হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় পাঁচ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে চিড়িয়াখানা। দারুণ একান্ত সময় পার করছে মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রাণীরা।
করোনা ভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২০ মার্চ থেকে চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে অন্য স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। চিড়িয়াখানায় পশু-পাখিদের সেবা-যত্ন-চিকিৎসা, খাবার দেওয়া, ঘর পরিষ্কার ও করোনা ভাইরাস থেকে প্রাণীদের রক্ষায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
দর্শনার্থীদের আগমন না থাকায় চিড়িয়াখানায় প্রাণীরা বন্দি থাকলেও কিছুটা বন্য পরিবেশের স্বাদ পাচ্ছে। ফলে বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, জলহস্তী, কুমির এখন অনেকটাই আয়েশি জীবন কাটাচ্ছে। হরিণ রয়েছে প্রশান্তিতে। প্রতিনিয়ত পেখম মেলে ময়ূর প্রকৃতির শোভা বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখরিত চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণ। হনুমান ও বানরের দুষ্টুমি বেড়েছে কয়েকগুণ। চিড়িয়াখানার অন্য প্রাণীদেরও দেখা যায় মনের আনন্দে বিচরণ করতে।
জনমানবশূন্য বন্যপরিবেশে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের প্রজনন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে বাচ্চা জন্মদান। ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রাণী বাচ্চার জন্ম দিয়েছে এবং আরও কিছু প্রাণী বাচ্চা জন্মদানের অপেক্ষায় রয়েছে।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে চিড়িয়াখানায় প্রাণীরা অনেক ভালো আছে। ইতোমধ্যে জিরাফ, জেব্রা, এরাবিয়ান হর্স, জলহস্তি, হরিণ, ময়ূর, উট পাখি, ইমু পাখি, বানর বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। করোনাকালীন দুর্যোগের সময় বাচ্চা দেওয়ায় জিরাফের নামকরণ করা হয়েছে দুর্জয়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এখন চিড়িয়াখানায় কোনো দর্শনার্থী নেই, তাই তাদের কেউ বিরক্ত করার কেউও নেই। ফলে প্রাণীরা আগের চেয়ে ভালো আছে। আগে যে প্রাণীগুলো খাঁচার মাঝখানে জড়সড় হয়ে বসে থাকতো, সেসব প্রাণীদের এখন চঞ্চল দেখা যাচ্ছে। আগে প্রাণীদের যে খাবার দেওয়া হতো, দেখা যেত সব খাবার তারা খেতো না, এখন তারা সব খাবার খেয়ে ফেলছে। ঠিকমতো খাবার গ্রহণ ও কোলাহলহীন পরিবেশ থাকায় প্রাণীগুলো প্রজনন কাজও সঠিকভাবে করতে পারছে। এ জন্যই এই সময়ে প্রাণীদের বাচ্চা জন্মদানের সংখ্যাও বেড়েছে।
কবে নাগাদ দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মিটিং করে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবো, এরপর মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত বা অনুমোদন দিলে চিড়িয়াখানা খুলে দেওয়া হবে। তবে আমরা ভাবছি অক্টোবর, নভেম্বরের দিকে দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত করতে পারবো।