হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিমের পাতা, ডাল, ফল, ফুল এমনকি গাছের ছাল ব্যবহার হয় নানা কাজে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের দাওয়াই হিসেবে চলে আসছে এই নিম। নিমে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিবায়োটিক। যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় করে।
প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে, পাঁচ হাজার বছর আগেও ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় এটি ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইন্ডিকা ইংলিশে এটি আজাদিরাস্তা এবং সংস্কৃত ভাষায় ‘নেম্বা’ নামে পরিচিত।
প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের একটি আদর্শ ভেষজ উপাদান নিম। এতে প্রায় ১৩০ টিরও বেশি জৈবিকভাবে সক্রিয় যৌগ রয়েছে। ফলে এটি শক্তিশালী ইমিউনো-উদ্দীপক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবেও কাজ করে।
ক্ষত কিংবা খোস পাচরা সারাতে নিমের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। তবে এবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও কাজ করবে নিম। তবে খেতে হবে নিমের চা। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের অনুসারে, গোটা বিশ্বে ৪৬ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৪৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা আরও ১৫ কোটি বাড়বে। ডায়াবেটিস এমন একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এটা নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা যেমন-হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু ভেষজ উপাদান ও মশলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এরমধ্যে নিম পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী। ‘স্টাডিজ অন এথনো মেডিসিন’ শীর্ষক জার্নাল অনুসারে, নিম পাতার গুঁড়া রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এ কারণে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা নিয়মিত নিম পাতা বা নিমের গুঁড়া দিয়ে তৈরি চা খেতে পারেন।
নিমের চা তৈরির জন্য বাজার থেকে নিমপাতা গুঁড়া কিনতে পারেন কিংবা বাড়িতেই এ পাতা শুকিয়ে রাখতে পারেন। নিম পাতার চা তৈরির সময় এতে দারুচিনির গুঁড়াও যোগ করতে পারেন। এটিও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস কেয়ার জার্নাল অনুযায়ী, দারুচিনির গুঁড়া টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর। এছাড়াও এটি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগজনিত জটিলতার ঝুঁকি কমায়। এসব ছাড়াও দারুচিনি ও নিম মিশ্রিত চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে ত্বকে ভালো রাখে এবং ওজন কমায়।