৯৯০ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্রিকেট কিংবদন্তি ইমরান খানের ৬৮তম জন্মদিন

আপডেট টাইম : ০৬:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তর্কসাপেক্ষে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার ইমরান খান। ছিলেন দুর্দান্ত স্টাইলিশ, সুদর্শন ও তুমুল জনপ্রিয় ক্রিকেটার।

ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বল হয় তাকে। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বে তিনি চিরস্থায়ী আসন দখল করে আছেন অবিশ্বাস্য নেতৃত্ব গুণের স্বাক্ষর রেখে পাকিস্তানকে প্রথম ও একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়ে।

অবসরের পর পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্মগ্রহণ করা এই কিংবদন্তির আজ ৬৮তম জন্মদিন।

ক্রিকেটার ইমরান খানের অর্জন অসংখ্য। তার ব্যাটিং স্টাইল ছিল অনেকটা ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার গ্যারি সোবার্সের মতো। ব্যাট হাতে ছিলেন আগ্রাসী আর বলে ছিলেন দারুণ কার্যকর পেসার। মাঠের চারদিকেই শট খেলার অসাধারণ দক্ষতা ছিল তার। প্রতিপক্ষের বোলারদের নাস্তানাবুদ করে দিতে পারতেন সহজেই।

ক্যারিয়ারে ৮৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৬ সেঞ্চুরি ও ১৮ হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৮০৭ রান করেছিলেন তিনি। আর পাকিস্তানের জার্সিতে ১৭৫টি ওয়ানডে ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৭০৯ রান, সেঞ্চুরি ১টি আর হাফ সেঞ্চুরি ১৯টি।

টেস্ট ক্রিকেটে বল হাতে ইমরানের ঝুলিতে আছে ৩৬২টি উইকেট। টেস্টে ইমরানের সেরা বোলিং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। লঙ্কানদের বিপক্ষে এক ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ওয়ানডেতে তার অর্জন ১৮২ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার সেরা বোলিং ভারতের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে তিনি ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মাত্র ১৪ রানে।

ইমরান খানের সবচেয়ে সাফল্য ছিল মাঠে তার অসাধারণ নেতৃত্ব। দলে তার প্রভাব ছিল একচেটিয়া। দলকে একসুতোয় গাঁথার কাজটি তিনি সুনিপুণভাবে করতে পারতেন। খেলোয়াড়দের কঠিন পরিস্থিতিতেও তাঁতিয়ে দিতেন যাতে তারা পিছিয়ে না গিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করে।

১৯৮২ সালে অধিনায়ক হওয়ার পর ৪৮ টেস্টে ইমরানের অধীনে ১৪ ম্যাচে জয়, ৮টিতে হার আর বাকিগুলোতে ড্র করে পাকিস্তান। ১৩৯ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ৭৭ ম্যাচে জয় এনে দেন তিনি। বাকি ৫৭টিতে হার আর একটিতে টাই দেখে পাকিস্তান।

ইমরান এমন সময় পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন যখন ক্রিকেটবিশ্বে একক আধিপত্য ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু সেই ‘পরাক্রমশালী’ ক্যারিবীয়দেরও তিনি চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার অধীনেই ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জেতার স্বাদ পায় পাকিস্তান। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ওয়াসিম আকরাম, আমির সোহেল, আকিব জাভেদের মতো তরুণ ও অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ জিতিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি।

দেশকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতানোর পর অবসর নেন ইমরান।  ক্রিকেট মাঠের নেতৃত্ব থেকে দেশের নেতৃত্বে এখন ইমরান খান। তবে তার চলার পথটা মোটেও সহজ ছিল না। তেহরিক-ই-ইনসাফ নামের রাজনৈতিক দল গঠন করে বহু পথ পাড়ি দিয়ে সাফল্য ধরা দেয় তার হাতে। একজন ক্রিকেটারের এমন রাজনৈতিক সাফল্য রীতিমত অবিশ্বাস্য।

ইমরান খান নিয়ে ৫টি ভিন্ন তথ্য:
.    ইমরান খানের পুরো নাম আহমেদ খান নিয়াজি ইমরান। তবে ক্রিকেটার হিসেবে কখনোই তাকে পুরো নাম ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
.    ২০১২ সালে এশিয়া সোসাইটির জরিপে ‘এশিয়া’স পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন ইমরান৷
.    মাত্র ১৬ বছর বয়সে লাহোরের হয়ে পেশাদার ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। এর মাত্র ২ বছর পর ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলে।
.    ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করতে গিয়ে ইংলিশ স্কুল ক্রিকেটে দারুণ সফল ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। এছাড়া সাসেক্স ও ওরচেস্টারশায়ের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটও খেলেছেন তিনি।
.    ১৯৯০ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন তিনি।